Advertisement
E-Paper

পাওয়া গেল না লিগ-শিল্ডজয়ী বাগানকে, হার জামশেদপুরের কাছে, যুবভারতীতে সোমবার ফাইনালে ওঠার লড়াই

জামশেদপুরে গিয়ে হেরে গেল মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারতে হল আইএসএলের লিগ-শিল্ডজয়ীদের। ১-২ গোলে হেরে গিয়েছে মোহনবাগান।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ২১:২৬
football

হেরে গেল মোহনবাগান। ছবি: সমাজমাধ্যম।

জামশেদপুর ২ (সিভেরিয়ো, জ়াভি)
মোহনবাগান ১ (কামিংস)

জামশেদপুরে গিয়ে হেরে গেল মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারতে হল আইএসএলের লিগ-শিল্ডজয়ীদের। ১-২ গোলে হেরে গিয়েছে মোহনবাগান। জেসন কামিংসের দুরন্ত ফ্রিকিকও হার বাঁচাতে পারল না। যে ফুটবল গোটা আইএসএলে তারা খেলেছে, এ দিন জামশেদপুরে সেই চেনা মোহনবাগানকে পাওয়া গেল না। সবুজ-মেরুনের হারে ‘অবদান’ থাকল বাংলার ছেলে ঋত্বিক দাসের, যিনি দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসাবে নেমে জ়াভিকে দিয়ে গোল করালেন।

মনবীর সিংহ এবং আপুইয়াকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান। দুই ফুটবলারই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রিজ়ার্ভ বেঞ্চে ছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং জেমি ম্যাকলারেন। তাঁদের জায়গা পূরণ করা সহজ ছিল না। প্রথমার্ধ থেকে বার বারই এই অভাব বোঝা গেল। বিশেষত আপুইয়ার, কারণ মাঝমাঠে খেলা অনেকটা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন।

ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি পেতে পারত জামশেদপুর। নিখিল বারলার শট লাগে আশিস রাইয়ের হাতে। জামশেদপুরের ফুটবলারেরা পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি তাতে কর্ণপাত না করে কর্নার দেন, যা সহজেই ক্লিয়ার করে দেয় মোহনবাগান।

খেলা যত এগোতে থাকে ততই ম্যাচে দাপট দেখা যেতে থাকে জামশেদপুরের। তাদের পায়ে বলের নিয়ন্ত্রণ হয়তো কম ছিল। কিন্তু সুযোগ তৈরি করছিল বেশি। মাঝমাঠে বার বার চোখে পড়ছিলেন জাভি হের্নান্দেস। সতীর্থদের উদ্দেশে ভাল ভাল পাস বাড়াচ্ছিলেন তিনি। অন্য দিকে, মনবীরের জায়গায় খেলা সাহাল সামাদ বলই পাচ্ছিলেন না।

গ্রেগ স্টুয়ার্ট এ দিন আশ্চর্যজনক ভাবে নিষ্প্রভ ছিলেন। তাঁকে বল ছুঁতেই দিচ্ছিল না জামশেদপুর। গ্রেগও নীচে নেমে এসে বল কাড়ার চেষ্টা করছিলেন না বিশেষ। একা কিছুটা চেষ্টা করছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। তবে সেটা জামশেদপুরকে খুব একটা বিড়ম্বনায় ফেলতে পারছিল না। উল্টে কামিংসকে দেখা যাচ্ছিল নীচে নেমে এসে বল কাড়ার চেষ্টা করতে।

জামশেদপুর আক্রমণ করছিল দুই উইং দিয়ে। সঙ্গে ছিল মহম্মদ সানান এবং বারলার উইং দিয়ে আক্রমণ। তবে জামশেদপুর এগিয়ে যায় লম্বা একটি থ্রো থেকে, যা তাদের আক্রমণের আরও একটি অস্ত্র। বাঁ প্রান্ত থেকে লম্বা থ্রো করেছিলেন মহম্মদ উভাইস। সেই থ্রো হেডে পিছনে ঠেলে দেন স্টিফেন এজ়‌ে। অরক্ষিত থাকা সিভেরিয়োর হেড অনায়াসে পরাস্ত করে বিশাল কাইথকে। সিভেরিয়ো আটকানোর কথা ছিল শুভাশিস বসুর। তিনি নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন।

৩৪ মিনিটের মাথায় স্টুয়ার্টের ফ্রিকিক থেকে আলবের্তো রদ্রিগেসের হেড বারে ধাক্কা খেয়ে নীচে পড়ে। তবে জামশেদপুর গোলরক্ষক আলবিনো গোমস তা সহজেই ধরে গেলেন। তবে গোলের জন্য আর বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি মোহনবাগানকে। তিন মিনিট পরেই সমতা ফেরায় তারা।

গোল করার আগে পর্যন্ত কামিংসের কোনও অবদান দেখা যায়নি। দু’-এক বার বল পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। কেন হোসে মোলিনা বেঞ্চে রেখেছিলেন পেত্রাতোস এবং ম্যাকলারেনকে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। সব সমালোচনার জবাব এক ফ্রিকিকে দিয়ে দেন কামিংস।

নিজের অর্ধে একটি বল বুকে ভাল রিসিভ করতে পারেননি আশুতোষ মেহতা। বল কিছুটা এগিয়ে যায়। সেই বল ধরে এগোতে গিয়েছিলেন কামিংস। সামনে কেউ ছিলেনও না। তবে বল কাড়তে মেহতার ট্যাকলে পড়ে যান কামিংস। এ ধরনের পরিস্থিতি মেহতাকে লাল কার্ড দেখানো উচিত ছিল। তবে রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন।

তখনও কেউ বুঝতে পারেননি আগামী কয়েক সেকেন্ডে কী হতে চলেছে। বক্সের বেশ খানিকটা দূরে ফ্রিকিক পেয়েছিল মোহনবাগান। ৩৫ গজ দূর থেকে সরাসরি ফ্রিকিকে গোল করেন কামিংস। আন্তর্জাতিক ফুটবলেও এ রকম গোল খুব একটা দেখা যায় না। বল যে কোণ দিয়ে গোলে ঢোকে, তা বাঁচানো কোনও গোলকিপারের পক্ষেই সম্ভব ছিল না।

গোল পেয়ে আরও আগ্রাসী হয়ে যায় মোহনবাগান। আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয়। তবে মাঝমাঠে কেউই খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। লিস্টন, অনিরুদ্ধ, সাহাল, কাউকেই নিজের ফর্মে পাওয়া যায়নি।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ধরন পাল্টে ফেলে জামশেদপুর। মোহনবাগান পায়ে বল রাখছিল বেশি। মাঝেসাঝে আক্রমণও করছিল। জামশেদপুর মন দিয়েছিল প্রতি-আক্রমণে। জর্ডান মারেকে অনেক বেশি সক্রিয় দেখাচ্ছিল। মোহনবাগানকে দেখে মনে হচ্ছিল তারা ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। ম্যাকলারেন, পেত্রাতোসকে নামিয়েও খেলায় ফেরেনি। সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় জামশেদপুর। তাদের ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দেন এক পরিবর্ত ফুটবলারই। আসানসোলের ছেলে ঋত্বিক।

নর্থইস্ট ম্যাচে ঋত্বিকের বল কাটানোর ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার গোল করালেন তিনি। বাঁ প্রান্তে বল পেয়েছিলেন ঋত্বিক। ডান দিকে ক্রস করেন। পিছন থেকে ছুটে আসা জ়াভি চলতি বলে পা লাগিয়ে গোল করেন।

Mohun Bagan Jamshedpur FC ISL 2024-25
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy