Advertisement
০৩ মে ২০২৪
ভুবনেশ্বরের স্বপ্নের বোলিং সত্ত্বেও হার পন্থদের
India

India vs South Africa: ক্লাসেন অবিশ্বাস্য, সিরিজ বাঁচাতে দলে পরিবর্তন চাই

কটকের এই পিচটা নিচু বাউন্সের। বল মাঝে মাঝেই নিচু হয়েছে। তার সঙ্গে নতুন বল সুইংও করেছিল। যে কারণে ব্যাটিং করা খুব সহজ ছিল না।

লড়াকু: ভুবনেশ্বর চার উইকেট নিলেও শেষ হাসি ক্লাসেনের।

লড়াকু: ভুবনেশ্বর চার উইকেট নিলেও শেষ হাসি ক্লাসেনের। ছবি পিটিআই।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২২ ০৬:৩৭
Share: Save:

কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ।

এই কথাটা খুব ভাল ভাবে খেটে যায় হেনরিক ক্লাসেনের ক্ষেত্রে। আগের ম্যাচে কুইন্টন ডি’কক চোট না পেলে কটকে খেলাই হত না ক্লাসেনের। দক্ষিণ আফ্রিকা দল পরিচালন সমিতিও বোধ হয় ভাবতে পারেনি, এই ধরনের ইনিংস ক্লাসেন খেলে দেবে। বিশেষ করে এই পিচে।

কটকের এই পিচটা নিচু বাউন্সের। বল মাঝে মাঝেই নিচু হয়েছে। তার সঙ্গে নতুন বল সুইংও করেছিল। যে কারণে ব্যাটিং করা খুব সহজ ছিল না। ভুবনেশ্বরের ভয়ঙ্কর ওপেনিং স্পেলের পরে ম্যাচটা ভারতের দিকে ঢলে গিয়েছিল। কিন্তু পাঁচে নেমে সব বদলে দিল ক্লাসেন। মনে হচ্ছিল, বাকিরা একটা পিচে খেলেছে, আর এই উইকেটকিপার-ব্যাটার অন্য একটা পিচে খেলছে!

শুরু থেকেই আক্রমণে চলে যায় ক্লাসেন। ব্যাকফুটে দারুণ শক্তিশালী। স্পিনটাও খুব ভাল খেলে। সামান্য শর্ট বল পেলেই উড়িয়ে দিয়েছে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে। অবিশ্বাস্য একটা ইনিংস খেলে যখন ফিরে যাচ্ছে, ক্লাসেনের নামের পাশে লেখা হয়ে গিয়েছে ৪৬ বলে ৮১ রান। মেরেছে সাতটি চার, পাঁচটি ছয়। ম্যাচের ভাগ্যও তখন ঠিক হয়ে গিয়েছে।

কটকে চার উইকেটে হারার পরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ভারত পিছিয়ে পড়ল ০-২। মঙ্গলবারের ম্যাচ হারলেই সিরিজ় হাতছাড়া। সিরিজ় বাঁচাতে কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে কিন্তু কয়েকটা কড়া সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। দল বাছাই নিয়ে ঝুঁকি নিতেই হবে। যেমন, প্রয়োজনে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে বসিয়ে শ্রেয়স আয়ারকে দিয়ে ওপেন করাক। তিনে নিয়ে আসুক দীপক হুডাকে। ও দারুণ ছন্দে আছে। বোলিংয়ে তো বদল করতেই হবে। উমরান মালিক বা অর্শদীপ সিংহের মতো তরুণকে অবশ্যই সুযোগ দেওয়া উচিত। আবেশ খান বা হর্ষল পটেল সে ভাবে দাগ কাটতে পারছে না। উইকেটও নিতে পারছে না। স্পিনাররাও সে রকম। লেগস্পিনার রবি বিষ্ণোইকে পরের ম্যাচে খেলাও। বিষ্ণোই একটু অন্য ধরনের লেগস্পিন করে। একটু জোরের উপরে। গুগলিটাও আছে। যা ডেভিড মিলারের মতো বাঁ-হাতিদের সমস্যায় ফেলতে পারে। যুজ়বেন্দ্র চহালের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। ওকে কয়েকটা ম্যাচ বাইরে রাখা হোক।

ভারতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছে ঈশান কিশান। ওকে দেখে মনে হয়েছে, শুরু থেকেই মেরে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনে শ্রেয়স রান পেলেও মাঝের সারিতে ঋষভ পন্থ এবং হার্দিক পাণ্ড্যের ব্যর্থতায় ভারত চাপে পড়ে।

ভারতীয় দল পরিচালন সমিতির একটা সিদ্ধান্ত আমাকে অবাক করেছে। দীনেশ কার্তিককে অক্ষর পটেলেরও পরে নামানো। মানলাম, কার্তিককে ফিনিশার বলা হচ্ছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, ১৫ ওভারের আগে নামানো যাবে না। ১৩ ওভারের মাথায় ভারত চতুর্থ উইকেট হারায়। ওই সময় কার্তিক নামলে হয়তো আরও ১০-১৫ রান বেশি হত।

ভারতের ১৪৮ রান তাড়া করতে নেমে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল ভুবনেশ্বর কুমার। স্বপ্নের প্রথম স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে। এই মুহূর্তে সাদা বলের ক্রিকেটে ওর মতো সুইং আর কোনও বোলার করাতে পারে না। পাশাপাশি নাকল বলটাও ভাল করে। এ দিন ওই নাকল বলের শিকার ডোয়েন প্রিটোরিয়াস। নাকল বল করার সময় সিমের বেশ খানিকটা নীচে আঙুল দু’টো রাখে ভুবি। যা ব্যাটারদের আরও বেশি করে বিভ্রান্ত করে। শেষ পর্যন্ত চার ওভারে ১৩ রানে চার উইকেট নিয়ে গেল। ম্যাচের সেরা ক্লাসেন হতে পারে, আমার কাছে বিয়োগান্ত নায়ক হয়ে থাকবে ভুবনেশ্বর। চহাল-অক্ষর যে ভাবে ব্যর্থ হল দু’টো ম্যাচে, তা অবশ্যই বড় চিন্তার ব্যাপার। সিরিজ় বাঁচাতে এখন কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রাবিড়কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India south africa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE