বাবা বিশ্বক্রিকেটের সেরাদের একজন। ভাই এখনও তেমন নাম করতে না পারলেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সারা তেন্ডুলকরও ছোটবেলায় ক্রিকেট ব্যাট হাতে নিয়েছিলেন। খেলেওছেন। কিন্তু কোনও দিন পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেননি সারা। এত দিনে তার কারণ জানিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকরের কন্যা।
অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন দফতরের দূত হয়েছেন সারা। সেই অস্ট্রেলিয়া, যা তাঁর ছোটবেলার অনেকটা জুড়ে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন দফতরের মুখ হওয়ার পর ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর ক্রিকেটার না হওয়ার কারণ জানিয়েছেন সারা। তিনি বলেন, “ছোট থেকেই আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম যে ক্রিকেটার হব না। ব্যাট ধরেছি। গলি ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু ক্রিকেট নিয়ে কোনও দিন স্বপ্ন দেখিনি। ওটা ভাই দেখেছে।”
সারার ছোটবেলার স্মৃতিতে অনেকটা জুড়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সচিন যখন সে দেশে খেলতে যেতেন তখন পুরো পরিবার নিয়ে যেতেন। তাই অস্ট্রেলিয়ায় অনেক বার গিয়েছেন সারা। তিনি বলেন, “১৯৯৯ সালে প্রথম বার গিয়েছিলাম। বাবা অস্ট্রেলিয়ায় অনেক বার খেলতে গিয়েছে। প্রতি চার বছর অন্তর যেতাম। আমি আর ভাই খুব মজা করতাম। খেলার মাঝেও বাবা আমাদের সময় দিত।”
সাধারণত বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ় খেলতে যায় ভারত। ফলে নতুন বছরের শুরুতে সেখানেই দল থাকে। সারার মনেও সেই স্মৃতি রয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতি বার যখনই অস্ট্রেলিয়া যেতাম, নতুন বছরের শুরুটা ওখানে হত। আমার মনে আছে, সিডনিতে একটা নৌকায় পুরো দলের সঙ্গে আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতাম। সেই স্মৃতি ভোলার নয়।”
গত বছরের শেষে বক্সিং ডে টেস্টে মেলবোর্নে দেখা গিয়েছিল সারাকে। ভারতীয় দলের হয়ে গলা ফাটাতে গিয়েছিলেন তিনি। ছোটতেও সেখানে গিয়েছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই মাঠের ঐতিহ্য বুঝতে পেরেছেন তিনি। সারা বলেন, “ছোটবেলায় মেলবোর্নের ক্রিকেট মাঠের ঐতিহ্য বুঝতাম না। তখন শুধু বাবার খেলা দেখতে যেতাম। কিন্তু এখন বুঝতে পারি। শেষ বার যখন গেলাম, তখন সেই সব স্মৃতি ফিরে আসছিল।”
আরও পড়ুন:
ক্রিকেটার না হলেও বাবার পরামর্শ মেনেই নিজের জীবনে এগিয়ে যাচ্ছেন সারা। সচিন তাঁকে সারা জীবন কী শিখিয়েছেন, তা অক্ষরে অক্ষরে মনে রেখেছেন সারা। তিনি বলেন, “বাবা আমাকে সব সময় স্বাধীনতা দিয়েছে। নিজের পছন্দ মতো এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি বলেছে, দায়িত্ববান হতে। নিজের কর্তব্য পালন করতে। সেই পরামর্শ মেনেই আমি এগোচ্ছি।”
বাবার ক্রিকেটজীবনের যে স্মৃতি সারার মনে টাটকা হয়ে রয়েছে তা হল তাঁর বিদায়বেলা। ২০১৩ সালে ওয়াংখেড়েতে শেষ টেস্ট খেলে অবসর নিয়েছিলেন সচিন। সেই সময় পুরো পরিবার সেখানে ছিল। খেলা শেষে সচিন তাঁর বিদায়ী ভাষণে পরিবারের গুরুত্বের কথা জানিয়েছিলেন। বয়স কম থাকলেও সচিনের সব কথা বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। সারা বলেন, “আমাকে যদি একটা স্মৃতি বাছতে হয় তা হলে বাবার শেষ ম্যাচের কথা বলব। ওই সময় বাবা কী বলেছিল, সব বুঝতে পেরেছিলাম। আমি ছোট ছিলাম। তখন খেলা দেখতেই মাঠে যেতাম। কিন্তু বাবার কথা শুনে বুঝতে পেরেছিলাম, খেলার জায়গা বাবার জীবনে কতটা। এই খেলাকে বাবা কতটা সম্মান করে। সেই শিক্ষা আমাকে আরও ভাল মানুষ হতে সাহায্য করেছে।”