ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় ট্রফি জিতল ঝাড়খণ্ড। প্রথম বার ২০১০-১১ মরসুমে বিজয় হজারে ট্রফি জিতেছিল তারা। এ বার ঘরোয়া টি২০ চ্যাম্পিয়ন হল তারা। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি২০ প্রতিযোগিতার ফাইনালে হরিয়ানাকে ৬৯ রানে হারাল ঝাড়খণ্ড। ব্যাট হাতে শতরান ঈশান কিশনের। নজর কাড়লেন কেকেআরের অলরাউন্ডার অনুকূল রায়।
পুণের মাঠে ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করে ঝাড়খণ্ড। সেখানেই খেলার ফয়সালা প্রায় হয়ে গিয়েছিল। বাকি কাজটা করলেন বোলারেরা।
ওপেন করতে নেমে বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন ঈশান। তাঁর ব্যাটিং হাসি ফোটাবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সমর্থকদের মুখে। জাতীয় দলে দীর্ঘ দিন ব্রাত্য তিনি। তবে ফর্ম যে তাঁর রয়েছে তা প্রমাণ করে দিলেন ঈশান। মুস্তাক আলিতে একমাত্র ব্যাটার হিসাবে ৫০০-র বেশি রান করেছেন তিনি। ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওপেনার তথা সহ-অধিনায়ক শুভমন গিল ফর্মে নেই। যশস্বী জয়সওয়ালও অসুস্থ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ঢোকার দাবিদার হয়ে উঠলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। বোর্ডের কথা না শোনায় জাতীয় দলে জায়গা হারিয়েছিলেন ঈশান। এ বার কি তাঁর দিকে তাকাবেন গৌতম গম্ভীর, অজিত আগরকরেরা?
শুরু থেকেই চালিয়ে খেলছিলেন ঈশান। অপর ওপেনার বিরাট সিংহ প্রথম ওভারেই মাত্র ২ রানে আউট হলেও তিন নম্বরে নামা কুমার কুশাগ্রের সঙ্গে ১৭৭ রানের জুটি বাঁধেন তিনি। গুজরাত টাইটান্সের হয়ে খেলা কুশাগ্রও আইপিএলের আগে দেখিয়ে দিলেন, তাঁর উপর ভরসা করতে পারেন আশিস নেহরা, শুভমন গিলেরা।
মাত্র ৮২ বলে দুই ব্যাটারের মধ্যে ১৭৭ রানের জুটি হল। ৪৮ বলে শতরান করেন ঈশান। ৬টি চার ও ১০টি ছক্কা মারেন তিনি। শতরানের পর ‘পুষ্পা’ ছবির নায়ক অল্লু অর্জুনের কায়দায় উল্লাসও করেন তিনি। তবে তার পর আর বেশি ক্ষণ ক্রিজ়ে থাকেননি ঈশান। ৪৯ বলে ১০১ রান করে আউট হন তিনি। কুশাগ্র ৩৮ বলে ৮১ রানের ইনিংস খেলেন। ৮টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন তিনি।
মুস্তাক আলি ফাইনালে শতরানের পর ঈশান কিশন। ছবি: এক্স।
ঈশান ও কুশাগ্র আউট হওয়ার পরেও ঝাড়খণ্ডের রানের গতি কমেনি। সৌজন্যে অনুকূল রায় ও রবিন মিঞ্জ। কেকেআর ধরে রেখেছে অনুকূলকে। এ দিনের ইনিংসের পর প্রথম একাদশে নিয়মিত দেখা যেতে পারে তাঁকে। ২০ বলে ৪০ রান করলেন অনুকূল। ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। রবিন ১৪ বলে ৩১ রান করলেন। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৩টি ছক্কা। আইপিএলে রবিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে খেলেন। আইপিএলের আগে নজর কাড়লেন তিনিও।
আরও পড়ুন:
২৬৩ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট হারায় হরিয়ানা। শূন্য রানে ফেরেন অধিনায়ক অঙ্কিত কুমার ও আশিস সিওয়াচ। দু’টি উইকেটই নেন বিকাশ সিংহ। চতুর্থ উইকেটে যশবর্ধন দালাল ও নিশান্ত সিন্ধু জুটি গড়েন। লড়াই করছিলেন তাঁরা। দু’জনের মধ্যে ২৭ বলে ৬৭ রানের জুটি হয়। সেই জুটি ভাঙেন অনুকূল। তাঁর বলে যশবর্ধন ৫৩ ও নিশান্ত ৩১ রানে আউট হন।
সেখান থেকে হরিয়ানার আর ম্যাচে ফেরার রাস্তা ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৮.৩ ওভারে ১৯৩ রানে গোটা দল আউট হয়ে যায়। ৬৯ রানে ম্যাচ জেতে ঝাড়খণ্ড। ব্যাট হাতে ৪০ রান করার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ২ উইকেট নেন কেকেআরের অনুকূল।