মধ্যমণি: সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে মগ্ন নেমার। দোহায়। ছবি রয়টার্স
জ়েকা পাগলোদিনহোর নাম কি এখনও মনে আছে ফুটবলপ্রেমীদের? কুড়ি বছর আগে কোরিয়া-জাপানে রোনাল্ডো, রিভাল্ডো, রোনাল্ডিনহোরা পঞ্চম বার বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ব্রাজিলের এই জনপ্রিয় সাম্বা গায়কের গানকে হাতিয়ার করেই। হোটেল থেকে স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুম। এমনকী, টিম বাসেও ব্রাজিলের ফুটবলাররা সর্বক্ষণ শুনতেন ‘দিক্সা আ ভিদা মি লেভার’, বাংলায় যার অর্থ ‘জীবন আমাকে যেখানে নিয়ে যাবে’ গানের কলি। কাতারে এ বার থাকবেন জ়েকার ভাইপো জুনিনহো থিবাও। পেশায় তিনিও সাম্বা গায়ক।
রোনাল্ডোরা মনে করেন, জ়েকার গানই নাকি তাঁদের পঞ্চম বার বিশ্বসেরা হওয়ার মঞ্চে পৌঁছে দিয়েছিল। সেই বিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে নেমারদের মধ্যেও। এই কারণেই জুনিনহোকে কাতার উড়িয়ে আনা হচ্ছে। তিনিও শিল্পী। আগামী বৃহস্পতিবার সার্বিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নেমাররা যখন মাঠে নামবেন, গান গাইবেন জুনিনহো। বিশ্বকাপে নেমারদের জন্য তিনি যে বিশেষ গান রচনা করেছেন, তাঁর অর্থ, ‘‘আমি ইতিহাস তৈরি করতে পারি। সাফল্যের শিখরে উঠতে সময় হয়তো লাগে। কিন্তু এক দিন সেই লক্ষ্য পূরণ হবেই।’’ ২০০২ সালের পরিবেশ তৈরিই শুধু নয়, কাতারে ফুটবলারদের শৈশবের স্মৃতিও ফিরিয়ে দেওয়ার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ব্রাজিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দোহা শহরের উত্তরে সমুদ্রের তীরের রিসর্টে শনিবার রাতে পা দিয়েই চমকে গিয়েছিলেন ফুটবলাররা। প্রতিটি ফুটবলারের ঘরের দেওয়ালে ঝোলানো রয়েছে তাঁদের শৈশবের নানা ছবি। হাতে বল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন খুদে নেমার। বিছানার সামনে টেবলে কাচের মধ্যে রাখা একটি ট্রফি। লেখা রয়েছে নেমার, ব্রাজিল। একই রকম ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে বাকি ফুটবলারদের ঘরগুলিও। শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা দিয়েই উন্মাদনার আঁচ পেয়েছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা। অত রাতেও কয়েকশো সমর্থক সবুজ-হলুদ পতাকা, ফুটবলারদের ছবি নিয়ে হাজির ছিলেন। ব্রাজিলে থেকে বিশ্বকাপ দেখতে আসা এক সমর্থক বলছিলেন, ‘‘বিশ্বের সব দেশেই আমাদের দেশের ফুটবলারদের নিয়ে মানুষের একই রকম আবেগ রয়েছে। কাতারেও তাই। অনেক সময় প্রত্যাশার এই চাপ ফুটবলারদের সমস্যায় ফেলে দেয়। তাই ওদের চাপমুক্ত রাখতে নানা রকম পরিকল্পনা নিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।’’
সেটা কী রকম? তিনি বললেন, ‘‘রিসর্টে প্রত্যেক ফুটবলারের ঘর তাঁদের শৈশবের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। যা দেখে ফুটবলারদের মন ভাল হয়ে যাবে। এ ছাড়াও জ়েকার ভাইপো থাকছেন দলের সঙ্গে। ওঁর গান ইতিমধ্যেই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নেমারদের মধ্যে।’’ যোগ করলেন, ‘‘ব্রাজিল শেষ বার বিশ্বকাপ জিতেছিল কুড়ি বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ব্রাজিলীয়দের কাছে এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হয় না। ২০০২ সালে এই এশিয়া মহাদেশে আমরা বিশ্বকাপ জিতেছিলাম যে আবহে, কাতারেও একই পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে।’’
সাম্বার সুরেই ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বিভোর নেমাররা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy