Advertisement
E-Paper

কটকে যুদ্ধ, কলকাতায় জোট

ডার্বির ছিয়ানব্বই বছরের ইতিহাসে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি কোনওদিন! কটকে যখন শনিবার সনি নর্দে বনাম ওয়েডসন আনসেলেমদের টিম হোটেল চলছে যুদ্ধ জয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি, তখন অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে দুই প্রধানের কর্তারা অন্য এক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন একজোট হয়ে।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৪:২০

ডার্বির ছিয়ানব্বই বছরের ইতিহাসে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়নি কোনওদিন!

কটকে যখন শনিবার সনি নর্দে বনাম ওয়েডসন আনসেলেমদের টিম হোটেল চলছে যুদ্ধ জয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি, তখন অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে দুই প্রধানের কর্তারা অন্য এক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন একজোট হয়ে। সব ইগো, সব বিদ্বেষ সরিয়ে রেখে।

আজ রবিবারের ফেড কাপ সেমিফাইনালের ফল যা-ই হোক, ফের আইএফএ-র ডাকে আলোচনার টেবিলে বসতে চলেছে দুই ক্লাব। শনিবার সন্ধ্যায় আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বলে দিলেন, ‘‘দু’বার দুই ক্লাবের শীর্ষস্থানীয় সব কর্তাকে নিয়ে বসেছি। ফেড কাপ শেষ হলে আবার বসব। ’’

বাঙালির দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার এই ম্যাচ বরাবরই ভরা থাকে নাটকীয় উপাদানে। সেই ক্যানভাসে কখনও লাগে রামধনুর রং, ঘটে আবেগের বিস্ফোরণ। আবার কখনও এই ম্যাচের গায়ে লাগে রক্ত, মৃত্যুর কলঙ্কও। দেশের সবথেকে আকর্ষণীয় সেই ম্যাচের ভবিষ্যৎই এখন প্রশ্নের সামনে। আড়ম্বরের আইএসএল আর ফেডারেশনের নতুন নীতির ধাক্কায় কলকাতা ডার্বির-ই তো নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়।

মোহনবাগান শীর্ষ কর্তারা আজ মাঠে থাকলেও ইস্টবেঙ্গলের কোনও বড় কর্তা কটক যাননি। তবে যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের মতো কলকাতার কর্তারাও ডার্বি জেতার পাশাপাশি মন্দিরে পুজো দিয়ে মানত করছেন ক্লাবটা যেন বাঁচে! যেন বাঁচে বাঙালির নস্টালজিয়ার সেরা উপাদান।

কটকে টিম হোটেলে যাওয়ার আগে এ দিন সকালে মোহনবাগানের এক শীর্ষ কর্তা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গিয়েছিলেন। বলছিলেন, ‘‘ডার্বি জেতার পাশাপাশি ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করেছি একশো সাতাশ বছরের ক্লাবটা যেন কুমারটুলি হয়ে না যায়।’’ কালীঘাটের প্রসাদী ফুল নিয়ে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে দেখা গেল এক কর্তাকে। বলছিলেন, ‘‘ডার্বিটা জিততে পারলে মনে হয় জীবনের সব জিতে গেলাম। কিন্তু যা অবস্থা সেটাই শেষ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।’’

বাবুঘাট বা ধর্মতলায় কটকগামী বাসের কোনও টিকিট নেই। ইডেনে নাইট রাইডার্সের মরণ-বাঁচন ম্যাচ চলছে, তা সত্ত্বেও শনিবার সন্ধ্যায় দেখা গেল বাসগুলোর গায়ে দু’দলের পতাকা ঝোলানো। এক সঙ্গে খেলা দেখতে যাচ্ছেন দুই প্রধানের সমর্থকরা। নিখাদ আবেগের মাঝেও আলোচনা চলছে, আইএসএলের পাশাপাশি আই লিগ হলে ডার্বি জমবে তো?

প্রশ্ন হল, ভারতীয় ফুটবলে সোনার ডিম পাড়া এই হাঁসের মৃত্যু কি আজই ঘটবে কটকে? কারণ শনিবারই মুম্বইতে ফোন করে জানা গেল, এএফসি সচিব ডাটো উইনসোর মে মাসের শেষে আসছেন আইএসএলকে স্বীকৃতি দিতে। জানাবেন, আইএসএল চ্যাম্পিয়নরা খেলবেন এএফসি কাপ।

আর সেটা হলে কী হবে?

দেশের সেরা ফুটবলাররা আইএসএল খেলবে। যেখানে বিপণন বা সম্প্রচার বাবদ খরচ হবে তিনশো কোটি টাকা। সেই টুনার্মেন্টের পাশে পনেরো কোটি খরচে করা ম্যাড়মেড়ে আই লিগ বাঁচবে কোন রসায়নে? আর আই লিগই যদি মরে যায় (ফেড কাপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে খবর) তা হলে সেই টুনার্মেন্টে খেলা সবুজ-মেরুন বা লাল-হলুদের রং ও তো ফিকে হবেই। ডার্বিই বা বেঁচে থাকবে কী করে? কটক কি তা হলে শেষের শুরু?

East Bengal Mohun Bagan ISL I League merger rule Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy