Advertisement
২১ মার্চ ২০২৩
Sports News

বিশ্বকাপ শেষে ঝুলন-মিতালিদের রিপোর্ট কার্ডে কী থাকল?

বিশ্বকাপ শেষ। অনেক লড়াই করেও আসেনি ট্রফি। তা বলে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের লড়াইকে স্যালুট করা ছাড়া উপায় নেই। কেউ বল হাতে কেউ ব্যাট হাতে লড়ে গিয়েছেন। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় দলের রিপোর্ট কার্ড।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ১৯:১২
Share: Save:

একটা লম্বা সফর। বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে যাওয়া। আসলে অনেকটা পথ পেড়িয়েও যখন শেষ লক্ষ্যে পৌঁছনো যায় না তখন হতাশা গ্রাস করে। লর্ডসের মাটিতে মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষে ভারতীয় শিবিরের ছবিটা অনেকটা ছিল এরকমই। কিন্তু সত্যিই কি সাফল্য আসেনি? সত্যিই কি ব্যর্থ মিতালি, ঝুলনরা? একদমই না। বরং ফাইনালে হেরে গেলেও দেশ জুড়ে শুভেচ্ছার ঢল নেমেছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য। সে সচিন হোক বা অমিতাভ বচ্চন।

Advertisement

শুরু থেকে ফাইনাল, লড়াইটা কখনও ছাড়েননি হরমনপ্রীতরা। কখনও বলে আবার কখনও ব্যাটে রুখে দাঁড়িয়েছেন কেউ না কেউ। জয় এসেছে পর পর। এর পর হারেরও মুখ দেখতে হয়েছে। সেখান থেকে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে দল। ২০০৫ এর পর আবার ২০১৭। একইভাবে ফাইনালে হার। কিন্তু তাতে একটুও কৃতিত্ব কমেনি ভারতের মেয়েদের।

আরও খবর: ঢোক গিলল পঞ্জাব পুলিশ, ডিএসপি করতে চাইছে হরমনপ্রীতকে

পুণম রাউত: ডান হাতি এই ওপেনার বিশ্বকাপে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার। ৯ ম্যাচে পুণমের মোট রান ৩৮১। লিগ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি এলেও জিততে পারেনি দল। ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান তাঁরই। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে দুটো ম্যাচেই হারতে হয়েছে ভারতকে।

Advertisement

মিতালি রাজ: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের মুখ তিনি। তাঁর অধিনায়কত্বেই ভারতের ফাইনালে পৌঁছনো। শুধু যে দলকে পরিচালনা করেছেন এমনটা নয়, ব্যাট হাতেও দারুণ সফল তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিও টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাঁরই। ভারতের হয়ে তিনিই শীর্ষে। করেছেন ৪০৯ রান। তাঁর মূল শক্তি তাঁর ধারাবাহিকতা। এই বিশ্বকাপের আসরেই তিনি ৬ হাজার রান করে সর্বোচ্চ রান লিখে নিয়েছেন নিজের নামের পাশে।

স্মৃতি মন্ধনা: বাঁ হাতি এই ওপেনার বিশ্বকাপের শুরুতেই নজর কেড়ে নিয়েছিলেন সবার। প্রথম দুটো ম্যাচে ভারতের জয়ের পিছনে ছিল তাঁরই সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি। মন্ধনা সব সময়ই বিখ্যাত তাঁর বিগ হিটিংয়ের জন্য। কিন্তু প্রথম দু’ম্যাচের পর আর সেই মন্ধনাকে পাওয়া যায়নি। হঠাৎ করেই ফর্ম হারিয়ে ফেলেন তিনি। শেষ ৭টি ম্যাচে তাঁর মোট রান ৩৬।

হরমনপ্রীত কৌর: এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি একটি নাম। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুরন্ত ১৭১ রানের ইনিংস খেলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তিনি। তাঁর ব্যাটেই বাজিমাত করেছিল ভারত। এর সঙ্গে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে দুটো হাফ সেঞ্চুরি। তার মধ্যে একটি ফাইনালে। শুধু ব্যাট হাতেই নয়, বল হাতেও পিছিয়ে নেই তিনি। বিশ্বকাপে পাঁচ উইকেটও নিয়েছেন হরমনপ্রীত।

দীপ্তি শর্মা: ১৯ বছরের দীপ্তি হল মিতালির দলের সব থেকে ইউটিলিটি ক্রিকেটার। বল হাতে তাঁর অফ-স্পিন যেমন দলের ভরসা ঠিক তেমনই মিডল অর্ডারেও ভারতীয় দলে তিনি একটি নাম। ভারতের হয়ে এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ উইকেট রয়েছে তাঁরই দখলে। সঙ্গে রয়েছে ২১৯ রান। এই তালিকায় রয়েছে দুটো হাফ সেঞ্চুরি। মোট ১২ উইকেট।

ভেদা কৃষ্ণমূর্তি: ভেদা কিন্তু পরিচিত তাঁর দ্রুত রান নিতে পারার ক্ষমতার জন্য। মিডল অর্ডারে তাঁর এই দ্রুত রান নিতে পারার ক্ষমতাই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছিল ভারতকে। ভারতের জন্য ছিল মাস্ট উইন ম্যাচ। সেই ম্যাচে ভেদার ৪৫ বলে ৭০ রানের দুরন্ত ইনিংসই এই জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে তিনি তেমনভাবে কিছু করতে পারেননি।

ঝুলন গোস্বামী: তিনিই সেরা বোলার। ভারতীয় বোলিংয়ের পথ প্রদর্শকও। এই বিশ্বকাপে ঝুলনের ঝুলিতে এসেছে ১০ উইকেট। ফাইনালেও তিনি নিয়েছেন ৩ উইকেট। হ্যাটট্রিকের কাছেও পৌঁছে গিয়েছিলেন। ১০ ওভার বল করে দিয়েছিলেন মাত্র ২৩ রান। তিনটি মেডেন। ৩৪ বছরের ঝুলনের হয়ত এটাই শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েছে ভারতীয় বোলিং।

পুণম যাদব: পুণম যাদব মানেই গুগলি আর লেগ ব্রেক। বিশ্বকাপে তাঁর ঝুলিতে এসেছে ১১টি উইকেট। এগিয়ে রয়েছেন ঝুলনের থেকেও। শেষ করেছেন এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারতীয় বোলার হিসেবে। ফাইনালেও বল হাতে সফল তিনি। ১০ ওভার বল করে ২ উইকেট নিয়ে ৩৬ রান দিয়েছিলেন এই বোলার। যদিও তাঁর বোলিং লেনথ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তিনি তা অবশ্যই কাটিয়ে উঠবেন।

একতা বিস্ত: বাঁ হাতি এই স্পিনারের বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাজিমাত করেছিল ভারত। ওই ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। খেলেছিলেন মাত্র ছ’টি ম্যাচেই। নামের পাশে রয়েছে ৯ উইকেট। লিগ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারের পর তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর অসাধারণ বোলিং মনে রাখবে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

শিখা পাণ্ড্য: ঝুলনের সঙ্গে ভারতের বোলিং শুরু করেন এই পেসার। ৭ ম্যাচে এই বিশ্বকাপের তিনি নিয়েছেন ৮ উইকেট। বাকিদের তুলনায় কিছুটা পিছিয়েই রয়েছেন। কিন্তু বল হাতে বজায় রেখেছিলেন ধারাবাহিকতা। বল ভবিষ্যতে তিনিই হতে চলেছেন ভারতীয় দলে ঝুলনের পরিবর্ত। ৫৩ রানই এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ফাইনালেও তেমনভাবে দলের কাছে লাগেননি।

রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়: একতা বিস্তের জায়গায় তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল। আর সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছিলেন রাজেশ্বরী। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভার্চুয়াল কোয়ার্ফাটার ইনালে পাঁচ উইকেট নিয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তাঁকে দলে নেওয়াটা ভুল ছিল না। আর তিনি বিশ্বকাপ শেষ করলেন ৩ ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে। কিন্তু সেমিফাইনাল ও ফাইনালে সেই ঝলক আর দেখা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.