Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মিনার্ভার হার দেখেই বৈঠক অর্ণব-ডুডুদের

সোমবার শিলংয়ে লাজং এবং তার পরে ৮ মার্চ কলকাতায় নেরোকা-কে হারাতে পারলেই চোদ্দো বছর পরে আই লিগ  ঢুকবে লাল-হলুদ তাঁবুতে।  কিন্তু তার পরেও আশ্চর্য রকমের শান্ত ইস্টবেঙ্গল শিবির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:৩৪
Share: Save:

মিনার্ভা এফসি-কে ২-১ হারিয়ে ফের আই লিগ জমিয়ে দিল চেন্নাই সিটি এফসি। যার ফলে ফের খুলে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। সোমবার শিলংয়ে লাজং এবং তার পরে ৮ মার্চ কলকাতায় নেরোকা-কে হারাতে পারলেই চোদ্দো বছর পরে আই লিগ ঢুকবে লাল-হলুদ তাঁবুতে। কিন্তু তার পরেও আশ্চর্য রকমের শান্ত ইস্টবেঙ্গল শিবির।

কোচ খালিদ জামিল শিলং থেকে বলেই দিলেন, ‘‘কে কোন ম্যাচ জিতল বা হারল তা ভেবে লাভ নেই। মনে করছি, টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে এখানে এসেছি। রবিবার সেই সেমিফাইনাল। সেটা জিতলে ৮ মার্চ ফাইনাল কলকাতায়। মিনার্ভার হারে আমাদের কোনও আনন্দ নেই।’’

লাজং-এর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এ দিন সকালেই কলকাতা ছেড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। গুয়াহাটি হয়ে খালিদ জামিলের দল শিলং পৌঁছায় দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ। হোটেল পৌঁছেই অর্ণব মণ্ডল-কেভিন লোবো-সহ গোটা দলকে এক ঘণ্টা হাল্কা স্ট্রেচিং করান খালিদ। তার পরে ফুটবলাররা বসে পড়েন মিনার্ভা-র ম্যাচ দেখতে। ম্যাচ শেষ হতেই কোচ-ম্যানেজারদের বাদ দিয়ে অর্ণব-ডুডুরা হোটেলের লবিতে লিগ জয়ের জন্য ‘বিশেষ’ বৈঠকও করেছেন।

সেই বৈঠকে কী আলোচনা হল, জানতে চাইলে অধিনায়ক অর্ণব মণ্ডল বললেন, ‘‘মাথা ঠাণ্ডা রেখে শেষ দু’টো ম্যাচে জেতা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। পাহাড়ে ম্যাচ জেতা প্রথম কাজ। লিগের এত কাছে এসে তা ধরতে না পারলে এই বৈঠকের কোনও দাম থাকবে না।’’ ক্রোমার সঙ্গে এক ঘরে বসে এ দিন ম্যাচ দেখেছেন আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিককারী ডুডু ওমাগবেমি। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বলেছিলাম আমাদের সামনে সুযোগ আসবে। তা এসেছে। এ বার আমাদের তা কাজে
লাগাতেই হবে।’’

আই লিগে জেতার লড়াই এখন চতুর্মুখী। মিনার্ভা এফসি (১৭ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট), নেরোকা (১৭ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট), ইস্টবেঙ্গল (১৬ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট) ও মোহনবাগান (১৬ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট)-এর মধ্যে। যদি বাকি দুই ম্যাচের কোনও একটিতে ইস্টবেঙ্গল হারে বা ড্র করে, তা হলে চার্চিলকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা।

অন্য দিকে, মিনার্ভা যদি চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে হেরে যায়, আর ইস্টবেঙ্গল যদি নেরোকার কাছে হারে, তা হলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে নেরোকা এফসি। যদি মিনার্ভা হেরে যায় চার্চিলের কাছে এবং নেরোকা যদি শেষ ম্যাচে ড্র করে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে, তা হলে দু’ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হবে মোহনবাগান।

যদিও এই পরিস্থিতিতেও কোনও রকম আবেগে ভাসতে রাজি নয় লাল-হলুদ শিবির। ম্যাচের পরে ডিনার টেবল থেকেই দল গোছানো এবং ফুটবলারদের মনোনিবেশ করানোর কাজটা শুরু করে দিয়েছেন কোচ খালিদ জামিল, ম্যানেজার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী-রা।

মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘বেশি কিছু বলে ছেলেদের চাপ বাড়াতে চাই না। ওরা জানে, চোদ্দো বছর পরে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে আই লিগ নিয়ে ঢুকলে ইতিহাস তৈরি হবে।’’

লাল-হলুদ শিবিরের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলছেন, ‘‘এ বার ছেলেদের দেখানোর পালা, ওরা আই লিগ জয়ের যোগ্য কি না।’’ সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন, ‘‘ছেলেদের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। ভয় কেবল লিগের ক্রীড়াসূচি এবং রেফারিং। শিলং থেকে খেলে দল ফিরবে ৬ মার্চ। তার পরে এক দিন অনুশীলন করেই নেরোকার বিরুদ্ধে ম্যাচ। ‘রিকভারি’-র সময় পাওয়া যাবে না। ফেডারেশন এগুলো দেখেও চোখ বুজে রয়েছে। সেখানকার বঙ্গ-কর্তাদের এই অদ্ভুত মতিগতিই আমাদের চিন্তা।’’

বোঝাই যাচ্ছে আই লিগ জিততে মাঠে ও মাঠের বাইরে—দু’জায়গাতেই প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে লাল-হলুদ শিবিরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

football Dudu Omagbemi I-League East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE