Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৪

থামল স্বপ্নের দৌড়, বিশ্বকাপে হেরেও মন জিতে ফিরল ক্রোয়েশিয়া

বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে সোনার বুট নিয়ে গেলেন লুকা মদরিচ। সেই সঙ্গে ঘরে ফিরলেন বিশ্বের তামাম ফুটবল প্রেমীদের মন জিতে নিয়ে। গ্যালারিতে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা কিটারোভিচও যেন এদিন কিছুটা শান্ত।

তখনও সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। দুই ক্রোয়েশিয়া ফ্যানের উচ্ছ্বাস। —রয়টার্স

তখনও সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। দুই ক্রোয়েশিয়া ফ্যানের উচ্ছ্বাস। —রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০০:২২
Share: Save:

ডেনমার্ক। রাশিয়া। ইংল্যান্ড। পরপর অঘটন ঘটাতে ঘটাতে শীর্ষে। স্বপ্নের অশ্বমেধের ঘোড়া এসে থামল ফ্রান্সের সামনে। বিশ্বকাপ ছোঁয়ার মাত্র এক ম্যাচ দূরে। ক্রোটদের কাছে প্রথমবার সুযোগ এসেও অধরাই থেকে গেল বিশ্বকাপ। তবু লড়াইয়ের যে বার্তা দিয়ে গেল মদ্রিচ-রাকিতিচরা, বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বহু দিন।

প্রত্যাশার পারদ চড়তে চড়তে এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, আবেগ বলছিল, ক্রোটরাই এবার বিশ্বকাপ পাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়াল, ইনবক্সেও তার প্রতিফলন হচ্ছিল। যুক্তি যতই বলুক, ধারে ভারে এগিয়ে ফ্রান্স, মন জিতে নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। এবং শেষ পর্যন্ত যুক্তির কাছে হার মানল আবেগ। জয় হল শক্তি, দক্ষতা আর নৈপূণ্যের।

বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে সোনার বুট নিয়ে গেলেন লুকা মদরিচ। সেই সঙ্গে ঘরে ফিরলেন বিশ্বের তামাম ফুটবল প্রেমীদের মন জিতে নিয়ে। গ্যালারিতে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা কিটারোভিচও যেন এদিন কিছুটা শান্ত। শুধু দু’টি গোলের সময় দু’বার তাঁর বহিপ্রকাশ দেখা গেল। সুকেরকে জড়িয়ে ধরলেন। দুহাত উপরে তুলে ভেসে গলেন উচ্ছ্বাসে। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এলেন। সোনার বল নেওয়ার সময় জড়িয়ে ধরলেন মদরিচকে।

গ্যালারিতে ক্রোয়েশিয়ার সমর্থক। —রয়টার্স

আরও পড়ুন: গ্রিজম্যান-পোগবা-এমবাপে, ত্রিকোণ অস্ত্রে ফের বিশ্বজয়ী ফ্রান্স

উদ্দাম-উচ্ছল গ্যালারি তখন শান্ত, ধীর-স্থির। মুষলধারে বৃষ্টি। আবেগের অগ্নিকুণ্ডে যেন জল ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি। গ্যালারিতে ঠায় দাঁড়িয়ে ভিজছেন ক্রোট সমর্থকরা। বীরের মতো লড়াই এবং শেষে এসে হার। আনন্দ আর শোকের মিলিত এক ভাবাবেগ। বৃ্ষ্টি আর চোখের জল মিলিত ধারা হয়ে নামল গাল বেয়ে, নেমে এল লুঝনিকির গ্যালারি বেয়ে।

হারের পর ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগ্রেবে এক ফুটবলপ্রেমী। —রয়টার্স

আরও পড়ুন: ফাইনাল ম্যাচে অঘটন, মাঠে ঢুকে পড়লেন দুই দর্শক, চূড়ান্ত নাটক

মস্কোর ছবি যদি এটা হয়, জাগ্রেব যেন আক্ষরিক অর্থেই জাগ্রত হয়ে উঠেছিল। এ জাগরণ ফুটবলের জন্য। নবজাগরণ বললেও হয়তো পুরোটা বলা হয় না। গোটা দেশের সব পথ মিশেছিল রাজধানী জাগ্রেবে। রাজপথ থেকে অলি-গলি, শুধুই লাল-সাদা রঙের বন্যা।

১৯৯৮ বিশ্বকাপেও প্রায় এমনটাই ঘটিয়েছিলেন দাভর সুকের। সেবছরও শুরুর আগে কেউই ধর্তব্যের মধ্যে রাখেননি ক্রোয়েশিয়াকে। সেই দলই তৃতীয় স্থানে দৌড় শেষ করেছিল। সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসাবে সোনার বুট পেয়েছিলেন সুকের। এবার আরও এক ধাপ উপরে এবং দোরগোড়ায় এসেও হাতছাড়া বিশ্বকাপ। তবু যেন বিশ্বজয় করেই ফিরলেন সুকেরের উত্তরসূরিরা।

গ্যালারিতে গোলের পর ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টের উচ্ছ্বাস। —রয়টার্স

আরও পড়ুন: জাগালো, বেকেনবাওয়ারকে স্পর্শ করলেন দেশঁ

বর্ষার বারিধারা পেয়ে প্রকৃতি হয়ে ওঠে শষ্যশ্যামলা। বর্ষণ তাই নবজন্মের প্রতীক। ফাইনাল ম্যাচের পরও প্রবল বর্ষণ। প্রকৃতিও কী তবে এই বার্তা দিয়ে গেল, বিশ্ব ফুটবলে জন্ম নিয়েছে এক নতুন শক্তি। যে শক্তি ভবিষ্যতে হয়তো আরও এগিয়ে যাবে। ছুঁয়ে ফেলবে নতুন নতুন মাইলফলক। কে বলতে পারে, হয়তো কাতারে ছুঁয়ে ফেলবে বিশ্বকাপটাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FIFA World Cup 2018 Croatia France
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE