আগামী শনিবার তাঁদের প্রথম প্রতিপক্ষ বিরাট কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। কিন্তু সেই ম্যাচ নিয়ে ভাবিত নন হরভজন সিংহ। চেন্নাই সুপার কিংসের তারকা অফস্পিনার জানিয়ে দিলেন, তাঁরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলবেন।
গত মরসুম তাঁর পক্ষে ছিল বেশ আশাব্যঞ্জক। ১৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন সাত উইকেট। হরভজন বলেছেন, ‘‘সিএসকে অতীত রেকর্ড দেখলে বোঝা যাবে, এই দল বরাবর আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছে। এই দলের মধ্যে ভয় বলে কোনও শব্দ নেই। গত মরসুমে যে মানসিকতা নিয়ে আমরা খেলেছি, সেটাই বজায় থাকবে।’’ সেখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সিএসকে-র মতো দলে খেললে প্রত্যাশার চাপ সহ্য করতেই হবে। কিন্তু ঘটনা হল, আমাদের দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার খুব ভাল জানেন, কী ভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ হাসিল করতে হয়। আমি নিশ্চিত, এ বারও তাই হতে চলেছে।’’ বরং আরসিবি শিবির বার্তা পাঠানোর ভঙ্গিতে হরভজন বলে দিয়েছেন, ‘‘এই দলে কিন্তু ম্যাচউইনারের সংখ্যা প্রচুর। আমরা ভাল করবই। প্রথম ম্যাচ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন নই।’’
প্রথম ম্যাচে চিদাম্বরম উইকেটের চরিত্র কী হবে? হরভজন শুনিয়ে দিয়েছেন, স্পিন সহায়ক উইকেটই হতে চলেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘চেন্নাইয়ে বরাবর স্পিন সহায়ক পিচ হয়েছে। এখানে স্পিনাররা অনেক বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। উইকেটে কোনও পরিবর্তন হবে না।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমি দশ মরসুম ওয়াংখেড়েতে বল করেছি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। সত্যি বলতে, ওই পিচে স্পিনারদের পক্ষে উইকেট নেওয়া খুব কঠিন। কিন্তু চেন্নাইয়ে ছবিটা একেবারে আলাদা। এখানে স্পিনারদের দাপট বরাবর বেশি থেকেছে। এ বারও তাই হবে।’’ বরং নিজের ক্রিকেটারজীবনে চেন্নাইয়ের উইকেট তাঁকে কতটা সাহায্য করেছে, তাও জানিয়েছেন হরভজন। তিনি বলেছেন, ‘‘চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের সঙ্গে আমার অনেক সুন্দর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এখানকার সার্বিক পরিবেশটা আমার দারুণ লাগে। প্রথম ম্যাচ থেকেই নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই।’’
রবিবার চেন্নাই সুপার কিংসের প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে বারো হাজার সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের দলকে নিয়ে ভক্তদের এই উন্মাদনা মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে অভিজ্ঞ অফস্পিনারের। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রস্তুতি ম্যাচেই যদি এত সমর্থক এসে থাকেন, তা হলে বোঝাই যাচ্ছে, প্রথম ম্যাচে গ্যালারির রং কী দাঁড়াবে। সিএসকে সমর্থকদের উল্লাস এবং গর্জনই আমাদের প্রধান শক্তি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘গত বার আমরা ঘরের মাঠে খুব বেশি ম্যাচ খেলতে পারিনি। আশা করছি, এ বার সেই সুযোগ পাব। চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে আমাদের হারানো সহজ নয়।’’
আরসিবি-র বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের আগে দলের রণকৌশল কী হওয়া উচিত? হরভজন বলেছেন, ‘‘দলগত সংহতি আমাদের সেরা অস্ত্র। তারই সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ে আমরা উত্তেজনা প্রশমন করে ম্যাচ বার করে নিতে পারি। গত মরসুমে আমাদের অনেক গুলো ম্যাচ খেলতে হয়েছিল পুণেতে। উইকেটও খুব একটা অনুকূলে ছিল না। কিন্তু নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিতেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাকে এ বারও কাজে লাগাতে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘যে দলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, সুরেশ রায়না, ডোয়েন ব্র্যাভোর মতো ক্রিকেটার থাকে, তাদের খুব একটা অস্বস্তির মধ্যে থাকতে হয় না। নিজেদের প্রতি আমাদের অগাধ আস্থা রয়েছে।’’
সিএসকে ব্যাটিং কোচ মাইকেল হাসিও জানিয়েছেন, শনিবারের ম্যাচ নিয়ে তাঁরা ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ব্যাটসম্যানদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। তা হলেই জয় পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচ খেলব। সেটাই আমাদের এগিয়ে রাখবে।’’