কলকাতার কাছে রবিবারের হারটা পুণের কাছে যন্ত্রণাদায়ক। যে পিচে স্পিনাররা এত সাহায্য পাচ্ছিল, সেই উইকেটে ওরা অর্ধেক মালপত্র না নিয়েই নেমে গেল। ভেবে দেখুন কেউ আপনাকে গোটা বিশ্ব ঘুরে দেখার ফ্রি টিকিট দিয়েছে। আর আপনি সেই সফরে বেরিয়েছেন পাসপোর্ট ছাড়াই। অথবা লটারির জয়ী টিকিট আপনার কাছে ছিল, কিন্তু পকেটে টিকিটসুদ্ধু জিনসটা আপনি কেচে ফেলেছেন। এ রকম ভেঙে প়ড়া অবস্থায় মঙ্গলবার ছন্দে থাকা হায়দরাবাদের মোকাবিলা করতে নামবে পুণে। পুণের কোচ স্টিভন ফ্লেমিং এর মধ্যেই প্রকাশ্যে টিমকে তুলোধোনা করেছে। যেখানে তোমার কাছে ১৬০ রানের পুঁজি রয়েছে, টিমে চারজন স্লো বোলার রয়েছে আর বিপক্ষের দুই ওপেনার প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই ডাগআউটে ফিরে গিয়েছে, সেখানে ম্যাচটা হারলে কী ভাবে? শুধু তাই নয়, পরপর তিনটে ম্যাচ হেরে যে ম্যাচ খেলতে নেমেছ, সেখানে টিমের ফিল্ডিং এত শোচনীয় হবে কেন? আইপিএলে টানা ব্যর্থতা ফ্লেমিংয়ের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। ধোনির কাছে তো আরওই। তাই কোনও ম্যাচ হেরে গেলে সেটাকে ওরা ব্যক্তিগত ভাবে নেয়।
অবধারিত ভাবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন সমালোচনার মুখে পড়েছে। আপাতত পাঁচটা ম্যাচে ও বিশেষ কিছুই করতে পারেনি। তা সে উইকেট নেওয়া হোক বা পুরো ওভার বল করা। চেন্নাইয়ের হয়ে ধোনি কিন্তু অশ্বিনকে প্রচারের আলোয় নিয়ে এসেছিল। ওর মতো চ্যাম্পিয়ন বোলারের সেরাটা যদি ফের কেউ বের করে আনতে পারে তো সেটা ওই ধোনিই। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, অশ্বিন যদি ভাল বল না করতে পারে, তা হলে পুণে যে রকম অপ্রতিরোধ্য টিম হতে চায় তা ওরা কখনওই পারবে না।
পুণের ব্যাটিং কি ভাল হচ্ছে? আমি বলব মোটের উপর ভালই হচ্ছে। কারণ ওরা যত রান তুলেছে, সেই সংখ্যাটা লিগ শীর্ষে থাকা কলকাতা বা গুজরাতের আশেপাশে। তবে কেভিন পিটারসেন ছিটকে যাওয়ায় পুণের কাজটা সামান্য হলেও কঠিন হয়ে গেল। পিটারসেন, চোট আর আইপিএল— তিনটের মধ্যে সত্যিই কোনও গভীর যোগাযোগ আছে। এই তিনের গ্রহনক্ষত্র কখনও ঠিকটাক অবস্থায় থাকে না। পুণের রিজার্ভ বেঞ্চের প্রসঙ্গে বলব, সৌরভ তিওয়ারি ছাড়া পিটারসেনের জায়গা নেওয়ার মতো সে রকম কেউ নেই। হয়তো কেপির বদলি খুঁজছে পুণে।
একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে, পুণের আইপিএল অভিযান বেশ ছন্নছাড়া লাগছে। আর মঙ্গলবার ওদের সামনে একটা টিম যারা এখন তরুণ সিংহের মতো টুর্নামেন্টের সবাইকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। ডেভিড ওয়ার্নারের টিম এ বারের আইপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। গুজরাতের মতোই। ওদের বোলিং মণিহারে মুক্তোর ছড়াছড়ি। যার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল, সবচেয়ে দীপ্তিময় মুস্তাফিজুর রহমান। হায়দরাবাদ ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে ডেভিড ওয়ার্নারকে। আর এখন তো শিখর ধবনও নিজের সেরা বিধ্বংসী ছন্দে ফিরেছে। ভেবে দেখুন এই দু’জনের সামনে বোলাররা মাথা ঠান্ডা রাখতে পারবে কি না! বিশেষ করে পুণের বোলাররা। যাদের বর্তমান ফর্ম দেখে মনে পড়ে যাচ্ছে সেই সব মাছের কথা যাদের নদী থেকে তুলে চিবিয়ে চিবিয়ে খায় সব ভাল্লুক। আজ, মঙ্গলবারই কিন্তু পুণের মরণবাঁচন লড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy