টিকিটে মোহনবাগান ক্লাবের লোগো এবং নাম ভুল ছাপা নিয়ে ধুন্ধুমার শিলিগুড়িতে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ডার্বির সংগঠক ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে এই ঘটনার জেরে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। বৃহস্পতিবার কঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড় পরিষদের অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে এ দিন এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা তথা গ্রাউন্ড কমিটির সচিব বাবু চক্রবর্তী। এ দিন আইলিগের সিইও সুনন্দ ধর সকাল বেলা ইস্টবেঙ্গলকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে ভুল লোগো এবং নাম বদলাতে বলেছেন।
যদি দেখা যায় কোনও টিকিটে ভুল লোগো এবং নাম রয়েছে এবং সেই টিকিটে কেউ খেলা দেখছে তা হলে সেটা শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে জানানো হবে। সে ক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় রকমের জরিমানা অপেক্ষা করছে। সুনন্দবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমি শিলিগুড়ি যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ইস্টবেঙ্গলকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি লোগো এবং ভুল নাম বদলাতে হবে। কী ভাবে বদলাবেন, তা ওঁরা ঠিক করুন।’’ শেষে তাঁর ইঙ্গিত, যদি ইস্টবেঙ্গলের ভুল ধরা পড়ে তবে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি শাস্তি তথা জরিমানা করতে পারে।
তার জেরে এ দিন বেলা সাড়ে এগারোটায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কাউন্টার থেকে ডার্বির টিকিট বিক্রি শুরু হলেও দুই ঘন্টা পর টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ডার্বির টিকিটে ক্লাবের লোগোতে নাম ম্যাকডোয়েল মোহনবাগান লেখা হয়েছে। দুই জায়গায় সংক্ষিপ্ত নাম ‘এমএমবি’ লেখা রয়েছে। অথচ ম্যাকডোয়েল এখন তাদের সঙ্গে নেই। সমস্ত টিকিটই কলকাতা থেকে ছাপিয়ে শিলিগুড়িতে পাঠানো হয়েছে। বাবু চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত। নামের এবং লোগোর ভুলের জায়গায় স্টিকার লাগিয়ে সমস্ত টিকিটে সংশোধন করা হবে। বিষয়টি আমরা অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনকে জানিয়েছি।’’ তিনি জানিয়ে দেন, সেই ব্যবস্থা না-হওয়া পর্যন্ত এ দিন টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার থেকে স্টেডিয়ামে ভুল বানানের টিকিট সংশোধনের জন্য আলাদা কাউন্টার থাকবে। কলকাতাতেও ক্লাব টেন্টে বেলা ৯ টা থেকে ভুল বানানের টিকিগুলি সলংশোধন করা হবে। সংশোধন করা টিকিট ছাড়া কেউ খেলা দেখতে পারবেন না। ম্য়াচের জন্য ২৭ হাজার টিকিট ছাপা হয়েছে। সমস্তটাই সংশোধন করতে হবে।
টিকিটে ক্লাবের লোগো এবং নাম ভুল লেখার জন্য মোহনবাগান সদস্য সমর্থকেরা এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মোহন বাগান ক্লাবের প্রাক্তন সদস্য তথা শিলিগুড়িতে তাদের প্রতিনিধি অরূপ মজুমদারের কথায়, ‘‘এ ধরনের ভুল কোনও মতেই কাম্য নয়। এতো টিকিট নিয়ে ছেলেখেলা করা হচ্ছে। ক্লাবের তরফে কর্মকর্তারা ফেডারেশনকে জানিয়েছেন। টিকিট নিয়ে আমাদের কাউকে যেন হেনস্থা হতে যাতে না হয়।’’ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, দূর থেকে এসে যারা টিকিট কেটে নিয়ে গিয়েছেন ম্যাচের দিন গেটেও তাঁরা টিকিট সংশোধন করাতে পারবেন।
এদিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম থেকে কয়েক হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। টিকিট বিলি হয়েছে কলকাতায় ক্লাব টেন্ট থেকেও। মোহনবাগান ক্লাবের জন্য মাত্র ৪ হাজার টিকিট দেওয়ার কথাই জানিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা। তবে বুধবার আরও দুই হাজার টিকিট মোহনবাগানের তরফে চেয়ে ইমেল পাঠানো হয়েছে। তা শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। যদিও এ দিন বাবু চক্রবর্তী এ ধরনের মেল পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।