Advertisement
১৭ মে ২০২৪
ফেডারেশন সভাপতির ২০২২ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন

বিশ্বকাপ কি সাফ ফুটবল কটাক্ষ ফুটবলমহলের

ভারত ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপে অংশ নেবে। অন্তত ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল এমন স্বপ্নই দেখছেন! ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের দায়িত্বে সেখানকার যে সুপ্রিম কমিটি রয়েছে, সেখানে গিয়ে এ কথাই বলেছেন সর্বভারতীয় ফুটবল প্রধান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৩
Share: Save:

ভারত ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপে অংশ নেবে। অন্তত ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল এমন স্বপ্নই দেখছেন!

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের দায়িত্বে সেখানকার যে সুপ্রিম কমিটি রয়েছে, সেখানে গিয়ে এ কথাই বলেছেন সর্বভারতীয় ফুটবল প্রধান।

প্রফুল্ল দাবি করেছেন, ‘‘আমরা ২০২২ বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে ভীষণ ভাবে আশাবাদী। এর জন্য আমাদের যা যা করণীয় সেটাই করব। সেটা লক্ষ্য করেই আমাদের এগোতে হবে।’’

ভারতীয় ফুটবলের প্রাক্তন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রব বান কয়েক বছর আগে ‘লক্ষ্য ২০২২’ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন। হয়তো সেটার উপর নির্ভর করে প্রফুল্ল পটেল এহেন স্বপ্ন দেখছেন! কিন্তু সেটা বাস্তব হওয়া কি আদৌ সম্ভব?

দেশের প্রাক্তন সফল ফুটবলার ও কোচে‌দের কেউই ফেডারেশন সভাপতির কথায় সায় দিচ্ছেন না। বরং তাঁর কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করছেন প্রত্যেকে।

ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়: এমন অবাস্তব কথাবার্তার কী অর্থ জানি না। ভারত তো আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হোক। ইরাক, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, চিন, জাপান, কোরিয়া— এ সব দেশের সঙ্গে আগে তো জিতুক। তবে তো বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার কথা আসবে। হয়তো প্রফুল্লবাবু ফুটবলটা আমার চেয়ে ভাল বোঝেন। তাই এত বড় আশার কথা শুনিয়েছে। ভারত যদি ২০২২ বিশ্বকাপ খেলে, আমি খুব খুশি হব। তবে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার স্বপ্নটা বাড়াবাড়িই।

সুভাষ ভৌমিক: প্রফুল্লবাবুর মুখে ফুল-চন্দন পড়ুক। এ রকমটা হলে আমি নিজে ফুল-মালা নিয়ে গিয়ে ওনাকে প্রণাম করে আসব। কিন্তু বি‌ষয়টা হল, প্রফুল্লবাবু একজন রাজনীতিবিদ। রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনেক কথাই তো ওনাদের বলতে হয়। অগ্র-পশ্চাৎ না ভেবে ওনার কিছু বলা মানেই যে, সেই রায়ে আমাকে রা মেলাতে হবে, তার কোনও মানে নেই। নিজেকে হাসির খোরাক করতে পারছি না আমি।

সুব্রত ভট্টাচার্য: উনি অলীক স্বপ্ন দেখছেন। যার কোনও ভিত্তি নেই। আসলে ফুটবল সম্পর্কে ওনার ধ্যানধারণাই নেই। তাই এ রকম একটা কথা বলে দিয়েছেন। একমাত্র বিশ্বকাপের আয়োজন করলে তবেই ভারত খেলতে পারে। যেমন ২০১৭ যুব বিশ্বকাপে খেলবে। সিনিয়র বিশ্বকাপ খেলতে হলে ভারতীয় ফুটবলের খোলনলচেই পুরো পাল্টে ফেলতে হবে। এটা সাফ ফুটবল নয়। সত্তর দশকে সাফ গেমস, সাফ ফুটবল থাকলে সুধীর কর্মকার, সুভাষ ভৌমিকরা সোনার দোকান খুলে ফেলতে পারত। এত সোনার পদক জিতত! আমাদের দেশে ফুটবলে অত্যাধুনিক মানের পরিকাঠামো না আনতে পারলে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখাটা বোকামি ছা়ড়া কিছুই নয়।

ডেরেক পেরেরা: আমরা বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডেই তো রীতিমতো খোঁড়াচ্ছি। সেখানে মাত্র ছয় বছর পর বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখাটা একেবারেই অবাস্তব। এর জন্য বিশ্বমানের ফুটবলার চাই। পুরো নতুন একটা টিম তৈরি করতে হবে। এখন থেকে সেই কাজ যদি শুরুও করা যায়, তবে তার রেজাল্ট পেতেও অন্তত পনেরো-কুড়ি বছর লেগে যাবে। ভারতীয় দলকে আরও অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে হবে। পুরো সিস্টেমেই বদল চাই। না হলে বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের গোড়াতেই হোঁচট খেয়ে বারবার ফিরে আসতে হবে।

এ দিকে, প্রফুল্ল পটেল আবার ২০১৯ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের জন্যও বিড করতে চাইছেন। ইতিমধ্যে ভারত ২০১৭ অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে। প্রফুল্ল বলেছেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সুবাদেই আমরা ২০১৯ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের জন্যও বিড করতে চাই। ফিফার কাছে আবেদন করব। এবং তাতে সফল হতে পারলে আমাদের গ্রাসরুট লেভেল থেকে ফুটবলার তুলে আনার উদ্যোগও সাফল্য পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

world cup football championship IFA 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE