জন্ম থেকেই নেই দুটো হাত। তবুও থেমে যায়নি স্বপ্নগুলো। গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন জগবিন্দর স্বপ্ন দেখছেন অলিম্পিকের। পাতিয়ালা থেকে ২৫ কিলোমিটার গেলেই ছোট্ট গ্রাম পাতরান। সেখানেই জন্ম জগবিন্দর সিংহর। হাত নেই ছেলের দেখে একরাশ হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন জগবিন্দরের বাবা-মা। কিন্তু বড় হতেই সবাইকে চমকে দিয়ে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পরেন তিনি। সহজ ছিল না এই লড়াই। হাতছাড়া সাইকেল চালাতে গিয়ে বহুবার পরে গিয়ে আহত হয়েছেন। কিন্তু থেমে যায়নি জগবিন্দরের গতি। বরং জেদ বেড়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছেতে ভর করে এখন জগবিন্দর স্বপ্ন দেখছেন অলিম্পিকের। রিওতে প্যারা অলিম্পিকে সোনা জিততে চান তিনি। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক দেখা পর থেকেই যেন জেদটা পেয়ে বসেছিল।
বাবা-মা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে এই সাইকেলকেই জীবনের সব থেকে বড় লড়াইয়ের সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। সবাইকে লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পরতেন তিনি। সদ্য চন্ডীগড় স্টেট সাইক্লিন চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছেন। এখন সামনে অনেক বড় স্বপ্ন সঙ্গে লড়াই। ২৪ বছরের জগবিন্দর এর পর থেকেই শুরু করে দেন নিজেকে তৈরি করার কাজ। কিন্তু সাইকেল কেনার যে টাকা নেই। পরিবারেরও অবস্থা তথৈবচ। এমন অবস্থায় স্থানীয় স্কুলে আঁকা শেখানোর কাজ শুরু করেন। সেখান থেকেই একটু একটু করে টাকা জমাতে শুরু করেন নিজের সাইকেল কেনার জন্য।
তবে সমস্যাগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরতে চান না জগবিন্দর। বলেন, ‘‘আমার হাত না থাকার জন্য আমাকে কোনও সমস্যার সন্মুখিন হতে হয়নি। আমি যেটা করব ভেবেছি আমি করেছি। অন্যকে দেখে দেখেই আমি শিখে নিতে পারি। আর নিজের মতো সেটা কাজে লাগাতে পারি।’’ সঙ্গে একটা ছোট্ট সংযোজন, কেউ কেউ জন্ম থেকেই চ্যাম্পিয়ন হয়। তিনি আঁকেন পা দিয়ে। খান পা দিয়ে। লেখেন পা দিয়ে। সেই পায়ে ভরসা করেই হাত না থাকার প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে জয়ের পথে হাঁটতে চান জগবিন্দর সিংহ।
দেখুন ভিডিও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy