কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত শাহরুখ খানের দলের হয়ে খেলেন সৌরভ। ২০১১ সালের নিলামের আগে তাঁকে ছেড়ে দেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। সে বারের নিলামে আর একটু হলে অবিক্রিত থেকে যাচ্ছিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। প্রায় শেষ মুহূর্তে তাঁকে কিনেছিল পুণে ওয়ারিয়র্স। সৌরভকে ছেড়ে দেওয়ায় এক রকম জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছিল কেকেআর কর্তৃপক্ষকে।
সৌরভকে ছেড়ে দেওয়ার পর কী ঘটেছিল? ১৪ বছর পর মুখ খুলেছেন কেকেআরের প্রাক্তন টিম ডিরেক্টর জয় ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, সে বার নিলামের অনেক আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল সৌরভকে রাখা হবে না। জয় বলেছেন, ‘‘২০১১ সালের নিলামের আগেই সৌরভের সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। সিদ্ধান্তটা বেশ কঠিন ছিল। তবে কেকেআরের সকলে মিলে সিদ্ধান্তটা নেওয়া হয়েছিল।’’
এক ইউটিউব চ্যানেলে জয় বলেছেন, ‘‘শাহরুখ প্রথমেই নিজেকে এর থেকে দূরে রেখেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘পেশাদার দলে পেশাদারদেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আপনারা চাইলে শাহরুখকে রাখবেন। না চাইলে শাহরুখকে রাখবেন না।’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমি ছাড়া ছিলাম কোচ ডেভ হোয়াটমোর, সিইও বেঙ্কি মাইসোর, জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘নিলামে সৌরভের নাম ওঠার পর আমরা আগ্রহ দেখাইনি। অন্য দলগুলিও আগ্রহ দেখায়নি। সৌরভ অবিক্রিত থাকার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমার ফোনে অন্তত ৪০০ মেসেজ ঢুকেছিল। অনেকে বলেছিলেন, আমি বাঙালি হয়ে বাংলার সেরা ক্রিকেটারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছি। আমার মতামত জানতে চেয়েছিলেন অনেকে।’’ এখানেই শেষ হয়নি মানুষের অসন্তোষ। একটা সময় সল্টলেকের বাড়ির দরজা থেকে তাঁকে নামফলক খুলে ফেলতে হয়।
কেন সৌরভকে রাখতে চাননি কেকেআর কর্তৃপক্ষ? জয় বলেছেন, ‘‘আমরা এমন কাউকে অধিনায়ক হিসাবে চাইছিলাম, যে পরের অন্তত ছ’সাত বছর দেশের হয়ে খেলবে। আমাদের পছন্দ ছিল গৌতম গম্ভীর এবং রোহিত শর্মা। বিশেষ করে গম্ভীরের জন্য আমরা ঝাঁপানোর পরিকল্পনা করেছিলাম।’’
আরও পড়ুন:
জয় বলেছেন, ২০১১ সালে সৌরভ না রাখতে চাওয়া ছিল সম্পূর্ণ পেশাদারি সিদ্ধান্ত। বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হবে, তা জানতেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। তবু এক জন তরুণ অধিনায়কের নেতৃত্বে দল তৈরির স্বার্থে ঝুঁকি নিয়েছিলেন তাঁরা।