মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে অভিষেকের মরসুমেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতেছেন রবসন রবিনহো। অথচ বাড়তি কোনও উচ্ছ্বাস নেই ব্রাজিল তারকার। তাঁর পাখির চোখ এ বার সুপার কাপে।
শিল্ড জয়ের পরে ফুটবলার দু’দিন বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ হোসে ফ্রান্সিসকো মলিনা। মঙ্গলবার থেকে সুপার কাপের প্রস্তুতি শুরু করলেন তিনি। গোয়া রওনা হওয়ার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার সন্ধেয় যুবভারতীতে প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের অনুশীলনের পরে রবসন বললেন, ‘‘আইএফএ শিল্ড জয়ের অনুভূতি অসাধারণ। এই ট্রফি জেতাটা অত্যন্ত জরুরি ছিল ক্লাব এবং আমার নিজের জন্য। কারণ, টানা তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ আমরা অনেক দিন পরে পেয়েছিলাম। তাই সুপার কাপের প্রস্তুতির জন্য আইএফএ শিল্ডে খেলা অত্যন্ত জরুরি ছিল আমাদের জন্য। এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং পরবর্তী ম্যাচগুলিতে ভাল খেলতে সাহায্য করবে।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘এই মরসুমে আরও ট্রফি জেতার জন্য লড়াই করতে হবে।’’
আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে প্রথম একাদশে ছিলেন না রবসন। ৬০ মিনিটে নেমেছিলেন জেসন কামিংসের পরিবর্তে। তাঁর অসাধারণ ফ্রি-কিক থেকে নেওয়া মেহতাব সিংহের হেড কোনও মতে কর্নার করে বিপন্মুক্ত করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক প্রভসুখন সিংহ গিল। টাইব্রেকারে গোল করেছিলেন রবসন। তবে এখনও নিজের খেলায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন ব্রাজিল তারকা। বললেন, ‘‘প্রায় পাঁচ মাস আমি ম্যাচ খেলিনি। তবে আইএফএ শিল্ডের তিনটি ম্যাচ খেলার পরে আমি সম্পূর্ণ ফিট।’’
সুপার কাপে একই দিনে নামছে কলকাতার দুই প্রধান। ২৫ অক্টোবর মোহনবাগান খেলবে বিদেশিহীন চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ ডেম্পো। আর ৩১ অক্টোবর বাঙালির আবেগের ডার্বি। আইএফএ শিল্ড ফাইনালের পুনরাবৃত্তি কি গোয়াতেও দেখা যাবে? সতর্ক রবসন বললেন, ‘‘কঠিন লড়াই হলেও আমাদের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।’’ কেন? মোহনবাগান তারকার ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের দল দুর্দান্ত। ম্যাচ জেতার জন্য ক্লাবও আমাদের সব রকম ভাবে সাহায্য করে।’’ যোগ করলেন, ‘‘এই কারণেই তো মোহনবাগানে যোগ দিয়েছি। একবারও মনে হয়নি, আমি এই ক্লাবে নতুন। প্রথম দিন থেকে যে ভাবে সকলে সাহায্য করছে, মনে হচ্ছে যেন এক বছর ধরে মোহনবাগানে খেলছি।’’
অস্কার ব্রুসোর কোচিংয়ে মিগুয়েল ফিগুয়েরার সঙ্গে জুটি বেঁধে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন রবসন। কিন্তু এখন তিনি মোহনবাগানে। ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার। প্রাক্তন গুরুর সঙ্গে কথা হয়? রবসন বললেন, ‘‘অস্কার আমার অত্যন্ত প্রিয় কোচ। ওঁর কোচিংয়ে বাংলাদেশে চার বছর খেলেছি। আমাকেও খুব ভালবাসেন অস্কার। আইএফএ শিল্ড ফাইনালে ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। আমাকে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন অস্কার।’’
সদ্য সমাপ্ত আইএফএ শিল্ডে একসঙ্গে চার জনের বিদেশি খেলানোর নিয়ম ছিল না। সুপার কাপে অবশ্য দলগুলি ছয় জন বিদেশি খেলাতে পারে। ফলে প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই উজ্জ্বল রবসনের। তাই নিজেকে প্রমাণ করতে অনুশীলনে নিংড়ে দিচ্ছেন। রবসনের কথায়, ‘‘অনুশীলনে প্রত্যেক দিন নিজেকে উন্নত করতে চেষ্টা করছি। আমার লক্ষ্য যখনই সুযোগ পাব, গোল করে এবং করিয়ে দলকে সাহায্য করা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)