Advertisement
১৬ মে ২০২৪
আনন্দবাজার এক্সক্লুসিভ: ভারত আমার কাপ ফেভারিট

বাকি দুনিয়া বোঝার চেষ্টা করো, পাকিস্তানের প্রথম টিমের পাঁচ-ছয় জন বোলার নেই

পাকিস্তানের আজ পর্যন্ত দুটো বিশ্বজয়ী টিমেরই তিনি কোচ। ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। আবার অস্ট্রেলিয়াতে তেইশ বছর আগেও। এহেন ইন্তিখাব আলম-কে বিষ্যুদবার দুপুরে লাহৌরে পাওয়া গেল তাঁর মোবাইলে। না রেখে ঢেকেই তো কথা বললেন এবিপি-র সঙ্গে— যা পাক সাংবাদিকেরা শুনলে অপরিচিত ইন্তিখাব মনে হতে পারে...

গৌতম ভট্টাচার্য
অকল্যান্ড শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

পাকিস্তান ক্রিকেটে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়, এত বিচক্ষণ আর এমন ব্যালান্স করে চলতে জানেন যে পারমাণবিক বিস্ফোরণও ক্রিকেট প্রশাসন থেকে ওঁর জায়গা টলাতে পারবে না! তিরিশ বছরেরও বেশি পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে তাঁর প্রত্যক্ষ যোগসূত্র থেকেই গিয়েছে। নিজের মুলুকের প্রথম ওয়ান ডে ক্যাপ্টেন তিনি। অবশ্য অধুনা পাক দৈনিক সেটা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে এখন নিয়মিত তাঁর কাছে শুধু যাচ্ছে জিজ্ঞেস করার জন্য যে, আবার বিরানব্বই ঘটাতে পারবেন মিসবারা? পাকিস্তানের আজ পর্যন্ত দুটো বিশ্বজয়ী টিমেরই তিনি কোচ। ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। আবার অস্ট্রেলিয়াতে তেইশ বছর আগেও। এহেন ইন্তিখাব আলম-কে বিষ্যুদবার দুপুরে লাহৌরে পাওয়া গেল তাঁর মোবাইলে। না রেখে ঢেকেই তো কথা বললেন এবিপি-র সঙ্গে— যা পাক সাংবাদিকেরা শুনলে অপরিচিত ইন্তিখাব মনে হতে পারে...

প্রশ্ন: ক’দিন ধরে বারবার ফোন করেও আপনাকে পাচ্ছিলাম না। তার পর পাক সাংবাদিকদের মুখে শুনলাম আপনাকে আগে এসএমএস করে নিতে হয়। নইলে আপনি ফোন ধরেন না। এটা আবার কবে থেকে?

ইন্তিখাব: হ্যাঁ, আমি দেখছিলাম একটা অপরিচিত নিউজিল্যান্ড নম্বর থেকে ফোন আসছে। তাই ধরিনি। ইন্ডিয়ান নম্বর থেকে করায় ধরলাম।

প্র: আগে তো আপনি সব কলই নিতেন।

ইন্তিখাব: এখন দিনকাল অন্য রকম। সতর্ক থাকাই ভাল না? কে কোন উদ্দেশ্যে ফোন করছে! তা ছাড়া মিডিয়ার ফোনে সেই একই তো প্রশ্ন। কী মনে হচ্ছে, বিরানব্বইয়ের পুনরাবৃত্তি হবে? কাঁহাতক আর একই জবাব দেওয়া যায়?

প্র: ইন্তিভাই রেগে যাবেন না। কিন্তু এবিপি-র স্পোর্টসেরও একই প্রশ্ন ছিল। এই টিম দিয়ে বিরানব্বইয়ের সোনার অধ্যায় ফেরানো সম্ভব?

ইন্তিখাব: (হাসি) ওরে বাবা সেই প্রশ্ন (হাসি)। দেখুন ভাই। আপনাকে প্র্যাকটিকাল হতে হবে। আপ জসবাদি মত বনো। কী টিম ছিল বলুন তো আমাদের সেই সময়! ইমরান, মিয়াঁদাদ। ওয়াসিম আক্রম তার জীবনের সেরা ফর্মে। ইনজামাম উঠতি দুরন্ত ঘোড়া। আকিব, মুস্তাক। যেমন বোলিং। তেমন ব্যাটিং। সেই কোয়ালিটি কোথায় এখনকার টিমে? একটা ওয়াকার ইউনিস খেলতে পারল না। তাও আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলাম। টিমটা কত মজবুত ছিল ভাবতে পারেন?

প্র: তাও তো সেই টিমও কত সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। ইন্ডিয়া ম্যাচ হারার পর টিমে ক্যাম্প হয়ে যাওয়া। ইমরান বনাম মিয়াঁদাদ সংঘাত।

ইন্তিখাব: সব ছিল কিন্তু টিমে মায়ুসি পয়দা হতে দিইনি। বিষাদে কখনও নুইয়ে পড়তে দিইনি। ঝগড়া মারামারি সে তো থাকেই। ওই টিমে ভালই ছিল।

প্র: মিসবাদের টিমে তো সেই সব ব্যক্তিত্বের সংঘাত-টংঘাত নেই। ইউনিস, মিসবা নিজে, আফ্রিদি, কারও সঙ্গে কারও সম্পর্কে টেনশন নেই, তা হলে টিমটা এক হয়ে খেলতে পারছে না কেন?

ইন্তিখাব: হ্যাঁ, এদের হ্যান্ডল করা অনেক সহজ। আমার তো এক এক সময় মনে হয় এই যে সবার দৌড় দেখি টিমের সঙ্গে বিদেশ যাবে ম্যানেজার হয়ে, কোচ হবে, সেই সময় পড়লে বুঝতি (হাসি)।

প্র: আগুনে সময় কী বলেন?

ইন্তিখাব: আগুন মানে ওরে বাবা (হাসি)।

প্র: একটা বই লিখুন না সেই সময়ের পাকিস্তান আর ইমরান-মিয়াঁদাদের সংঘর্ষ নিয়ে।

ইন্তিখাব: প্রবলেম আছে।

প্র: কেন, এখনও পাকিস্তান বোর্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বলে?

ইন্তিখাব: না (হাসি), সত্যিটা লিখলে লোকে ভাববে সব বানানো। কী দরকার (হাসি)। বাপ রে বাপ।

প্র: তেইশ বছর বাদেও আপনার টেনশন যায়নি মনে হচ্ছে। অথচ পাকিস্তানি সাংবাদিকেরা বলেন আপনি কোনও কিছু বডির ভেতরে ঢুকতেই দেন না।

ইন্তিখাব: তা কিছুটা ঠিক। আর একটা কথা বলি। কী কী সব ক্যারেক্টর ছিল বলুন তো! ওই রকম দুর্যোগের ঘনঘটা গোটা টিম জুড়ে। আমরা পরপর ম্যাচ হারছি। জাভেদ মিয়াঁদাদ কিন্তু কাঁধ একবারও ঝোঁকায়নি। ইমরান! চাবুক মন! একদিন মেলবোর্ন মার্কেটে শপিংয়ে চলে গেল। আমি ভাবলাম হঠাত্‌ হলটা কী যে, বেমক্কা শপিং চলে গেল। তার পর দেখি বাঘের ছাপওয়ালা একটা টি শার্ট কিনে এনেছে। আমি তো অবাক। কিছু বলিনি। তার পর ফাইনালে টসের সময় দেখি সেটা পরছে। আমি আরও অবাক, ক্যাপ্টেন ব্লেজার না পরে এই টি শার্ট পরছে কেন? থামাব ওকে? তার পর টসে ইয়ান চ্যাপেল ওকে জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার? ইমরান বলল, আমি চাই আজ আমার টিম এই রকমই কোণঠাসা বাঘের মতো ভয়ঙ্কর লড়াই দিক! ড্রেসিংরুমে সেটা শুনিয়ে আবার মিয়াঁদাদ টিমকে চাগাল ওঠো বাঘের বাচ্চারা। ওদের আজ জ্যান্ত ফিরতে দিও না। এই সব তো চোখের সামনে দেখা! কোথায় পাবেন আপনি আজকের দিনে একটা ইমরান, একটা মিয়াঁদাদ!

প্র: কিন্তু আপনি তো পাকিস্তানে ঘরোয়া ক্রিকেটের চার্জে। আগেকার মতো একটা বোলারও তো বেরোচ্ছে না।

ইন্তিখাব: আরে ভাই এই সব বলার আগে আমাদের সমস্যাটা তো ভাবুন! আমরা পৃথিবীর একমাত্র দেশ যারা গত ছয় বছর ধরে হোমে খেলার সুযোগ পায় না। আমাদের সব খেলা ওই দুবাই বা শারজায়। এমনকী অনূর্ধ্ব ষোলো বা উনিশ পর্যায়েও যে আমরা দ্বিপাক্ষিক সফরভিত্তিক খেলব তার উপায় নেই। কেউ আমাদের দেশে আসবে না। আমরা যদি একতরফা ওদের ডাকি সেটা প্রচুর খরচা। নিয়মিত করা সম্ভব নয়। তা হলে জুনিয়র পর্যায়ে জাজ করব কী করে আমাদের ছেলেদের? বেচারারা তো ইন্ডিয়ার মতো খেলার সুযোগই পাচ্ছে না।

তার পর আরও কত রকম সমস্যা। বিশ্বকাপের আগে আমাদের বোলিং লাইন-আপ পুরো কানা হয়ে গেল। আজমলের দুর্ভোগটা ঠিক এই সময়েই ঘটতে হল। মহম্মদ আমের আগেই স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য বাইরে। দানেশ কানেরিয়া বাইরে। মহম্মদ হাফিজ চোট। উমর গুল চোট। একটা টিমের এতগুলো বোলিং অস্ত্র যদি একসঙ্গে অকেজো হয়ে যায় তা হলে সেই টিম কত লড়াই করবে? তাও তো পাকিস্তান লড়াই দিচ্ছে। এখনও বিশ্বকাপ থেকে মুছে যায়নি। দুনিয়ার আর কোনও টিম এই লড়াইটাও দিতে পারত ফার্স্ট টিমের এতগুলো লোক চলে যাওয়ার পর? আমি বলছি পারত না। এক্সপার্টরা সেটার জন্য তো একবারও বাহবা দিচ্ছে না যে, যা আছে তা নিয়েই মিসবার টিম অন্তত লড়াইটুকু দিচ্ছে।

প্র: আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে কাপ ফেভারিটদের মধ্যে পাকিস্তানকে ধরছেন না।

ইন্তিখাব: বললাম তো পাকিস্তান এখনও পুরো পোটেন্সিয়াল অনুযায়ী খেলতে পারেনি। ওপেনাররা রান পেলে টিমটা আরও ভাল দেখাবে।

প্র: কিন্তু মুখ্য ফেভারিটদের মধ্যে নেই?

ইন্তিখাব: আমার ইন্ডিয়ান টিমকে দারুণ লাগছে। যে ভাবে ওরা ২৫৯ তাড়া করল, অনবদ্য। বেস্ট ব্যাটিং লাইন-আপ এই বিশ্বকাপের। ওদের ফেভারিট ধরাই যায়। ফাইনালে ইন্ডিয়া-নিউজিল্যান্ড খেলা হলে এতটুকু আশ্চর্য হব না।

প্র: আমাদের কালকের কাগজেই জন বুকানন বলেছেন সিডনিতে ভারত-অস্ট্রেলিয়া খেলা হলে ভারত মোটেও ফেভারিট নয়। বলেছেন অস্ট্রেলিয়া বরঞ্চ ঝাঁকুনি খেতে পারে অ্যাডিলেডে যদি পাকিস্তানের সামনে কোয়ার্টার ফাইনালে পড়ে!

ইন্তিখাব: ঠিক কথা। অ্যাডিলেডে ড্রপ-ইন পিচ। শুকনো। ঘাস-টাস নেই। স্পিনার সাহায্য পাবে আবার ও দিকে ড্রাই বলে রিভার্স সুইং কাজে দেবে। মহম্মদ ইরফান একটা ফ্যাক্টর হয়ে যেতে পারে। অ্যাডিলেডে পড়লে আমাদের পক্ষে ভাল।

প্র: সব মিলিয়ে ইন্ডিয়ান টিম দেখে কেমন লাগছে?

ইন্তিখাব: খুব ভাল। ধোনি দারুণ ক্যাপ্টেন্সি করছে। এত ঠান্ডা মাথা যে ভাবাই যায় না! কখনও যেন মাথা গরম করে না। একটা অদ্ভুত ব্যাপার।

প্র: ধোনি কি আপনার দেখা সর্বকালের সেরা ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন?

ইন্তিখাব: কীসে, ওয়ান ডে-তে? না সব মিলিয়ে?

প্র: সব মিলিয়ে। আপনি তো সেই সিক্সটিনাইন থেকে ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেনদের সঙ্গে খেলেছেন। দেখছেন। পটৌডি থেকে ওয়াড়েকর হয়ে বেদী-গাওস্কর। কপিল, আজহার সবাইকেই কাছ থেকে দেখেছেন। সবার সেরা কাকে বাছবেন?

