Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Football

বেটিং-কাণ্ডে দোষীদের কড়া শাস্তি চাইছেন প্রাক্তনরা

টালিগঞ্জের গোলরক্ষক শুভম রায়কে দেওয়া বেটিংয়ের প্রস্তাবে ময়দান বিস্মিত। দোষীদের কড়া শাস্তি চাইছেন প্রাক্তনরা।

কলকাতা ময়দানে বেটিংয়ের কালো ছায়া। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

কলকাতা ময়দানে বেটিংয়ের কালো ছায়া। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ১৭:৫০
Share: Save:

কলকাতা ময়দানে বেটিং-চক্রের রমরমার খবর সামনে আসায় চমকে উঠেছে ফুটবলমহল। সামনেই বড় ম্যাচ। তার আগে কলকাতা ফুটবল লিগের ভাবমূর্তিই এতে নষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি দোষীদের কঠোর শাস্তিও চাইছেন প্রাক্তনরা।

প্রসঙ্গত, টালিগঞ্জ অগ্রগামীর গোলরক্ষক শুভম রায় অভিযোগ করেছেন যে, গোল খাওয়ার জন্য তাঁকে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আর সেই গোলও খেতে হত একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে। তাঁকে বলা হয়, আরও অনেক ফুটবলার এটা করে থাকেন। এই তালিকায় দীপক মণ্ডল, রাকেশ মাসির মতো পরিচিত ফুটবলারদের নাম রয়েছে বলেও জানানো হয় শুভমকে। দীপক এখন খেলেন এফসিআই ক্লাবে। আর রাকেশ টালিগঞ্জরই ফুটবলার, শুভমের মতোই। এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় হইচই পড়ে যায় ময়দানে

প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিত্ সেনগুপ্ত এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বললেন, “আমি খিদিরপুর ক্লাবেও যখন খেলেছি, তখন কিন্তু আমার কাছে গটআপ বা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কোনও অফার আসেনি। যখন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানে খেলতাম, তখন এই ধরনের কথা কেউ কেউ বলে বেড়াত। কিন্তু আমার দল কখনও আগে থাকতে জিতে যাচ্ছে, এমন অবস্থারও মুখোমুখি হইনি। তবে একেবারে যে হত না, তা হয়তো নয়। সবাই যখন বলত, তখন কিছু নিশ্চয় হত। কিন্তু আমার তা জানা নেই। এখনকার একটা খবরের প্রেক্ষিতে এই প্রসঙ্গ আসছে। আমাদের সময়ে যখন গড়াপেটার কথা শুনতাম, বা, অন্যান্য সময়ে যে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা শুনতাম, তাতে অফিসিয়ালরা ফিক্সিংয়ের ব্যাপারগুলো চালাতেন। কিন্তু এই ঘটনায় দলের নিয়মিত ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে কথা বলে ম্যাচ ফিক্স করছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যে বা যারা দোষী, তাদের চিহ্নিত করা মুশকিল। তবু এর জন্য চরম শাস্তি দেওয়া উচিত।”

আরও পড়ুন: ফুটবলে অভিষেকের আগে নার্ভাস বোল্ট, উন্মাদনা অস্ট্রেলিয়ায়​

আরও পড়ুন: এশিয়ান গেমসে দুটো রুপো জিতেও কেরিয়ার নিয়ে আশঙ্কায় দ্যুতি​

আইএফএ-তে এই ব্যাপারে অভিযোগ জমা পড়লেও কতটা কী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সুরজিতের। তিনি বললেন, “এগুলোর তো লিখিত প্রমাণ থাকে না। তাই কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা সহজ হবে না। তবু ঠিকমতো তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে।” দীপক ও রাকেশের নাম জড়িয়ে পড়াতেই তিনি আরও ব্যথিত। বললেন, “দু’জনেই অত্যন্ত পরিচিত নাম। আর সেটাই তো দুঃখের। পরিচিত ফুটবলাররা জড়িয়ে পড়ছে টাকাপয়সার লেনদেনে, ফিক্সিংয়ে, এটাই কষ্টের। যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তবে অত্যন্ত কড়া শাস্তি দেওয়া হোক।

আর এক প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “দোষীদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। কারণ, এর প্রমাণ থাকে না। যার নামে অভিযোগ উঠছে, সে অস্বীকার করবে সহজে। বলবে, বাজে কথা বলা হচ্ছে। যদি কেউ এর সঙ্গে সত্যি জড়িয়ে থাকে, তবে তাদের কড়া শাস্তি দিতে হবে। আবার যাঁকে এই প্রস্তাব দেওয়া হল, তাঁকেও তো বাড়তি চাপে ফেলে দেওয়া হল। সে এ বার ৭৫ মিনিট পর দারুণ কোন গোলও খেয়ে যায়, তখনও বলা হবে ওই কারণেই খেয়েছে।” নিজেদের খেলোয়াড়ি জীবনে এমন কোনও ঘটনার কথা শোনেননি বলে জানালেন তিনি। ভাস্কর বললেন, “আমাদের সময়ে এমন কোনও ঘটনার কথা শুনিনি। এখন নিত্য নতুন ঘটনার কথা শুনতে পাচ্ছি।” প্রাক্তন ফুটবলার শিশির ঘোষ পুরো ঘটনায় বিস্মিত। বললেন, “পুরোটা জানি না। না জেনে কী বলব! তবে সত্যি যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তবে কড়া শাস্তি চাইছি দোষীদের।”

প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার গোটা ঘটনায় অবাক। কতটা সত্যি তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁর। বললেন, "মনে হয় না এগুলো সব সত্যি। মানে, আমার তো বিশ্বাস হয় না। এই আমাদের সময়েও ১৯৭৮ সালে বাটাকে পাঁচ গোলে হারানোর পর এমন কথা কানে এসেছিল। লেখা হল, পাঁচটি প্লেয়ার গটআপ ছিল। মোহনবাগানের তখন কী দল। আমি ছাড়াও সুব্রত ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা। বাটাকে পাঁচ গোল দিতে পারব না? পরে আবার লেখা হল, না, এটা সত্যি নয়! আমরা কিন্তু খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হয় খেলোয়াড়রা অত নীচে নামে না।"

আরও পড়ুন: বড় পরমাণু হামলার জন্য আদৌ তৈরি নয় আমেরিকা, রিপোর্ট বিজ্ঞানীদের

আরও পড়ুন: দীপিকা, আলিয়া, বিরাটদের এই ট্যাটুগুলির অর্থ জানেন?

(ক্রিকেটের খবর,ফুটবলের খবর, টেনিসের খবর, হকির খবর - খেলার খবরের সেরা ঠিকানা আমাদের খেলা বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE