ওভালের মাঠকর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন গৌতম গম্ভীর। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টের আগে ওভালের পিচ প্রস্তুতকারক লি ফর্টিসের সঙ্গে কেন ঝগড়ায় জড়ালেন গম্ভীর? কেন আঙুল উঁচিয়ে কথা বললেন? ঠিক কী ঘটেছিল, অনুশীলনের পর জানিয়েছেন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাক। মুখ খুলেছেন ফর্টিসও।
এক সময় গম্ভীরকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘তুমি এখানে এক জন মাঠকর্মী মাত্র। যাও, যেখানে খুশি রিপোর্ট কর। তুমি মাঠকর্মী ছাড়া কিছু নও।’’ এর পর গম্ভীর নাকি ফর্টিসের উদ্দেশে গালিগালাজও করেছেন। সে সময় কাছেই ছিলেন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ। গম্ভীরকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামলান তিনি এবং অন্য সাপোর্ট স্টাফেরা। ফর্টিসের সঙ্গে কথা বলেন কোটাক। তখনও দূর থেকে ক্ষুব্ধ গম্ভীরকে চেঁচাতে দেখা গিয়েছে।
পরে ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘মাঠে আইস বক্স রাখার সময় ফর্টিস প্রথমে চিৎকার করে আমাদের সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর বলার ধরন পছন্দ হয়নি গম্ভীরের। কোচ বিরক্ত হন। তিনি আপত্তি জানান। তা থেকেই প্রথম উত্তেজনা তৈরি হয়। ওভালের পিচ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কথা বলা কঠিন। এটা সকলেই জানে। তবে আমরা সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ জানাব না।’’ কোটাক আরও বলেছেন, ‘‘আমরা যখন পিচ দেখছিলাম, তখন ফর্টিস এক জন মাঠকর্মীকে পাঠান। তিনি আমাদের আড়াই মিটার দূর থেকে পিচ দেখতে বলেন। মানে আমাদের প্রধান কোচকে দড়ির বাইরে থেকে পিচ দেখতে বলা হয়! আমার ক্রিকেটজীবনে এমন কখনও দেখিনি। আমরা জগার্স পরেছিলাম। রবারের স্পাইক পরে পিচের কাছে যাওয়া যায়। আমরা ভুল কিছু করিনি। ওর বক্তব্য আমাদের অদ্ভুত লেগেছে। আমরা মাঠের কোনও ক্ষতি করতে যাইনি। আমরা পিচ দেখছিলাম। প্রাচীন মূল্যবান কোনও সামগ্রী দেখছিলাম না।’’ তিনিও বলেছেন, ‘‘এটা থেকেই উত্তেজনার শুরু। গম্ভীর এমন একজন মানুষ, যে খুব বেশি কথা বলে না। কারও সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় কথাও বলে না। আমরা সব জায়গায় খেলতে যাই। সব পিচ প্রস্তুতকারকই আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। হয়তো অনেক সময় আমরা ঘাস কাটা হবে কি না জানতে চাই। তাঁরা তাঁদের মতো করে ভাল ভাবে উত্তর দেন।’’ কোটাক বুঝিয়ে দিয়েছেন ওভালের পিচ প্রস্তুতকারকের আচরণ যথাযথ ছিল না।
পরে ফর্টিসও বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। ওভালের পিচ প্রস্তুতকারী সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিতণ্ডার বিষয়টি প্রথমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলতে চাই না। সামনেই একটা বড় ম্যাচ। ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই না?’’ কিন্তু আপনি কি গম্ভীরের আচরণে খুশি? চাপাচাপিতে ফর্টিস বলেন, ‘‘খুশি হওয়া বা না হওয়া আমার কাজ নয়। এই প্রথম ওঁর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হল। সকলেই দেখেছেন, উনি কেমন আচরণ করলেন। আমি ঠিক আছি। আমাদের লুকোনোর কিছু নেই। আমি অভদ্রতা করতে চাইনি।’’ গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চম টেস্টের আগে গম্ভীরকে তাঁর একটু স্পর্শকাতর মনে হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মাঠের মাঝখানে ভারতীয় ব্যাটারদের ‘থ্রো ডাউন’ দেওয়া হচ্ছিল। তা দেখেও অসন্তুষ্ট ফর্টিস আপত্তি জানান বলে ভারতীয় শিবির সূত্রে খবর। তিনি ভারতীয় দলকে দূরে গিয়ে অনুশীলন করতে বলেন। তাতেও বিরক্ত হন গম্ভীর। তা নিয়েও ফর্টিসের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়েছে। মঙ্গলবার ভারতের সব ক্রিকেটার অনুশীলনে আসেননি। অর্শদীপ সিংহ, সাই সুদর্শন, কুলদীপ যাদব-সহ কয়েক জন এসেছিলেন অনুশীলনে।