বল হাতে ওয়াশিংটন সুন্দর যে ভারতীয় দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাবেন, অনেকেই ভাবতে পারেননি। লর্ডসে চতুর্থ দিনে তাঁর চার উইকেট কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে বেন স্টোকসের। দিনের শেষে যদিও চার উইকেট তুলে জবাব দিয়েছে ইংল্যান্ড। তবুও ওয়াশিংটন মনে করেন, এই টেস্ট ভারতই জিতবে।
দিনের শেষে ওয়াশিংটন বলেছেন, ‘‘লাঞ্চের পরেই ভারত ম্যাচ জিতে যাবে। এই জায়গা থেকে হারার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ যোগ করেন, ‘‘এক উইকেট হারিয়ে দিন শেষ হলে সবচেয়ে ভাল হত। কিন্তু যা হয়েছে, তাতেও অসুবিধা হবে না। লাঞ্চের পরেই আমরা জিতে যাব।’’
ওয়াশিংটন মানছেন, ইংল্যান্ডের পেসাররা ভাল চাপ সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দিনের শেষে পিচ থেকে কিছুটা সাহায্য পাচ্ছিল ওদের পেসাররা। স্টাম্প লাইনে বল করেছে। এই ধরনের কিছু মুহূর্ত ম্যাচে আসতেই পারে। মেজাজ হারালে চলবে না। জিতে ফিরতে হবে।’’
জো রুট, বেন স্টোকস, জেমি স্মিথ ও শোয়েব বশিরকে আউট করেছেন ওয়াশিংটন। তিনি জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডের মতো ‘ড্রিফ্ট’ তিনি উপমহাদেশের পিচে পান না। তাঁর কথায়, ‘‘হাওয়ায় বল এত বাঁক খায় না ভারতে। ইংল্যান্ডে এসে দেখলাম আমার বল হাওয়ায় অনেক বাঁক খাচ্ছে। উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে যা সাহায্য করেছে। অন্য দিক থেকে বুমরা বল করায় আরওই চাপ কমে গিয়েছিল।’’
ওয়াশিংটন বোলিংয়ে মুগ্ধ প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘ও একাই ম্যাচটা ঘুরিয়ে দিল। বল কিন্তু খুব একটা ঘোরায়নি। স্টাম্পের সোজাসুজি বল রেখেছে। ওকে সুইপ মেরেই ভুল করে ফেলল ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানেরা।’’ যোগ করেন, ‘‘ওয়াশিংটন জোরের উপরে বল করে। আর. অশ্বিনের মতো প্রথাগত অফস্পিনার কিন্তু ও নয়। ওয়াশিংটনের অস্ত্র ফ্লোটার। জেমি স্মিথ ও বশিরকে যে বলে আউট করল, সেটাই ওয়াশিংটনের সবচেয়ে ভাল ডেলিভারি।’’
শাস্ত্রী বিস্মিত ওয়াশিংটনের ধারাবাহিকতা দেখে। বলেছেন, ‘‘ও টানা স্টাম্পের সোজাসুজি বল করে গেল। এই পিচে বল যে নড়াচড়া করবে সে রকম তো নয়। ও তাই স্টাম্প লক্ষ্য করে গতির উপরে বল করে গিয়েছে। যাতে সুইপ করতে গেলেই হয় এলবিডব্লিউ না হয় বোল্ড হবে। আর সেটাই হল। রুট ওকে সুইপ করতে গিয়েই আউট হল। জেমি স্মিথের বলটা অসাধারণ ছিল। আগের বলটাই ঘুরেছিল। স্মিথ ভেবেছিল পরেরটাও ঘুরবে। ওয়াশিংটন সেটা ফ্লোটার করে দেয়। স্মিথ বোঝেইনি যে বল ঘুরবে না। স্টোকসও সেই সুইপের ফাঁদে পড়েই আউট হল। ওরা কেউ বুঝল না, ওয়াশিংটনকে সুইপ মারা যায় না।’’
মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ, যশপ্রীত বুমরার প্রশংসাও করলেন প্রাক্তন কোচ। তাঁর কথায়, ‘‘লর্ডসে ভারতীয় বোলারদের দেখে আমি মুগ্ধ। ওরা একদম স্টাম্প লাইন ধরে বল করে গেল। খুব একটা শট খেলার জায়গা দেয়নি। বাজ়বল ভোঁতা করে দিয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘এই পিচে ওরা বাজ়বল খেললে খুব একটা ক্ষতি হত না। অন্তত কিছু রান তো হত। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৫০ রান করলে ম্যাচজমে যেত।’’
শুভমনের অধিনায়কত্বেও শাস্ত্রী খুশি। বলেছেন, ‘‘স্পিনারদের কোন সময়ে ব্যবহার করতে হবে, তা শুভমন দেখিয়ে দিল। পেসারদের ক্লান্ত হতে দেয়নি। স্পিনারদের দিয়ে বল করিয়েছে। তারা সাফল্যও এনে দিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বোলারের উপরে আস্থা রাখা এক জন অধিনায়কের পক্ষে খুব জরুরি। শুভমন আস্থা রেখেছিল ওর উপরে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)