এমএলএস কাপ চ্যাম্পিয়ন হল ইন্টার মায়ামি। নায়ক সেই লিয়োনেল মেসি। ফাইনালে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩-১ ব্যবধানে হারালেন মেসিরা। ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচে দলের দু’টি গোলেরই কারিগর তিনি। উল্লেখ্য, আগামী মরসুমে নতুন স্টেডিয়াম ‘মায়ামি ফ্রিডম পার্ক’-এ চ্যাম্পিয়ন হিসাবে পা রাখবে ইন্টার মায়ামি।
কঠিন মরসুম শেষে ট্রফি জয়ে উচ্ছ্বসিত মায়ামির ফুটবলারেরা। এক বছরে ৫৮টি ম্যাচ খেলতে হল মায়ামিকে। এমএলএসের ইতিহাসে এক ক্যালেন্ডার বছরে এতগুলি ম্যাচ খেলার নজির আর কোনও দলের নেই। তবু ক্লান্তিহীন ভাবে খেলে গিয়েছেন মায়ামির ফুটবলারেরা। বছরের শুরুতে দলের শক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। মেসি ছাড়া ট্রফি জেতানোর মতো ফুটবলার নেই বলে মনে করেছিলেন ফুটবল বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তবু এমএলএস কাপকেই পাখির চোখ করে এগিয়ে ছিল মায়ামি।
ফাইনালের ফল মেসিদের অনুকূলে ৩-১ হলেও ভ্যাঙ্কুভার বেশ ভাল খেলেছে। তবু জয় পেতে সমস্যা হয়নি মেসিদের। ম্যাচের ৮ মিনিটেই ভ্যাঙ্কুভারের এডিয়ের ওকাম্পুর আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় মায়ামি। বলের কাছাকাছি মেসি ছিলেন। বল দ্রুত বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে ফেলেন তিনি। এই গোলের পর আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয় ভ্যাঙ্কুভারকে। যদিও ম্যাচের প্রথমার্ধে কোনও দলই গোল করতে পারেননি। বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি হলেও কাজে লাগাতে পারেননি দু’দলের স্ট্রাইকারেরা। দাপট বেশি ছিল ভ্যাঙ্কুভারেরই।
১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে মায়ামি। গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ভ্যাঙ্কুভারের ফুটবলারেরা। ৬০ মিনিটের মাথায় দলের হয়ে সমতা ফেরান আলি আহমেদ। এর পর অবশ্য তারা আর বিশেষ কিছু করতে পারেনি। মেসিকে কেন্দ্র করে একের পর এক আক্রমণ গড়ে তুলতে শুরু করে মায়ামি। ৭১ মিনিটে মেসির স্বদেশীয় মিডফিল্ডার রদ্রিগো ডি পল গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। মরসুমের মাঝ পথে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে মায়ামিতে যোগ দেওয়া ডি পলকে বল সাজিয়ে দেন মেসি। তার আগে প্রতিপক্ষ এক ফুটবলারের পা থেকে কেড়ে নেন বল। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি তিনি। তবে মায়ামির জয় নিশ্চিত ম্যাচের প্রায় শেষ মুহূর্তে। সংযুক্ত সময়ের ৬ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন তাদেয়ো আলেন্দে। এই গোলের ক্ষেত্রেও মেসির অবদান রয়েছে। ডান দিকে বল পান মেসি। তাঁর কাছাকাছি ছিলেন প্রতিপক্ষ দলের তিন ডিফেন্ডার। এক জনের পাশ দিয়ে আলতো টোকায় বল বের করে নেন তিনি। তাতেই কেটে যান বাকি দু’জনও। মেসি বল সাজিয়ে দেন আলেন্দেকে। যদিও মায়ামির দ্বিতীয় গোলের পর আহমেদের একটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তা না হলে, ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।
খেলা শেষ হওয়ার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি মায়ামি কোচ হাভিয়ার মাসচেরানো। মাঠে ঢুকে ঘাসে চুমু খান তিনি। ফুটবলারদের মতোই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। অস্থায়ী কাঠামোর চেজ স্টেডিয়াম সাক্ষী থাকল মায়ামির ঐতিহাসিক সাফল্যের।