ইন্তিখাব: ডিফিকাল্ট বলা এক মিনিটে। উঁ..হুউউ গাওস্কর মনে হয়।

প্র: কেন গাওস্কর?

ইন্তিখাব: ওভারঅল খেলাটার ওপর পাণ্ডিত্য। সেটা প্রয়োগ করা, ম্যাচ সিচুয়েশন বোঝা। ইমরান আর আমি বহু বার এটা নিয়ে আলোচনা করেছি যে ব্রিটিশ প্রেস কি পাগল যে গাওস্কর বেঁচে থাকতে ব্রিয়ারলিকে নিয়ে মাতামাতি করে?

প্র: ধোনি তার পরে?

ইন্তিখাব: ধোনি তিন নম্বরে। দুইয়ে আসবে গাঙ্গুলি। আধুনিক ইন্ডিয়া টিমের খেলার ধরনটাই গাঙ্গুলি তৈরি করে দিয়েছে। ধোনির টিম সেই আক্রমণাত্মক মেজাজের পরম্পরাটা আরও ভাল অনুসরণ করছে। কিন্তু এটার সৃষ্টি তো ধোনি করেনি। তাই সব মিলিয়ে ও তিন নম্বর।

প্র: বিশ্বকাপ নিয়ে...

ইন্তিখাব: দাঁড়ান, এ বারে আমার একটা কথা বলার আছে। বিশ্বকাপে এই যে মোটা মোটা রান উঠছে, হচ্ছেটা কী? ওয়ান ডে ক্রিকেটের একেবারে জন্মলগ্ন থেকে আমি আছি। আমি তখন ষাটের দশকে সারের হয়ে সানডে লিগ খেলতাম। খেলাগুলো হত চল্লিশ ওভারের। আমাদের সেফ টার্গেট ছিল ১৩০। ওভার পিছু তিনের সামান্য বেশি করলেই টিম খুশি হয়ে যেত। সেখান থেকে আজকের দিনে সাড়ে তিনশো করেও শিওর হওয়া যাচ্ছে না। এটা আমার কাছে বাড়াবাড়ি।

প্র: বাড়াবাড়ি বলতে?

ইন্তিখাব: মডার্ন ডে ক্রিকেটে এই যে ব্যাটগুলো এসেছে তার ওপর কোনও বাধানিষেধ নেই। আমি রুল বই চেক করছিলাম ব্যাট চওড়ায় কত ম্যাক্সিমাম হবে সেটা নির্দিষ্ট করা আছে। অথচ ঘনত্বটা নিয়ে বলা নেই। সেই সুযোগ নিয়ে ব্যাট প্রস্তুতকারকেরা মেদটা বাড়িয়েই যাচ্ছে। আরও স্ট্রোক প্লে বাড়ছে। পাবলিক খুশি। কিন্তু খেলাটার বারোটা বেজে যাচ্ছে।

প্র: এটা নিয়ে তো সঞ্জয় মঞ্জরেকর আইসিসি-কে মেল করেছেন!

ইন্তিখাব: তাই? সঞ্জয়কে বলবেন তো আমি সঙ্গে আছি, ঠিক করেছে!

প্র: এটা তো ভারত-পাক মৈত্রীচুক্তি হয়ে গেল?

ইন্তিখাব: হোক না, ক্রিকেটকে বাঁচাতে সেটা হলে ক্ষতি কী!

প্র: লাস্ট প্রশ্ন করছি, আর আপনাকে আটকাব না।

ইন্তিখাব: হুঁ।

প্র: মইন খানকে তাড়ানো ঠিক হল? টিম খেলতে পারছে না বলে সিলেক্টর ক্যাসিনো যাবে না? সে বেচারির কী দোষ?

ইন্তিখাব: এই প্রশ্নটা থাক না। বড় সেনসিটিভ। অফ দ্য রেকর্ড জবাবই দিই।

প্র: কেন অফ দ্য রেকর্ড কেন?

ইন্তিখাব: ওকে, বলছি। কিন্তু অবিকল রাখবেন আমার কথাটা। ক্যাসিনো যাওয়া অপরাধ নয় ঠিকই কিন্তু আমাদের মতো ক্রিকেট আবেগের দেশে চিফ সিলেক্টরকে তো একটু হুঁশও রাখতে হবে কোন সময়ে কোন কাজটা করা যায়? কোন সময়ে আপাত নিরীহ কাজও করা যায় না? ঠিক ওই দিনটায় ক্যাসিনো না গেলেই কি চলছিল না?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

world cup 2015 gautam bhattacharya intikhab alam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE