প্রস্তুতি: অনুশীলনের ফাঁকে স্টেনম্যানের সঙ্গে গ্র্যান্ট। টুইটার।
সপ্তম আইএসএলের পয়েন্ট টেবলে চতুর্থ স্থানে হায়দরাবাদ এফসি। ১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট আরিদানে সান্তানা-দের। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে রয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। আজ, শুক্রবার দ্বিতীয় পর্বের দ্বৈরথের আগে দুই শিবিরেই প্রবল উদ্বেগ।
চতুর্থ স্থানে থাকলেও হায়দরাবাদের প্লে-অফে খেলা নির্ভর করছে অনেক অঙ্কের উপরে। একই পরিস্থিতি লাল-হলুদেও। চারটি ম্যাচই এখন ফাইনাল ব্রাইট এনোবাখারে, অ্যান্টনি পিলকিংটনদের। পয়েন্ট নষ্ট করা মানেই প্লে-অফে খেলার স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হবে আরব সাগরের জলে। কিন্তু সমস্যা তো একটা নয়, একাধিক।
প্রধান কোচ রবি ফাওলার নির্বাসিত হয়ে রয়েছেন। পাঁচ ফুটবলার তিনটি করে হলুদ দেখেছেন। যার মধ্যে চার জনই বিদেশি। জা মাগোমা, ড্যানি ফক্স, স্কট নেভিল ও অ্যারন জোসুয়া আমাদি। তিনটি হলুদ কার্ড দেখে বসে আছেন দুরন্ত ফর্মে থাকা নারায়ণ দাসও। শুক্রবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে এই পাঁচ ফুটবলারের কেউ ফের হলুদ কার্ড দেখলেই আর ১৯ ফেব্রুয়ারি এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ফিরতি ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। রণকৌশল চূড়ান্ত করার ফাঁকে রবি ফাওলার, অ্যান্টনি গ্র্যান্ট বার বার মাগোমা-দের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হায়দরাবাদ ম্যাচের পরেও তিনটি খেলা বাকি থাকবে। প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জন করার জন্য সব ম্যাচেই জিততে হবে লাল-হলুদকে। তাই ন্যূনতম ঝুঁকি নেওয়ারও অবকাশ নেই। শুধু তাই নয়। পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে আগের ম্যাচে প্রথম একাদশে ছিলেন মাগোমা, ফক্স ও নারায়ণ। পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন অ্যারন। তাই ইচ্ছে থাকলেও তিনটি করে হলুদ কার্ড দেখা ফুটবলারদের শুক্রবার বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভাবতে পারছেন না ফাওলার ও গ্র্যান্ট। এখানেই শেষ নয়, মিডফিল্ডার মিলন সিংহ এর মধ্যে পেটের সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলুদের সহকারী কোচ গ্র্যান্ট বললেন, ‘‘তিনটি করে হলুদ কার্ড দেখে রয়েছে বলেই কোনও ফুটবলারকে বসানোর পরিকল্পনা নেই। ম্যাচে কী হবে তা কেউ জানে না। ফের যদি কেউ হলুদ কার্ড দেখে, আশা করব তা যেন ঠিক ট্যাকলের জন্যই হয়। নির্বোধের মতো ভুল যেন কেউ না করে।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘ফুটবলে কার্ড সমস্যা স্বাভাবিক। কেউ যদি এই কারণে খেলতে না পারে, অন্য কারও সামনে সুযোগ থাকবে নিজেকে প্রমাণ করার। আমরা সেই মানসিকতা নিয়েই দলটা তৈরি করেছি।’’
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বের সাক্ষাতে ২৬ মিনিটে মাগোমার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ। দ্বিতীয়ার্ধে সান্তানা-দের আক্রমণের ঝড়ের সামনে কার্যত আত্মসমর্পণ করেছিলেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারেরা। ১৩ মিনিটে তিনটি গোল খেয়ে ১-৩ পিছিয়ে পড়েছিল লাল-হলুদ। ৮১ মিনিটে ফের মাগোমা গোল করে ব্যবধান কমালেও হার বাঁচাতে পারেননি।
এ বার লড়াই আরও কঠিন। প্লে-অফে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য শুরু থেকেই মরিয়া হয়ে খেলবেন নিজামের শহরের ক্লাবের ফুটবলারেরা। সদ্য হায়দরাবাদের সঙ্গে আরও দু’বছরের চুক্তিতে সই করা কোচ ম্যানুয়েল মার্কোয়েজ় বলেছেন, ‘‘এসসি ইস্টবেঙ্গল দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কঠিন ম্যাচ। তবে আমরা জয়ের জন্য মরিয়া হয়েই ঝাঁপাব। কারণ, এই ম্যাচটা জিতলে লিগ টেবলে প্রথম চারটি দলের মধ্যে থাকতে পারব।’’
প্রথম পর্বে ২-৩ হারের হতাশা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি গ্র্যান্ট। বললেন, ‘‘আগের বার ওরা প্রথম দু’টি গোল করেছিল কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে। আমরা খুব খারাপ খেলেছিলাম।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘হায়দরাবাদের পয়েন্ট আমাদের চেয়ে বেশি। ওদের দলে একঝাঁক তরুণ ফুটবলারও রয়েছে। তবে
আমরাও তৈরি।’’
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে খুব একটা পরিবর্তনেরও পক্ষপাতী নন গ্র্যান্ট। জামশেদপুর ম্যাচে অভিষেক ঘটানো সার্থক গলুই ও সৌরভ দাসের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তিনি বললেন, ‘‘প্রথম ম্যাচে ওরা দু’জনেই অসাধারণ খেলেছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে সার্থক ও সৌরভকে।’’
প্লে-অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য পয়েন্ট টেবলে উন্নতি করতে হবে লাল-হলুদকেও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy