১৯৭৭ সাল। চেন্নাই (তখন মাদ্রাজ)-এ ভারতীয় টেস্ট দলের আবাসিক শিবিরে যোগ দিয়েছি। কলকাতায় তখন প্রবল উত্তেজনা। পেলে খেলতে আসছেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কসমস ক্লাবের হয়ে। মোহনবাগানের কোচ ছিলেন প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুনীল গাওস্কর আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘‘কোচ হিসেবে পিকে কতটা ভাল?’’ একটা কথাই বেরিয়েছিল, ‘‘ইন্টারন্যাশনাল’’। গাওস্করের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তাই নাকি’’? আমি বললাম, ‘‘একেবারেই’’।
সত্তরের দশকেই গাওস্করের সঙ্গে প্রদীপদার আলাপ করিয়ে দিয়েছিলাম ইডেনে। তার পর থেকে দু’জনে আরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে। শুধু ফুটবলারেরা নয়, প্রদীপদাকে সম্মান করতেন প্রত্যেক ক্রিকেটার। খেলার এনসাইক্লোপিডিয়া। সব কিছু নিয়েই তাঁর অগাধ জ্ঞান। টেনিস, অ্যাথলেটিক্স এমনকি খাওয়া-দাওয়ার বিষয়েও তাঁকে তর্কে হারানো যেত না। এক বার আমাদের বাড়িতে ইলিশ মাছ খেতে নিমন্ত্রণ করেছিলাম। খাওয়ার আগে ইলিশ নিয়েই ২০ মিনিটের বক্তৃতা দিলেন। কেন ইলিশ মাছের রাজা, কী ভাবে আট রকম ভাবে রান্না করা যায়, তার বর্ণনা দিয়ে বুঝিয়েছিলেন। আজ বাংলা তাদের সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে।
প্রদীপদা আমাকে প্রচণ্ড স্নেহ করতেন। আমিও তাঁর কাছে ঋণী। সত্তর দশকের শেষের দিকে রঞ্জি ট্রফির প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল বাংলার। ইস্টবেঙ্গল মাঠে তখন প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন প্রদীপদা। লাঞ্চের আগে হ্যামস্ট্রিংয়ে ভয়ঙ্কর চোট পাই। চোট পাওয়ার খবর পেয়ে ইডেনে চলে আসেন। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট এতটাই গুরুতর, উইকেটকিপিং করা তো দূর, ঠিক মতো দাঁড়াতেই পারছিলাম না।