যুবভারতীতে মঙ্গলবার মোহনবাগানের জার্সি পরে একমনে ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন দেখছিল ছোট্ট অম্বরীশ হাজরা। মাঠ ছেড়ে আনোয়ার আলি, দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসরা বেরোতেই অটোগ্রাফ নেওয়ার খাতা হাতে সে এগিয়ে গেল।
মোহনবাগান সমর্থক ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের অটোগ্রাফ নিতে চাইছে? একটু অবাকই হয়ে গিয়েছিলেন আনোয়াররা। কিন্তু ছোট্ট অম্বরীশের দাবি, ‘‘আসলে আমি ইস্টবেঙ্গলেরই ভক্ত। কিন্তু বাড়ির সকলে মোহনবাগানের সমর্থক। আমাকে জোর করে সবুজ-মেরুন জার্সি পরানো হয়েছে।’’ অম্বরীশের কথা শুনে হেসে ফেললেন আনোয়ার ও দিমিত্রিয়স। অটোগ্রাফ তো দিলেনই, তুললেন ছবিও। কোচ অস্কার ব্রুসোও নিরাশ করলেন না। অনেক দিন পরে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে ফুরফুরে আবহ।
মহমেডান স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল জনতার বিক্ষোভে। ৩-১ গোলে মশালবাহিনীর জয়ের পরে ছবিটা আমুল বদলে গিয়েছে। ফুটবলারদের গাড়ি ঘিরে ধরে ক্ষোভ উগরে দেওয়া সমর্থকরা মঙ্গলবার সাউল ক্রেসপোদের সঙ্গে ছবি তুললেন, জয়ধ্বনি দিলেন, শুভেচ্ছা জানালেন আগামী শনিবার নয়াদিল্লিতে পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্য। লাল-হলুদ জনতার বদলে যাওয়া রূপ দেখে হাসতে হাসতে অস্কার বলছিলেন, ‘‘জীবন এ রকমই। সমর্থকদের আবেগকে আমি সম্মান করি।’’
মহমেডানকে হারিয়ে ২০ ম্যাচ থেকে ২১ পয়েন্ট অর্জন করে একাদশ স্থানেই রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অঙ্কের বিচারে প্লে-অফের আশা এখনও শেষ হয়ে যায়নি মশালবাহিনীর। বাকি চারটি ম্যাচে শুধু জিতলেই হবে না ইস্টবেঙ্গলকে, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির দিকেও।
যুবভারতীতে প্রথম পর্বের দ্বৈরথে পঞ্জাবে বিরুদ্ধে ৩৯ মিনিটের মধ্যে ০-২ পিছিয়ে পড়ে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ৪-২ জিতেছিলেন পি ভি বিষ্ণু-রা। শনিবারও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী অস্কার। তবে এই ম্যাচেও চোটের কারণে রিচার্ড সেলিসের খেলার সম্ভাবনা নেই। তবে ফিরছেন জিকসন সিংহ। ইস্টবেঙ্গলের স্পেনীয় কোচ বলছিলেন, ‘‘রিচার্ডের চোট সারেনি। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ওকে পাওয়া যাবে না। স্বস্তির খবর, জিকসন ফিরছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)