E-Paper

ঋষভের রূপকথার প্রত্যাবর্তন মুগ্ধ করেছে হেডেন-কন্যাকে

কলকাতায় এসে ফুচকা, আলুকাবলি, মাটন বিরিয়ানি, কষা মাংস খেয়ে মুগ্ধ গ্রেস হেডেন। হোটেলের শেফদের থেকে বিভিন্ন রান্না শিখে নিচ্ছেন। দেশে ফিরে সে সব সুস্বাদু পদ বানাতে হবে যে!   

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ০৭:৩১
আকর্ষণ: সোমবার শহরে জন্মদিন পালন করবেন গ্রেস।

আকর্ষণ: সোমবার শহরে জন্মদিন পালন করবেন গ্রেস। ছবি: সংগৃহীত।

বাবা ছিলেন বোলারদের কাছে আতঙ্কের অন‌্য নাম। বাঁ-হাতি ওপেনার হিসেবে শাসন করেছেন প্রত্যেকটি দেশে। তাঁর কন্যা যদিও ব‌্যাট হাতে নয়, সঞ্চালক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে। বর্তমানে বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগের ধারাভাষ্যকার। তিনি প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ওপেনার ম্যাথু হেডেনের কন্যা গ্রেস হেডেন।

কলকাতায় এসে ফুচকা, আলুকাবলি, মাটন বিরিয়ানি, কষা মাংস খেয়ে মুগ্ধ তিনি। হোটেলের শেফদের থেকে বিভিন্ন রান্না শিখে নিচ্ছেন। দেশে ফিরে সে সব সুস্বাদু পদ বানাতে হবে যে!

রবিবার সকালে উঠেই বাবাকে পিতৃদিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উপহারও পাঠাবেন। আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে গ্রেস বলছিলেন, ‘‘বাবা ক্রিকেট মাঠে আগ্রাসী ছিলেন, বাড়িতে কিন্তু একেবারে শান্ত। বাবার কাছেই প্রথম শুনেছিলেন ইডেনের কথা। এখানে এসে আমি মুগ্ধ। গরমটা একটু কম হলে আরও ভাল লাগত।’’

সচিন-কন্যা সারা তেন্ডুলকর তাঁর অন্যতম প্রিয় বন্ধু। কুইন্সল্যান্ডে গ্রেসের বাড়িও গিয়েছিলেন। সেখান থেকে দুই বন্ধু সফর করেন অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে। কী ভাবে হল এই বন্ধুত্ব? গ্রেসের উত্তর, ‘‘আমাদের বাবারা বন্ধু। সেখান থেকেই পরিচয় হয়। ফোন নম্বর নিই। তারপর থেকে নিয়মিত কথা হত। এখন আমরা প্রায় রোজই কথা বলি। সারার সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় ভ্রমণ করার কথা আছে। আমার আর ওর ইচ্ছে, সারা বিশ্ব ঘোরার।’’

আজ, সোমবার জন্মদিন গ্রেসের। কলকাতাতেই কাটাবেন। বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগের জন্য রাত পর্যন্ত কাজ করতে হবে। মাঝ রাত থেকে শুরু হবে তাঁর উৎসব। বলছিলেন, ‘‘কলকাতার নাইট-লাইফ কেমন আমি জানি না। কাজের মাঝে এই শহরটা ঘুরে দেখা হয়নি। ইচ্ছে আছে কোথাও বেরোনোর। ভাল কোনও রেস্তরাঁ অথবা পাব-এ সময় কাটাতে পারি। যেই শহরেই থাকি, জন্মদিন উপভোগ করতেই হবে।’’

মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে সঞ্চালক হিসেবে কাজ শুরু করেন গ্রেস। তার আগে মডেলিং করতেন। ক্যামেরার সামনে বরাবরই স্বচ্ছন্দ। বলছিলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার এক জনপ্রিয় চ্যানেলে ‘হর্স-রেসিং’-এর সঞ্চালক হিসেবে অভিষেক হয় আমার। সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পরে স্টার স্পোর্টসে সুযোগ পাই। শেষ কয়েক বছর ধরে ক্রিকেট নিয়েই কাজ করছি।’’

বাবার হাত ধরে কয়েক বার ক্রিকেট খেলার চেষ্টাও করেছেন। বলছিলেন, ‘‘আমাকে কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন পরে বুঝলাম, আমার দ্বারা ক্রিকেট হবে না। স্কুল শেষ করার পর থেকে তাই মডেলিংয়েই মনোনিবেশ করি।’’

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অস্ট্রেলিয়ার হার তাঁকে হতাশ করেছে। কিন্তু ক্রিকেটের স্বার্থে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তিনি খুশি। বলছিলেন, ‘‘ওদের এই ট্রফি প্রাপ্য ছিল। এডেন মার্করাম, টেম্বা বাভুমা যে জুটি গড়ে দিয়েছে তার পরে ম্যাচে কিছু ছিল না। যোগ্য দলই টেস্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’’

ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ঋষভ পন্থ তাঁর প্রিয়। গাড়ি দুর্ঘটনার পরে তাঁর প্রত্যাবর্তন মুগ্ধ করেছে গ্রেসকে। বলছিলেন, ‘‘ঋষভ পন্থের ফিরে আসার গল্প অবিশ্বাস্য। মাঠে নেমে আগের মতো ব্যাট করাও যেন অলৌকিক। গ্যাবায় ও আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছিল। ওর মানসিক জোর শেখার মতো। জীবনে বহু ক্রিকেটার দেখেছি, কিন্তু ঋষভের মতো মানসিক জোর কারও মধ্যে দেখিনি।’’

গ্রেস ভয় পান যশপ্রীত বুমরাকে। বলছিলেন, ‘‘ওকে যে কোনও ব্যাটাসম্যানই ভয় পায়। এ বারের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়াকে একা শেষ করে দিচ্ছিল। আমি ভাবতে পারিনি ওকে সামলে আমরা সিরিজ় জিততে পারব। একটাই আক্ষেপ, বুমরার সঙ্গে বাবার দ্বৈরথ দেখতে পেলাম না। এই লড়াইটা হলে সত‌্যিই জমে যেত।’’

কলকাতা থেকে ফিরে কী করবেন? গ্রেসের উত্তর, ‘‘যে সব পদ শিখছি, তা বাবাকে বলব। আমাদের বাড়িতে প্রচুর ভারতীয় পদ রান্না হয়।’’ ’’এ বার বাঙালি পদও হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Matthew Hayden Sara Tendulkar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy