Advertisement
E-Paper

আই লিগে গোলের মালা ইস্টবেঙ্গলের, ডুডু একাই দিলেন চার গোল

মাস্ট উইন ম্যাচে চেন্নাই সিটি এফসিকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। শুরুটা করেছিলেন আল আমনা, আর শেষটা করলেন ডুডু।

কৌশিক চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:০৩
ফের দরজা খুলল আই লিগের। ফাইল চিত্র।

ফের দরজা খুলল আই লিগের। ফাইল চিত্র।

ময়দানের বহু পুরনো প্রবাদ, ‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল, খোঁচা খাওয়া বাঘের চেয়েও ভয়ঙ্কর।’

মাজিদ বাসকর থেকে সুলে মুসা— প্রজন্মের পর প্রজন্ম এসেছে, কিন্তু ময়দানের প্রবাদ এখনও অটুট। আর এই প্রবাদকেই ফের এক বার প্রতিষ্ঠিত করলেন আল আমনা-ডুডু ওমাগবেমিরা। শনিবারের মাস্ট উইন ম্যাচে চেন্নাই সিটি এফসিকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দিল লাল-হলুদ ব্রিগেড।

শুরুটা করেছিলেন আল আমনা, আর শেষটা করলেন গ্যাব্রিয়াল।

ম্যাচের ২০ মিনিটে চুলোভার লং বল নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে তিন বারের প্রচেষ্টায় জালে জড়ান সিরিয়ান মিডফিল্ডার। প্রথম দু’বার গোল রক্ষক কোনও ভাবে রুখে দিলেও তৃতীয় বার আটকাতে পারেননি আমনাকে।

আরও পড়ুন: বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা পাঁচ ক্যামিও

আমনার গোলের তিন মিনিটের মধ্যে ফের গোল ইস্টবেঙ্গলের। তবে এই গোলের নেপথ্যে পুরো অবদানই ধর্মরাজ রামাননের। চুলোভার ক্রস বিপদ মুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে ফেলেন ধর্মরাজ।

আর এর পরই গ্যালারিতে উপস্থিত হাজার হাজার সমর্থককে ‘ইকোম্বি’র (একটি জনপ্রিয় আফ্রিকান নাচের স্টাইল) তালে নাচাতে থাকেন ডুডু।

৩২ মিনিটে শুরু হওয়া ডুডু ম্যাজিক শেষ হয় ৬১ মিনিটে। মেহতাব সিংহের বাড়ানো বল ধরে গোল করে যান নাইজেরীয় তারকা। দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফের ডুডু ম্যাজিক। ৪৯ মিনিটে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে চার গোলের লিড এনে দেন তিনি।


একাই চার গোল ডুডুর।

৫৬ মিনিটে ক্রোমার পাশ থেকে চলতি আই লিগে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক সারেন ডুডু। তবে, এরই মাঝে প্রতি আক্রমণে হঠাৎ গোল করে যায় চেন্নাই সিটি এফসি। ৫ গোলে এগিয়ে থাকা লাল-হলুদ ম্যাচটিকে হালকা ভাবে নেওয়ায় প্রতি আক্রমণ থেকে গোল করে যান চেন্নাইয়ের মাশরুফ থানগালাকাথ।

তবে, এতে বিশেষ প্রভাব পড়েনি ইস্টবেঙ্গলের খেলায়। ৬১ মিনিটে নিজের চতুর্থ গোলটি করে যান ডুডু।

ম্যাচের ৮৪ মিনিটে চেন্নাইয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন মিনিট চারেক আগে ব্রেন্ডনের পরিবর্তে মাঠে নামা গ্যব্রিয়েল ফার্নান্ডেজ।

চারটি গোল করে ডুডু ম্যাচের সেরা হলেও এ দিনের ম্যাচের অন্যতম নায়ক কিন্তু সেই আল আমনাই।

এ দিন গোটা ম্যাচে লাল-হলুদ জার্সিধারীরা যে প্রাধান্য দেখাল, তার সিংহভাগ কৃতিত্ব এই বর্ষিয়ান মিডফিল্ডারের। মেহতাব হোসেন যে কাজটা করতেন ঠিক সেই কাজটাই করলেন আমনা। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে খেলালেন গোটা দলকে।

শুধু আমনাই নন, কাটসুমিও ছিলেন এ দিন দুরন্ত ছন্দে। মূলত এই দুই মিডিও-এর যুগলবন্দিতেই এ দিন ইস্টবেঙ্গলের খেলায় ছিল হাজার ভোল্টের আলোর ছোঁয়া।

তবে লাল-হলুদ মিডফিল্ড অনবদ্য খেললেও ডুডুর কৃতিত্ব কোনও অংশে কম নয়। ইস্টবেঙ্গলে নিজের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর থেকেই নানা বিদ্রুপ মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। এর আগে নামের পাশে ছিল মাত্র ১টি গোল।

কিন্তু, ডুডু হয়তো এই ম্যাচটিকেই বেছে নিয়েছিলেন সমালোচকদের সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসাবে। যুবভারতীতে তিনি দেখিয়ে দিলেন এখনও প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের রাতের ঘুম ছুটিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে তাঁর মধ্যে।

বহু দিন পর ইস্টবেঙ্গলের মতো খেলল ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণ থেকে মাঝমাঠ, পাশাপাশি বহু চর্চিত ডিফেন্সও এ দিন ছিল অনবদ্য। দীর্ঘ ১৩ ম্যাচ পর প্রথম এগারোয় সুযোগ পাওয়া গুরবিন্দর সিংহের মধ্যেও যেন পুরনো গুরির ছোঁয়া। পারফেক্ট ক্লিয়ারিং থেকে ম্যান মার্কিং প্রতিটি বিভাগেই লেটার মার্কসে পাশ করলেন পঞ্জাব তনয়।

গত ম্যাচে গোকুলমের বিরুদ্ধে হেরে লিগের লড়াই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু সেই গোকুলমের কাছে মিনার্ভা হেরে যাওয়ায় নতুন করে অক্সিজেন পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। পড়ে পাওয়া সুযোগ যে আর কোনও মতেই ইস্টবেঙ্গল হাতছাড়া করতে চায় না তা এই ম্যাচ থেকে বুঝিয়ে গেলেন লাল-হলুদ সেনাপতি খালিদ জামিল।

তবে, সামনের রাস্তাটা এখনও কঠিন ইস্টবেঙ্গলের জন্য। পরের দু’টি ম্যাচই পাহাড়ি দলের বিরুদ্ধে। শিলংয়ে লাল-হলুদকে খেলতে হবে শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে, লিগের শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে তাঁদের প্রতিপক্ষ নেরকা এফসি। এই দু’টি ম্যাচেও যদি এই ছন্দ বজায় রাখে ইস্টবেঙ্গল, তা হলে দীর্ঘ ১৪ বছর পর আই লিগ জয়ের আশা করতেই পারেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।

I League East Bengal Dudu Omagbemi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy