মরসুমের শুরুতে ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বের ডার্বি। মোহনবাগানকে হারিয়ে শাপমুক্ত ইস্টবেঙ্গল। নন্দ কুমারের গোলে টানা আটটি ডার্বিতে হারের যন্ত্রণা সমর্থকরা ভুললেও কেউ কেউ মশালবাহিনীর সাফল্যকে অঘটন অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে মোহনবাগান ডুরান্ড কাপ জয়ের পরে বলা হচ্ছিল, দিমিত্রি পেত্রাতস, জেসন কামিংসরা অপ্রতিরোধ্য। এই মরসুমেও আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হবেন তাঁরা।
ফুটবল যে চরম অনিশ্চয়তার খেলা। কয়েক মাসের মধ্যেই বদলে গিয়েছে ছবি। সুপার কাপের ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে স্বস্তি। যত উদ্বেগ মোহনবাগানের অন্দরমহলে। শেষ চারে ওঠার জন্য ১৯ জানুয়ারির ডার্বিতে ক্লেটন সিলভাদের ড্র করলেই চলবে। কিন্তু মোহনবাগানকে জিততেই হবে। কারণ, প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী, গ্রুপের দুটি দলের পয়েন্ট যদি সমান হয়, তখন দেখা হয় গোলপার্থক্য। এই মুহূর্তে দুই প্রধানেরই গোলপার্থক্য সমান (২)। সেক্ষেত্রে ডার্বি ড্র হলে গোলপার্থক্য একই থাকবে। তখন দেখা হবে বেশি গোল করেছে কোন দল। এখানেই এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। দু’টি ম্যাচে মশালবাহিনী করেছে ৫ গোল। মোহনবাগান করেছে ৪ গোল।
এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে মোহনবাগানের বিদায়, আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকের জেরে কোচ জুয়ান ফেরান্দোর অপসারণ। আবার আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। কিন্তু প্রথম দলের ন’জন ফুটবলারকে ছাড়া সুপার কাপে খেলতে নেমে গ্রুপ পর্বের দু’টি ম্যাচেই শুরুতে পিছিয়ে পড়ে কোনও মতে জেতেন হুগো বুমোসরা। প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হারান ডেকান এফসিকে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ২-১ গোলে জেতেন হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে।
ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদেরও আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকের লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয়েছিল। কিন্তু কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত রণনীতি পরিবর্তন করতেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেন ক্লেটনরা। সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলও ৩-২ গোলে কোনও মতে জিতেছিল হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু রবিবার ডেকানকে আধিপত্য নিয়েই ২-১ গোলে হারায় মশালবাহিনী। শুক্রবারের ডার্বিতে বদলে যাওয়া ইস্টবেঙ্গলকেই এগিয়ে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও সতর্ক কার্লেস পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সোমবার থেকেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু করেছেন। পাশাপাশি তিনি উদ্বুদ্ধ করেন অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলারদেরও।
ইস্টবেঙ্গলে যখন তুঙ্গে ডার্বির প্রস্তুতি, সবুজ-মেরুন শিবিরে অধীর অপেক্ষা হাবাস কখন আসবেন? ভিসা সমস্যা কাটিয়ে সোমবারই অবশেষে কলকাতায় চলে এলেন স্পেনীয় কোচ। আজ, মঙ্গলবারই তিনি ভুবনেশ্বরে দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। হাবাসের কোচিংয়ে মোহনবাগান কি আবার চেনা ছন্দে ফিরবে? ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সুপার কাপের শেষ চারে উঠতে পারবে? হাবাসের কথায়, ‘‘আমার লক্ষ্য মোহনবাগানকে সেরা করে সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করা। ফোনে যোগাযোগ ছিল ক্লিফোর্ড মিরান্ডার সঙ্গে। দলের যেখানে উন্নতি দরকার, সেটাই করতে হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)