এএফসি কাপকে তিনি গুরুত্ব দেননি। তাই এএফসি কাপের বেশ কিছু ম্যাচে গা ছাড়া ভাব দেখিয়ে প্রথম একাদশকে নামাতে একাধিক বার টালবাহানা করেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ এলকো সতৌরি। কিন্তু মঙ্গলবার হংকংয়ের মাটিতে কিটচির বিরুদ্ধে ২-২ ড্রয়ের পর হতাশায় হাত কামড়াচ্ছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। কেউ কেউ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লিখেও বসেছেন, কোচ শুরু থেকেই এএফসি কাপকে গুরুত্ব দিলে এ বারও শেষ ষোলোয় হাসতে হাসতে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ ছিল।
কিন্তু এলকো সতৌরি তা মানলে তো! বরং আশি মিনিট পর্যন্ত ০-২ পিছিয়ে থেকে ২-২ করে হংকংয়ের মাঠ থেকে ফেরার পর লাল-হলুদ কোচের ‘ফিল গুড’ ফ্যাক্টরটা এ রকম— ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে যে ফুটবলটা ছেলেরা আজ খেলল তার জন্য ছেলেদের প্রশংসা করতেই হচ্ছে। দলে আজ কিছু আক্রমণাত্মক পরিবর্তন করেছিলাম। ওদের দু’টো গোলের সময়ই তার মাশুল গুনতে হল।’’
এ বারের সাফল্য বলতে কেবল কলকাতা লিগ। মরসুম শেষের পথে। আই লিগ যে আসছে না তা সপ্তাহ খানেক আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। যে এএফসি কাপে নজর কেড়ে স্পনসরদের কাছে টিমের টিআরপি বাড়ানো যেত তা ডাচ কোচ এএফসি-র প্রতি ম্যাচেই ‘আক্রমণাত্মক’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে শেষ করেছেন।
অথচ, পুরো দল নামিয়ে যদি জোহর দারুল, বালেস্তিয়ার খালসার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে জয় ছিনিয়ে আনতে পারত লাল-হলুদ। তা হলে এ দিন ড্রয়ের পর ‘এফ’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে এএফসি কাপের শেষ ষোলোয় যাওয়ার কথা ইস্টবেঙ্গলেরই। বদলে চার দলের গ্রুপে ছ’ম্যাচের পর পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে এ বারের এএফসি অভিযান শেষ করলেন অর্ণব মণ্ডলরা।
লাল-হলুদের ডাচ কোচ এলকো এ দিনও এই মুহূর্তে দেশের সেরা গেমমেকার লোবোকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে রফিককে প্রথম একাদশে রেখেছিলেন। কেন? তা বোধগম্য নয়। বরং লোবো পরে নামতেই ঝলমল করল লাল-হলুদ। লোবো নামতেই সচল হল লাল-হলুদের আক্রমণ ভাগ। যায় নিট ফল র্যান্টির গোল। আর ম্যাচের একদম অন্তিম লগ্নে লোবোর গোলে নিশ্চিত স্বস্তির এক পয়েন্ট।
লাল-হলুদ কোচ এলকো অবশ্য ম্যাচ শেষে বললেন, ‘‘এই ড্র থেকে টিম একটা দুরন্ত মানসিক শক্তি নিয়ে ফিরছে। এটা একটা বড় পাওনা।’’
হংকং থেকে লাল-হলুদ কোচ শহরে আসার আগেই তাঁর এই মন্তব্যে হাসাহাসি শুরু হয়ে গিয়েছে ময়দানে। কারণ, এ দিনের ভূমিকম্পের বহু আগেই যে ইস্টবেঙ্গলে তাঁর ‘হটসিট’ নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। ময়দানের প্রশ্ন, এই ‘মানসিক বল’ নিয়ে এলকো এ বার কী করবেন?