Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে সানিয়া

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নজির, শেষ চারে জকোভিচের সামনে নিশিকোরি

জাপানের ছিয়ানব্বই বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন কেই নিশিকোরি। প্রায় এক শতাব্দীর ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ চারে পৌঁছনো দ্বিতীয় জাপানি হিসাবে। অন্য দিকে, এ বারের ফ্লাশিং মেডোয় অবিশ্বাস্য ছন্দে থাকা সানিয়া মির্জা মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে পৌঁছে আরও একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের সামনে। টানা তৃতীয় খেতাবের লক্ষ্যে সেমিফাইনালে মেয়েদের এক নম্বর সেরেনা উইলিয়ামসও।

সেমিফাইনালের টিকিট হাতে পেয়ে জকোভিচের উচ্ছ্বাস।

সেমিফাইনালের টিকিট হাতে পেয়ে জকোভিচের উচ্ছ্বাস।

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৪
Share: Save:

জাপানের ছিয়ানব্বই বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটালেন কেই নিশিকোরি। প্রায় এক শতাব্দীর ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ চারে পৌঁছনো দ্বিতীয় জাপানি হিসাবে। অন্য দিকে, এ বারের ফ্লাশিং মেডোয় অবিশ্বাস্য ছন্দে থাকা সানিয়া মির্জা মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে পৌঁছে আরও একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের সামনে। টানা তৃতীয় খেতাবের লক্ষ্যে সেমিফাইনালে মেয়েদের এক নম্বর সেরেনা উইলিয়ামসও। তবে দিনের শেষে এই সবই ম্লান করে দিয়ে গেল নোভাক জকোভিচ বনাম অ্যান্ডি মারে!

ড্র চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই দুই তারকার লড়াই নিয়ে প্রত্যাশার পারদ উর্ধ্বগামী ছিল। বুধবার রাতে সাড়ে তিন ঘণ্টার দ্বৈরথ টেনিস-পাগলদের সেই আশ মিটল। রাত একটা নাগাদ ৭-৬ (৭-১), ৬-৭ (১-৭), ৬-২, ৬-৪ স্কোরলাইনটা জকোভিচের পক্ষে যায়। যিনি জিতে বলেন, “আমাদের ম্যাচগুলো সব সময় শারীরিক শক্তি আর সক্ষমতার পরীক্ষা। জানতাম দারুণ আক্রমণাত্মক থাকতে না পারলে হারতে হবে।”

ক্লান্তি, পিঠের পুরনো ব্যথা চাগিয়ে ওঠা এবং জকোভিচের ৪৮-এর তুলনায় বেশি ৬৫টা আনফোর্সড এরর-এর মূল্য দিতে হল ব্রিটিশ তারকাকে। দু’বছর আগের ফাইনালে এই আর্থার অ্যাশেই রেকর্ড চার ঘণ্টা চুয়ান্ন মিনিটের যুদ্ধে জকোভিচকে হারিয়ে প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতেছিলেন মারে। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের শুরুটা করেন দু’জনে। প্রথম সেট টাইব্রেকারে হেরে দ্বিতীয় সেট ঠিক সেই ভাবেই ছিনিয়ে এ বারের ফ্লাশিং মেডোয় জকোভিচকে প্রথম সেট খোয়াতে বাধ্য করেন মারে। প্রথম দুই সেটে যাঁর একশো চৌঁষট্টি কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতির স্লাইসড ফোরহ্যান্ডের দাপটে হিমশিম ছিলেন জকোভিচ। কিন্তু ক্রমশ ক্লান্তি এবং জকোভিচের রক্ষণ ভেদে ব্যর্থতা মারেকে লড়াই থেকে ছিটকে দেয়। ১৬টির মধ্যে ১২টি ব্রেক পয়েন্ট বাঁচিয়ে নিশিকোরির সঙ্গে শেষ চার নিশ্চিত করে নেন জকোভিচ।

মাইকেল চ্যাং-এর ছাত্র নিশিকোরিকে আবার আগের দিন চার ঘণ্টা কুড়ি মিনিটের ম্যাচে রাত আড়াইটে পর্যন্ত লড়ে হারিয়েছিলেন মিলোস রাওনিচকে। সকাল ছ’টায় ঘুমোতে যাওয়া জাপানি বলা চলে, তৃতীয় বাছাই স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কার মহড়া নিতে নামার আগে ঠিকমতো ঘুমোনোরও সময় পাননি। চব্বিশ বছরের দশম বাছাই তবু আরও একটা চার ঘণ্টার বেশি পাঁচ সেটের টক্করে ওয়ারিঙ্কাকে হারালেন ৩-৬, ৭-৫, ৭-৬ (৯-৭), ৬-৭ (৫-৭), ৬-৪।

সেমিফাইনালের টিকিট হাতে পেয়ে কেই নিশিকোরি।

১৯১৮-য় ইচিয়া কুমাগের পর দ্বিতীয় জাপানি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ চারে পৌঁছে উচ্ছ্বসিত নিশিকোরি। “সেমিফাইনালের ওঠার অবিশ্বাস্য অনুভূতি উপভোগ করছি। দারুণ ছন্দে আছি। আর হ্যাঁ, নোভাকের বিরুদ্ধে একশো ভাগ দিতে পুরোপুরি তৈরি,” বলেছেন তিনি। ছাত্রের উচ্ছ্বাসের রাশ অবশ্য টেনে ধরেছেন চ্যাং। বলেছেন, “কাজ এখনও বাকি। ফোকাস ধরে রাখো।” জকোভিচ বনাম নিশিকোরি রেকর্ড এ পর্যন্ত ১-১। মারেকে হারানোর পর সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবছেন কি না, প্রশ্ন উঠলে জকোভিচ বলেন, “এই মুহূর্তে স্রেফ ঘুম নিয়ে ভাবছি। নাকি রাতভর পার্টি করা যায়?” ভরা গ্যালারি চেঁচিয়ে সম্মতি দিলে হেসে বরিস বকারকে টেনে যোগ করেন, “কোচ তা হলে বেসবল ব্যাট নিয়ে তাড়া করবে। তবে নিশিকোরির খুব প্রবিভাবান। ওর সার্ভিসটাও দারুণ!”

শেষ চারে পৌঁছে স্বস্তি সেরেনা উইলিয়ামসের গলায়। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্লাভিয়া পেনেত্তাকে ৬-৩, ৬-২ হারিয়ে বলেছেন, “আমি খুশি। বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল নিউ ইয়র্কে খেলব, তাই অনুভূতিটা আরও স্পেশ্যাল!” শেষ চারে সেরেনার সামনে ১৭ নম্বর বাছাই রুশ একাতেরিনা মারাকোভা।

অন্য দিকে, নিজের তৃতীয় মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের সামনে সানিয়া মির্জাও। লিয়েন্ডার পেজ-কারা ব্ল্যাক হারার দিনে সেমিফাইনালে ব্রাজিলীয় ব্রুনো সুয়ারেজের সঙ্গে সানিয়ার জুটি ইয়ুং-জান চ্যান ও রস হাচিনসের অবাছাই জুটিকে হারায় ৭-৫, ৪-৬, ১০-৭। এ বার ট্রফির যুদ্ধে সানিয়াদের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের আবিগেইল স্পিয়ার্স ও মেক্সিকোর সান্তিয়াগো গঞ্জালেস। এ বছর রোমানিয়ার হোরিয়া তেকাউয়ের সঙ্গে সানিয়া অস্ট্রেলীয় ওপেনের মিক্সড ডাবলস ফাইনালে হেরেছিল। সানিয়ার সামনে অবশ্য জোড়া খেতাবের হাতছানি। সানিয়া-কারা ব্ল্যাক জুটি মেয়েদের ডাবলসের সমিফাইনালে। এবং তাঁদের সামনে মার্টিনা হিঙ্গিস-ফ্লাভিয়া পেনেত্তার শক্ত চ্যালেঞ্জ।

ছবি: রয়টার্স

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE