গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যা দেশমুখ দেশে ফেরার পরে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। এই প্রথম মেয়েদের দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিলেন দুই ভারতীয়। সেখানে তাঁর চেয়ে অভিজ্ঞতায় অনেক এগিয়ে থাকা দেশের এক নম্বর মহিলা দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার কনেরু হাম্পিকে হারিয়ে দিব্যা চমকে দেন। শুধু তাই নয় দেশের চতুর্থ মহিলা হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টারও হন। বৃহস্পতিবার দিব্যা জানিয়ে দেন, হাম্পির বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে কোনও রকম চাপে ছিলেন না তিনি। কারণ তাঁর ‘‘হারানোর কিছুই ছিল না।’’
বুধবার জর্জিয়ার বাতুমি থেকে দেশে ফেরেন দিব্যা। তাঁকে নিয়ে নাগপুর বিমানবন্দরে যে রকম উন্মাদনা ছিল তাতে ভেসে যান ১৯ বছর বয়সি গ্র্যান্ডমাস্টার। খেলোয়াড় জীবনে এটাই দিব্যার সবচেয়ে বড় জয়। ফাইনালে প্রথম দুই গেমে ড্র হওয়ার পরে টাইব্রেকারে হাম্পি সময়ের চাপে ভুল করে বসেন। টাইব্রেকারে তিনি সময়ের চাপে ছিলেন কি না প্রশ্ন করলে দিব্যা বলেছেন, ‘‘চাপ তো থাকবেই, তবে চাপ নিয়ে বেশি ভাবি না। হাম্পি ওই ভুলটা করায় গেমটা আমায় জেতার সুযোগ করে দেয়,’’ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন দিব্যা। তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, নিজের কাছে প্রত্যাশা আর লক্ষ্যপূরণ।’’
চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা এবং আগ্রাসী খেলার ধরন নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির তুলনা হচ্ছে। দিব্যা যা নিয়ে বলেন, ‘‘আমি আগ্রাসী ভাবে খেলতে পছন্দ করি। আগ্রাসী খেললে আমার কৌশলগত ভাবে সুবিধে হয়। এটাই আমার খেলার ধরন।’’ গত বছর ডিসেম্বরে ডি গুকেশ কনিষ্ঠতম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের নজির গড়েন ১৮ বছর বয়সে চিনের ডিং লিরেনকে হারিয়ে। গুকেশের জয়ের মতোই তাঁর সাফল্যে মিল দেখছেন অনেকে। দিব্যাকে যা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় সবচেয়ে যে বড় মিল আমাদের দু’জনের মধ্যে তা হল শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়া।’’
যে প্রতিযোগিতায় তিনি বড় কোনও সাফল্য আশাই করেননি, লক্ষ্য ছিল গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পাওয়া, সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যান দিব্যা। একই সঙ্গে আগামী বছর ক্যান্ডিডেটস প্রতিযোগিতাতেও নামার সুযোগ পেলেন তিনি। ক্যান্ডিডেটসে জিতলে মেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নামার যোগ্যতা। অর্থাৎ বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ। তবে এতকিছু এখন ভাবছেন না দিব্যা। তাঁর আশা এই সাফল্য দাবায় আরও বেশি করে মেয়েদের আসতে প্রেরণা দেবে। ‘‘আশা করি আমার এই সাফল্যের পরে মেয়েরা আরও বেশি করে দাবায় আসবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম,’’ বলেছেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)