Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Cricket

কুলদীপ সারপ্রাইজ প্যাকেজ, তবে চিন্তা অনভিজ্ঞতাই: প্রসন্ন

ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ভারতের গেমপ্ল্যান কেমন হওয়া উচিত? কুলদীপের মানসিকতা কেমন থাকা দরকার? অশ্বিনের সাফল্যের পথেই বা কোনটা জরুরি? জানালেন কিংবদন্তি অফস্পিনার এরাপল্লি প্রসন্ন।

কুলদীপকে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা আক্রমণ করবেন না বলেই ধারণা প্রসন্নর। ছবি: রয়টার্স।

কুলদীপকে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা আক্রমণ করবেন না বলেই ধারণা প্রসন্নর। ছবি: রয়টার্স।

সৌরাংশু দেবনাথ
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ১৪:০০
Share: Save:

পাঁচ দশক পেরিয়ে গিয়েছে। ১৯৬৭ সালে জুনের গোড়ায় ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলেছিলেন প্রথম টেস্ট। লিডসে সেই টেস্টে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন মনসুর আলি খান পটৌডী। সেই সফরে খেলছিলেন তিন টেস্ট। হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ভারত। তবে বার্মিংহ্যামে তৃতীয় টেস্টে নজর কেড়েছিলেন এরাপল্লি প্রসন্ন। অফস্পিনের জাদুগরিতে প্রথম ইনিংসে ৫১ রানে তিন উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬০ রানে চার উইকেট। বেঙ্গালুরুর অফস্পিনার ১৯৭৪ সালেও ইংল্যান্ডে খেলেছিলেন দুই টেস্ট। তবে নিজের কেরিয়ারে বিলেতে টেস্ট জয়ের সাক্ষী হতে পারেননি।

শেষ দুই সিরিজে ভারতীয় দল আবার ইংল্যান্ডে শুধু হারেইনি, লজ্জার শিকারও হয়েছে। ২০১১ সালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলকে ৪-০ হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। ২০১৪ সালে ফের ধোনির দলই হারে ৩-১ ফলে। এ বার বিরাট কোহালির দল কি সেই অপমান ফিরিয়ে দিতে পারবে? ভারতীয় স্পিনারদের ভূমিকাই বা কেমন হবে? আনন্দবাজার ডিজিটালকে এই সফরের চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুক্রবার সকালে সাক্ষাত্কার দিলেন ৭৮ বছর বয়সী কিংবদন্তি অফস্পিনার।

পাঁচ টেস্টের সিরিজ শুরু হবে বুধবার এজবাস্টনে। ভারতের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?

প্রসন্ন: সিরিজ খুব আকর্ষণীয় হতে চলেছে। গ্রীষ্মের এটা সেকেন্ড হাফ। ওয়েদার শুকনো থাকবে। উইকেটও সম্ভবত স্পিনারদের পক্ষে সহায়ক হবে। আর ইংল্যান্ড আক্রমণ তেমন কিছু নয়। ওদের মানসিকতা অবশ্য আক্রমণাত্মক থাকবে। তবে ভারত খুব ভাল করবে বলে আশা করছি। আমার মতে, এই সিরিজে বিরাট কোহালির দলের জেতার সম্ভাবনা ৬৫:৩৫। এগিয়ে রাখছি ভারতকেই।

ইংল্যান্ডের কন্ডিশন সাধারণত সিম-সুইং বোলিংয়ের উপযোগী। কিন্তু ভারতের স্পিন আক্রমণও বেশ তীক্ষ্ণ। প্রথম এগারোয় স্পিনার ক’জন থাকা উচিত?

প্রসন্ন: দুই স্পিনারেই খেলুক। কুলদীপ যাদব আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলানো হোক। শুধু খেলালেই চলবে না। গেমপ্ল্যান খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। দুই স্পিনারকে দুই প্রান্ত থেকে একসঙ্গে বল করানো দরকার। যদি একজন স্পিনার বল করে, তখন অন্য প্রান্ত দিয়ে রান আটকাতে হবে। সহজ রান উপহার দিলে চলবে না। আবার বলছি, এই সিরিজে ভারতের গেমপ্ল্যান ভেরি ভেরি ইমপরট্যান্ট। মিডল ওভার ম্যানেজমেন্ট ঠিক করে দেবে ভারত ম্যাচটা জেতার জন্য ঝাঁপাবে, নাকি হার বাঁচানোর চেষ্টা করবে। মিডল ওভার ম্যানেজমেন্ট ঠিকঠাক হলে ভারত টেস্টে দাপট দেখানোর জায়গায় পৌঁছবে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। না হলে মুশকিল। মাঝের ওভারগুলোয় যদি উইকেট নেওয়া না যায়, তখন টেস্ট সিরিজে মাথা লুকানোর জায়গা খুঁজতে হবে।

অশ্বিনের স্ট্রাইকরেট খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করছেন প্রসন্ন। ছবি টুইটারের সৌজন্যে।

কুলদীপকে নিয়ে নানা চর্চা চলছে। সাফল্য পাবেন চায়নাম্যান?

প্রসন্ন: কুলদীপের ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। ওঁর সুবিধা হল, সাম্প্রতিক অতীতে খুব বেশি চায়নাম্যানকে বিশ্ব ক্রিকেটে দেখা যায়নি। ব্যতিক্রম অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাড হগ। ফলে, ব্যাটসম্যানরা এই ধরনের স্পিনের বিরুদ্ধে খুব একটা সড়গড় নয়। ও তাই সারপ্রাইজ প্যাকেজ। ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতেই পারে কুলদীপ। ওঁদের রক্ষণাত্মক হয়ে উঠতে বাধ্য করতেই পারে। আমার ধারণা, বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা ওঁর বিরুদ্ধে ঝুঁকি নিতে চাইবে না। দেখে-শুনে খেলার চেষ্টা করবে ওঁকে। ব্যাটসম্যানরা মারতে গেলেই অতীতে সাফল্য পেয়েছে কুলদীপ। তাই আমার মনে হয় না টেস্টে জো রুটের দল ওঁকে মারতে যাওয়ার স্ট্র্যাটেজি নেবে না। কারণ, ওঁকে আক্রমণ করার কোনও দরকার নেই। সময় নিয়ে খেললেই হয়।

কুলদীপকে আপনি কী পরামর্শ দিতে চাইবেন?

প্রসন্ন: কুলদীপকে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। নিজেকেই বলতে হবে যে উইকেট নিতে পারি। তবে প্রত্যেক বলেই উইকেট নেব, এমন ভাবনার দরকার নেই। ব্যাটসম্যানকে ভুল করিয়ে উইকেট নেওয়ার মতো দক্ষতা ওঁর কিন্তু রয়েছে.। সমস্যা হল, ওঁর অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই। দুটোর বেশি টেস্ট খেলেনি। সেগুলোও উপমহাদেশে। অনভিজ্ঞতা না বিপক্ষে যায়! বড় আসরে অভিজ্ঞতার অভাব কিন্তু ভোগাতেই পারে।

দলের একনম্বর স্পিনার হলেন অশ্বিন। কিন্তু উপমহাদেশের বাইরে তিনি তেমন সফল নন।

প্রসন্ন: অশ্বিনের ক্ষেত্রে স্ট্রাইক রেট খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। উইকেট নিতে বেশি দেরি করলে চলবে না। দ্রুত উইকেট না এলে চাপ বাড়বে। পাঁচদিনের ম্যাচ তো। কুড়ি বল পরেই উইকেট হয়তো আসবে না। অশ্বিনকে তখন শান্ত থাকতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। তবে উইকেট জলদি এলে তার প্রভাব পড়বে বোলিংয়ে। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাবে তখন।

পেস বোলিংয়ে তো এমনিতেই সমস্যা। ভুবনেশ্বর কুমার নেই প্রথম তিন টেস্টে। প্রথম টেস্টে নেই জসপ্রীত বুমরাও।

প্রসন্ন: পেস বোলিংয়ে আমার ট্রাম্পকার্ড হল উমেশ যাদব। আমার মনে হয় ইংল্যান্ড সফল হয়ে ওঠার মশলা রয়েছে ওঁর মধ্যে।

আরও পড়ুন: ‘ক্রিকেট আর দেশ চালানো কিন্তু এক নয়’, ইমরানকে বার্তা আজহারউদ্দিনের

আরও পড়ুন: অশ্বিনের চোটে উদ্বেগে ভারত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE