চার বছর আগের সেই দিনটা এখনও ভুলতে পারেননি সঙ্গীতা বাসফোর। হাঁটুর চোটের কারণে শেষ মুহূর্তে ছিটকে গিয়েছিলেন ব্রাজিলগামী ভারতীয় দল থেকে। সারারাত কেঁদেছিলেন বালিশে মুখ গুঁজে। শনিবার তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে সঙ্গীতার জোড়া গোলেই ইতিহাস গড়ল ভারতীয় দল। ২-১ জিতে প্রথমবার মেয়েদের এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলবে ভারত। শনিবারও চোখের জল বাঁধ মানেনি সঙ্গীতার। তবে এই কান্না প্রথমবার ভারতকে এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে তোলার আনন্দের। যন্ত্রণা ভোলার।
চোট কাটিয়ে অন্ধকার থেকে আলোয় প্রত্যাবর্তনের মতোই রোমাঞ্চকর বঙ্গ তনয়ার জীবনের কাহিনি। সঙ্গীতার মা ফুলঝুরি বাসফোর কল্যাণীর একটি হাসপাতালের সাফাইকর্মী। হাসপাতালে থাকায় মেয়ের খেলাও দেখতে পারেননি তিনি। একই রকম আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন সঙ্গীতার শৈশবের কোচ প্রতিমা মণ্ডলও। আনন্দবাজারকে বলছিলেন, ‘‘২০০৬ অথবা ’০৭ সালে অনুশীলনে ওকে প্রথম বার দেখেই ভাল লেগে গিয়েছিল। সে বছরই অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় ফুটবলে মণিপুরকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলা। অসাধারণ খেলেছিল সঙ্গীতা। ওর সব চেয়ে বড় গুণ হল, হার-না-মানা মানসিকতা এবং শেখার ইচ্ছে। প্রবল দারিদ্রের মধ্যেও ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেনি।’’ আরও বললেন, ‘‘সঙ্গীতা শুরু করেছিল ফরোয়ার্ড হিসেবে। পরবর্তীকালে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে শুরু করে। খেলার ধরনও বদলে ফেলেছে।’’ কী রকম? প্রতিমা দেবী যোগ করলেন, ‘‘আগে দূর থেকে শট নেওয়ার প্রবণতা ছিল। এখন গোলের কাছে গিয়ে শট মারছে। গতিও অনেক বেড়েছে।’’
সীমা সুরক্ষা বল (এসএসবি)-এর কর্মী হওয়ায় বাংলার হয়ে অবশ্য খেলেন না সঙ্গীতা। তবে মেয়েদের এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলবেন তিনি। এ দিকে প্রথমবার মেয়েদের এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করায় ভারতীয় দলের জন্য ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)