Advertisement
E-Paper

ডিউক বল নরম হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে গরুর অভাব! বলের মান পড়ে যাওয়া নিয়ে কী বললেন নির্মাতা?

ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ের মাঝে ডিউক বলের মান নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছে ভারত। এ বার বলের নির্মাতা সংস্থার প্রধান জানালেন, এক প্রজাতির গরুর অভাবের কারণেই বলের মান ঠিক রাখা যাচ্ছে না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৮
cricket

ডিউক বল। ছবি: পিটিআই।

ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ের মাঝে ডিউক বলের মান নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছে ভারত। বল নরম হয়ে যাওয়া এবং আকার বদলে যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন শুভমন গিল, মহম্মদ সিরাজেরা। এ বার বলের নির্মাতা সংস্থার প্রধান জানালেন, এক প্রজাতির গরুর অভাবের কারণেই বলের মান ঠিক রাখা যাচ্ছে না।

ক্রিকেট বলের মান, টেকসই থাকা, আকার ধরে রাখা এবং দীর্ঘ ক্ষণ শক্ত থাকা নির্ভর করে তার চামড়ার উপর। এই চামড়া বেশির ভাগই আসে ‘অ্যাঙ্গাস হাইট্‌স’ প্রজাতির গরুর থেকে, যা আরও পরিচিত ‘অ্যাবারডিন হাইট্‌স’ নামেও। স্কটিশ এবং আইরিশ ঘাস খেয়ে বড় হয়ে ওঠা এই গরুর চামড়া শক্তিশালী, চকচকে এবং টেকসই হয়।

গরুর পিঠের দিকের যে হাড়, সেখানকার চামড়া থেকে সবচেয়ে ভাল বল তৈরি হয়। একটু কম মানের বলগুলি তৈরি হয় শরীরের বাকি অংশের চামড়া থেকে। কিন্তু এই গরুই আর সে ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না।

ডিউকের মালিক দিলীপ জাজোদিয়া বলেছেন, “অনেক গোশালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চামড়ার কারখানায় অন্য প্রজাতির গরুর চামড়া দেওয়া হয়। আপনি যদি ভাগ্যবান হন তা হলেই যে চামড়া চাইছেন সেটি পাবেন। আগেকার দিন হলে আমি বলে দিতাম, অ্যাঙ্গাস হাইট্‌সই চাই। এখন সেটা অত সহজে মেলে না। নতুন গরুর চামড়া অত মোটা নয়।”

তিনি আরও বলেছেন, “এখনকার দিনে কাঁচামাল যা আসে তা আগের থেকে আলাদা। দুটো গরুর চামড়া কখনও সমান হয় না। এগুলো সকলকে মাথায় রাখতে হবে। মানুষই ক্রিকেট বল তৈরি করে। তাই বলের মধ্যে বৈচিত্র থাকা অসম্ভব নয়। মাথা ঠান্ডা করে ভাবুন যে একটাই বলে সারা দিন খেলা হচ্ছে। দু’ঘণ্টা পরেও যে বলের খুব বেশি বদল হয় না, সেটাই অলৌকিক ব্যাপার। আমরা সব কিছু নজরে রাখছি। কিন্তু রাতারাতি বলের মান বদলে দিতে পারব না। কোনও কিছু ভুল হলে পরের বার শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব।”

ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টে ডিউক বল নিয়ে বিতর্ক অনেক দিন ধরেই চলেছে। তাড়াতাড়ি বলের আকার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের অভিযোগ, খুব তাড়াতাড়ি বল নরম হয়ে যাচ্ছে। ফলে বোলারদের সমস্যা হচ্ছে। ভারতের এ-ও অভিযোগ, তাদের পুরনো বল দেওয়া হয়েছে। আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কেও জড়িয়েছেন শুভমনেরা।

লর্ডসে প্রথম দিন কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে সমস্যা হয়। দ্বিতীয় দিন শুরুর স্পেলে জসপ্রীত বুমরাহ ইংল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে আউট করার পরেও বল নিয়ে খুশি ছিল না ভারতীয় দল। তাঁরা অভিযোগ করেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকতের কাছে। বাংলাদেশের আম্পায়ার খতিয়ে দেখেন, সত্যিই বলের আকার বদলে গিয়েছে। তত ক্ষণে সেই বলে মাত্র ১০.৩ ওভার খেলা হয়েছে।

বল বদলের পর যে বল দেওয়া হয় তা নিয়েও খুশি ছিলেন না শুভমনেরা। বল হাতে পেয়েই শুভমন তা নিয়ে আপত্তি করেন। তাঁদের অভিযোগ, বল মোটেই ১০ ওভার পুরনো নয়। আরও পুরনো। মহম্মদ সিরাজকে তো স্টাম্প মাইক্রোফোনে বলতে শোনা যায়, “এটা ১০ ওভার পুরনো বল মনে হচ্ছে? সত্যি সত্যি?” শরফুদ্দৌলা অনুরোধ করেন তাড়াতাড়ি বল করতে যাওয়ার জন্য। সিরাজ রান-আপ শুরু করতে যাবেন এমন সময় আকাশদীপ এগিয়ে এসে আবার বলের পালিশ দেখান। ভারতীয় ক্রিকেটারদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এই বলে একেবারে সন্তুষ্ট নন তাঁরা। কিন্তু আম্পায়ার কোনও কথা শোনেননি।

সেই সময় ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন গাওস্কর। তিনিও বল দেখে অবাক হয়ে যান। গাওস্কর বলেন, “এখান থেকে দেখেও বোঝা যাচ্ছে যে ওটা কোনও ভাবেই ১০ ওভার পুরনো বল নয়। অন্তত ২০ ওভার পুরনো বল।” তিনি আরও বলেন, “বার বার ডিউক বল নিয়ে অভিযোগ হচ্ছে। আগে এই বলে যা সুইং হত এখন তার ধারেকাছেও হয় না। এ বার সত্যি ভাবার সময় এসেছে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে ভাবতে হবে, এর পরেও ডিউক বলে ওরা খেলবে কি না।”

সেই বলেও বেশি ক্ষণ খেলা হয়নি। আট ওভার পর আবার আম্পায়ারের কাছে অভিযোগ করে ভারতীয় দল। দেখা যায়, বল আকারে বড় হয়ে গিয়েছে। বল পরীক্ষা করার ‘রিং’-এর মধ্যে ঢুকছে না। ফলে আবার বল বদলানো হয়। তবে কি ভারতের অভিযোগই সত্যি ছিল? পুরনো বল দেওয়া হয়েছিল তাদের? সেই কারণেই সেই বলে বেশি ক্ষণ খেলা হয়নি! দ্বিতীয় বার বল বদলের পরে অবশ্য কোনও অভিযোগ করেনি ভারতীয় দল।

India vs England 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy