Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিক বল থেকে শিখেছি সুইং-সিম

জাতীয় দলে ব্রাত্য হতে হতেও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। ব্রাত্য হতে হতেও জুনের ইংল্যান্ডে আসন্ন বিশ্বকাপে নিশ্চিত। টেস্ট দলের অন্যতম সেরা বোলিং অস্ত্র। কী করে তিনি রপ্ত করলেন বলের সেলাই ব্যবহারের কঠিন শিল্প? টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেট সংসার ঠিক কী রকম? ফিটনেস টেস্টে ব্যর্থ হয়ে কী ভাবেই বা হয়ে উঠলেন এমন ফিট? অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে দেশে ফিরে আনন্দবাজারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নানা রহস্য ফাঁস করলেন মহম্মদ শামি। আজ শেষ পর্ব। টেস্ট দলের অন্যতম সেরা বোলিং অস্ত্র। কী করে তিনি রপ্ত করলেন বলের সেলাই ব্যবহারের কঠিন শিল্প? টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেট সংসার ঠিক কী রকম? ফিটনেস টেস্টে ব্যর্থ হয়ে কী ভাবেই বা হয়ে উঠলেন এমন ফিট?

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৪
নায়ক: অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে আগুন ছুটিেয়ছেন শামি। ফাইল চিত্র

নায়ক: অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে আগুন ছুটিেয়ছেন শামি। ফাইল চিত্র

প্র: মহম্মদ শামির মন্ত্র তা হলে কী?

শামি: বিশ্বাস রাখো কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে যেয়ো না। যখন তোমার ভাল দিন যাচ্ছে, ধৈর্য রাখো। যখন খারাপ সময় চলছে, মনঃসংযোগ ধরে রাখো। আমি দুটো জিনিস সব সময় খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। আমার কেমন সময় যাচ্ছে আর আমি কেমন মনঃসংযোগ করছি।

প্র: ওয়ান ডে থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলেন। সেখানেও অসাধারণ প্রত্যাবর্তন। বিশ্বকাপের টিকিট কার্যত নিশ্চিত। কতটা খুশি আপনি?

শামি: আমি জানি না, নিশ্চিত কি না। সেটা যাঁরা দল নির্বাচন করেন, তাঁরাই ঠিক করবেন। তবে এক জন ক্রিকেটারের জীবনে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় স্বপ্ন আর কী হতে পারে! ওয়ান ডে ক্রিকেটে ফিরে আসতে পেরে আমার খুব আনন্দ তো হচ্ছেই, কারণ গত দু’বছর ধরে ওয়ান ডে-তে ম্যাচই প্রায় খেলতে পারছিলাম না। ২০১৫ বিশ্বকাপে আমার চোট লাগল। তার পরেও চোটের জন্য ভুগলাম। যদি ভুল না করি, অস্ট্রেলিয়া-নিউজ়িল্যান্ড সফরের আগে চারটি কি পাঁচটি ওয়ান ডে ম্যাচই হয়তো খেলেছিলাম।

প্র: যখন ওয়ান ডে খেলছিলেন না, কী চলত মনের মধ্যে?

শামি: আমার একটাই ভয় ছিল। শুধু একটা ফর্ম্যাটের বোলার, এই তকমাটা যেন গায়ে সেঁটে না যায়। সেটা ভেবেই আতঙ্কিত হতাম। শুধু টেস্ট বোলার হয়ে গেলাম না তো? আমি বিশ্বাস করি, সব ধরনের ক্রিকেটে সফল হওয়ার মতো স্কিল আমার আছে। তা হলে কেন টেস্ট, ওয়ান ডে দু’টোই খেলতে পারব না? ভাবতাম, সুযোগ পেলেই আমাকে প্রমাণ করতে যে, দুই ধরনের ক্রিকেটেই সফল হতে পারি। সেটা করতে পেরে আমি খুশি। আমার মনে হয়েছে, দু’ধরনের ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। মানসিক গঠনকে ফর্ম্যাট অনুযায়ী ‘সেট’ করে নিতে হবে।

খেলুন শামিকে নিয়ে কুইজ

প্র: সিম অর্থাৎ বলের সেলাইকে যে ভাবে আপনি ব্যবহার করেন, তা দেখে সকলে মুগ্ধ। এমন সুন্দর বলের সিম ব্যবহার কী ভাবে শিখলেন? এর পিছনে রহস্য কী?

শামি: সিম পজিশন ফাস্ট বোলিংয়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। সিমকে ঠিক মতো ল্যান্ডিং করানোটা একটা শিল্প। এটা এক দিনে আসা সম্ভব নয়। শুরুর দিকে আমারও খুব একটা খেয়াল থাকত না সিমের দিকে। শুধু ব্যাটসম্যানকেই দেখতাম, উইকেট দেখতাম আর বল করতাম। আমি অনেক রকম বলে ক্রিকেট খেলতাম। তার মধ্যে প্লাস্টিক বলও থাকত। এক রকমের প্লাস্টিক বল পাওয়া যায়, যার মাঝখানে সুতোর মতো দাগ থাকে। ওই সুতোর দু’দিকে আঙুলে রেখে আমি বল করতাম আর প্লাস্টিকের বল ভাল সুইংও করাতে পারতাম। প্লাস্টিক বল সুইং করানোটা আমি খুব উপভোগ করতাম। আমার মনে হয়, সুইং করানো এবং সিমের ব্যবহার শেখাটা প্লাস্টিক বল থেকেই এসেছে।

কোচ এবং অধিনায়ককে একটা টিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। রবি ভাই (শাস্ত্রী) আর বিরাট সেটাই দারুণ ভাবে করেছে।

প্র: সেই শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কী ভাবে কাজে লাগালেন?

শামি: আসল হচ্ছে বলটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। যত উপরের দিকের ক্রিকেটে এগিয়েছি, তত সেই নিয়ন্ত্রণটা আমাকে আনতে হয়েছে। সিম ব্যবহারের প্রাথমিক পাঠ প্লাস্টিক বল থেকে পাওয়ার পরে আমি বুঝতে শিখি যে, লাল বা সাদা শক্ত ডিউস বলেও এটা করা যেতে পারে। কোকাবুরা বল হাতে পেয়ে মনে হয়েছিল, এ রকমও বল হতে পারে? আমি তো দেড়শো-দুশো টাকার বলেই খেলে বড় হয়েছি। রঞ্জি ট্রফিতেও খুব বেশি দামের বল তখন ব্যবহার হত না। কিন্তু যখন কোকাবুরা বল হাতে পেলাম, প্লাস্টিক বলের কথা মনে পড়ে গেল। দেখে আমার মনে হয়েছিল, প্লাস্টিক বলের সেই সিম ব্যবহার এই বল দিয়ে হতে পারে। প্র্যাক্টিস করতে থাকলাম বেশি করে। দেখলাম, সত্যিই ভাল ফল পাচ্ছি।

প্র: আর কী কী করেন সেলাই ব্যবহারে উন্নতি ঘটানোর জন্য?

শামি: আর একটা অভ্যাসও আমার আছে। আমার হাতে যত ক্ষণ বল থাকে, আমি সিম ধরেই সেটাকে নাড়াচাড়া করি। কখনও পালিশের দিকটা ধরি না। সিম ধরেই হাতের মধ্যে ঘোরাতে থাকি। সেটা করতে করতে মনে হয় সিম নিয়ে একটা অন্য রকম অনুভূতিও তৈরি হয়ে গিয়েছে। অজান্তেই যেন এখন বল হাতে এলে সিমে আঙুল চলে যায়। আপনার সঙ্গে দাঁড়িয়ে হয়তো কথা বলছি, হাতে আমার বল রয়েছে, সেটাকে শূন্যে ছুড়ে ঘোরাচ্ছি, দেখবেন বলটাকে সিমে ধরেই আমি উপরে ছুড়ে দিচ্ছি। আঙুল সিমে রেখে বলটাকে ঘোরাচ্ছি। একটা অভ্যাসই হয়ে গিয়েছে সিম নিয়ে খেলা করার। সেই অভ্যাসই সম্ভবত সিম ব্যবহারে প্রতিফলিত হয়।

প্র: ফিটনেসে এই পার্থক্যটা কী ভাবে ঘটল? ইয়ো ইয়োতে আটকে গিয়েছিলেন। এখন শুনছি, ১৮ স্কোর করছেন। কী ভাবে সম্ভব করলেন?

শামি: দেখুন, আমি যে সময়টা ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে উঠছিলাম, তখনও আজকের অত্যাধুনিক ফিটনেস রুটিন তৈরি হয়নি। আমরা যারা বাইরে থেকে খেলতে আসতাম, তারা অফ সিজনে বাড়ি চলে যেতাম। এখনও বাংলায় নিশ্চয়ই অনেকে এ রকম আছে। অফ সিজনে আমাদের ট্রেনিং করার জন্য, ফিটনেস ধরে রাখার জন্য তেমন কিছু ছিল না। যখন আমি খেলতে শুরু করি, জানতামই না কী ভাবে ট্রেনিং করতে হয়, কী ভাবে ফিটনেস বাড়াতে হয়। সে ভাবে এ সব নিয়ে পথ দেখানোরও কেউ ছিল না। দু’এক বার ফিটনেস নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। চোট-আঘাত ছিটকে দিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়েছে যে, ফাস্ট বোলারের ফিটনেস স্তর আলাদা হতে হবে। এক জন ফাস্ট বোলার যদি ধারাবাহিক ভাবে ভাল ফল করতে চায়, তা হলে তাকে সারা বছর ফিটনেস ট্রেনিংয়ের মধ্যে থাকতে হবে। এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, সারা বছর ধরে সে ট্রেনিং চালিয়ে যাবে কী করে?

প্র: কী করে?

শামি: বেঙ্গালুরুতে বোর্ডের জাতীয় অ্যাকাডেমি আছে। সেখানে তো আমরা যেতেই পারি। কিন্তু সব সময় তো আর সেখানে গিয়ে ট্রেনিং করা সম্ভব নয়। যখন বাড়িতে থাকব, তখন কী ভাবে ফিটনেস রক্ষা করব? সেটাই প্রশ্ন। সেই কারণেই আমি আলাদা জমি কিনে নিজের ফিটনেস সেন্টার বানিয়েছি। সেখানে নিজের জিম থেকে শুরু করে সুইমিং পুল সবই তৈরি করেছি। আজ যে ফিট শামিকে দেখতে পাচ্ছেন, তার পিছনে ব্যক্তিগত এই ফিটনেস সেন্টারের অনেক ভূমিকা রয়েছে। আমি বুঝে গিয়েছি, ফাস্ট বোলার হিসেবে ধারাবাহিক থাকতে গেলে ফিটনেস থেকে ছুটি নেওয়া যাবে না। সেই কারণে নিজে টাকা খরচ করে এই সেন্টার বানিয়েছি। অনেকে হয়তো আমার ফিটনেসে উন্নতিটাই শুধু দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু নেপথ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ফিটনেস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। এটা হয়তো আমি নিজের জন্যই করেছি। কিন্তু আমাদের পাড়ায় তো একটা হয়ে থাকল। ভবিষ্যতে যদি উঠতি ফাস্ট বোলাররা আসতে চায় এখানে ট্রেনিং করতে, তাদের জন্য দরজা খুলে দেব। আমি যে সুযোগ-সুবিধাটা পাইনি, সেটা ওরা পাচ্ছে দেখলে আমার খুব আনন্দ হবে।

প্র: মেয়ের কথা বলছিলেন...ওকে কি ফোন করবেন দেখা করার জন্য?

শামি: হ্যাঁ, অবশ্যই করব। চেষ্টা করব শান্তিপূর্ণ ভাবেই ওর সঙ্গে দেখা করার। অনেক দিন আমি বাইরে ছিলাম। ওর জন্য অনেক উপহার কিনেছি। ওর কোন কোন জিনিস ভাল লাগে, আমি তো জানি। সেগুলো খুঁজে খুঁজে কিনেছি। সেই গিফ্‌টগুলো ওকে দিতে চাই। দেখি, কী ভাবে দেখা করা সম্ভব হয়। যদি এমনিতে না দেখা পাই, তা হলে আদালতে আবেদন করতে হবে।

প্র: ইংল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজ়িল্যান্ড— দুর্দান্ত ফর্ম চলছে। অনেক ম্যাচেই দুরন্ত বোলিং করেছেন। এর মধ্যে সেরা স্পেল কোনটাকে বাছবেন?

শামি: পার্‌থের ছয় উইকেটের স্পেলটাকেই বেছে নেব। প্রথম কারণ, সেটা টেস্ট ক্রিকেটে এসেছে। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এবং তখন আমাদের দল বেশ চাপে ছিল। বলটাও পুরনো হয়ে গিয়েছিল। প্রায় ৭৮ ওভার হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার মতো অবস্থায় চলে এসেছিলাম আমরা। ওই স্পেলটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা বোলিং হয়ে থাকবে।

প্র: অধিনায়ক বিরাট কোহালি, কোচ রবি শাস্ত্রী, বোলিং কোচ বি অরুণদের থেকে কেমন সমর্থন পান?

শামি: আমাদের টিম এখন একটা পরিবারের মতো চলে। তার মধ্যে শুধু জাতীয় দলের হয়ে খেলা ক্রিকেটারেরা আছে এমন নয়। টিমের আশেপাশে থাকা সব ক্রিকেটার রয়েছে। আমার মনে হয়, সংখ্যাটা পঁচিশ-তিরিশ জনের মতো হবে। যারা ভারতীয় দলে খেলছে বা খেলতে পারার মতো অবস্থায় রয়েছে। তার সঙ্গে কোচেদের পুরো টিম রয়েছে। ট্রেনার, ফিজিয়ো, কম্পিউটার বিশ্লেষক, সাপোর্ট স্টাফ সকলে রয়েছে। সবাইকে নিয়ে আমাদের পরিবার। নিজেদের ঘরে যেমন সকলে খুব স্বস্তিতে থাকে, সে রকমই দারুণ একটা পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছে টিমের মধ্যে।

প্র: কী রকম সেই পরিবেশ?

শামি: খোলা হাওয়া বইছে। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতে সংকোচ বোধ করে না, কেউ কোনও ব্যাপার অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিতে লজ্জা পায় না। জুনিয়র, সিনিয়র কোনও বিভেদ নেই। কোচ থেকে ক্যাপ্টেন সকলের কাছে যে কোনও তরুণ ক্রিকেটারও পৌঁছে যেতে পারে। গিয়ে যে কোনও সমস্যার কথা বলতে পারে সেই তরুণ ক্রিকেটার। টিমের মধ্যে খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করার প্রভাব আমাদের পারফরম্যান্সে দেখা যাচ্ছে। গত দেড়-দুই বছরে আমাদের ফলাফলে যে উন্নতি ঘটেছে, তার পিছনে এই দলগত পরিবেশের অনেক অবদান। কোচ এবং অধিনায়ককে একটা টিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। রবি ভাই (শাস্ত্রী) আর বিরাট সেটাই দারুণ ভাবে করেছে। তারই প্রভাব দেখা যাচ্ছে মাঠে। ম্যাচের মধ্যে হোক কী ম্যাচের বাইরে, আমরা সারাক্ষণ একসঙ্গে হাসি-মজায় থাকতে পারি।

প্র: টিম ইন্ডিয়ার সুখী পরিবার?

শামি: খুবই সুখী পরিবার। আর সেটা খুব জরুরি। কোচ আর ক্যাপ্টেনের অনেক ভূমিকা রয়েছে এই সুখী পরিবার গড়ে তোলার ব্যাপারে। কোনও ক্রিকেটার যখন দেখে, কোচ এবং ক্যাপ্টেন আমাকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিচ্ছে, মনের ভাব খুলে প্রকাশ করার জায়গা করে দিচ্ছে, সাফল্য-ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়াচ্ছে, তার পারফরম্যান্স এমনিতেই ভাল হতে থাকবে। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস পাবে সেই ক্রিকেটার। সেটাই হচ্ছে এখন আমাদের ক্রিকেট পরিবারে।

প্র: আর ব্যক্তিগত জীবনের মহম্মদ শামি? এক কথায় তাঁর বিবরণ?

শামি: চট করে কাউকে আর বিশ্বাস করে না, কাউকে দোষারোপও করে না। জীবনে দু’টো জিনিসই বেঁচে আছে তার— ক্রিকেট আর মেয়ে।

Cricket India Cricketer Mohammed Shami
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy