Advertisement
E-Paper

এটা কি আইপিএল হচ্ছে, না ক্লাব স্তরের ক্রিকেট? ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিরাট

ম্যাচের শেষ বলটা করতে গিয়ে যে লাসিথ মালিঙ্গার পা ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, তা আম্পায়ারের চোখ এড়িয়ে যায়। যা টিভি রিপ্লে-য় ধরা পড়ে। ফলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারানোর শেষ সুযোগটাও পায়নি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি)।

নিজস্ব প্রতিবেদন 

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৬
বিতর্ক: মালিঙ্গার সেই নো বল। যা নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়েছে। টুইটার

বিতর্ক: মালিঙ্গার সেই নো বল। যা নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়েছে। টুইটার

নো বল কেলেঙ্কারিতে যেন জর্জরিত হয়ে উঠছে আইপিএল। বুধবার ইডেনে নো বলের জন্য আন্দ্রে রাসেলের আউট বাতিল হওয়া নিয়ে এক নাটক হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ফের আর এক দফা নাটক হয়ে গেল সেই নো-বল নিয়েই।

ম্যাচের শেষ বলটা করতে গিয়ে যে লাসিথ মালিঙ্গার পা ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, তা আম্পায়ারের চোখ এড়িয়ে যায়। যা টিভি রিপ্লে-য় ধরা পড়ে। ফলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারানোর শেষ সুযোগটাও পায়নি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি)। রিপ্লে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আরসিবি অধিনায়ক বিরাট কোহালি। আম্পায়ারিংয়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলে দেন, ‘‘এটা কি আইপিএল হচ্ছে, না ক্লাব স্তরের ক্রিকেট? আম্পায়ারদের চোখ খোলা রাখা উচিত ছিল। শেষ বলে যা হল, তা হাস্যকর। এত হাড্ডহাড্ডি ম্যাচে এ রকম ঘটনা! জানি না কী বলব। আম্পায়ারদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’

বৃহস্পতিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শেষ বলে জেতার জন্য সাত রান দরকার ছিল বিরাটদের। কিন্তু সেই বলে লাসিথ মালিঙ্গার বল আম্পায়ার ‘নো’ ডাকলে ম্যাচটা জেতার শেষ সুযোগ পেতেন দুই ব্যাটসম্যান এ বি ডি’ভিলিয়ার্স ও শিবম দুবে। রিপ্লে-য় এই চরম ভুল দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি আরসিবি অধিনায়ক বিরাট কোহালি। আইপিএলের এই ম্যাচে বিরাট বনাম যশপ্রীত বুমরার দ্বৈরথের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বেশ ঘটা করে। ম্যাচের বিজ্ঞাপনেই টিভি সম্প্রচার সংস্থা বুমরাকে দিয়ে বলিয়ে নেয়, ‘‘বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের স্টাম্প ওড়াতে না পারলে আর কী সেরা বোলার হলাম?’’ জবাবে বিরাটকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ক্যাপ্টেনকে স্লেজ করবি? দেখা যাবে।’’ এই বাতবরণে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দুই তারকার যুদ্ধও ওঠে চরমে। কিন্তু শেষে যে ঘটনাটা ঘটল, তাকে আম্পায়ারদের ভুলের চরম দৃষ্টান্ত বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো সমালোচনার বন্যা বয়েছেই। এমনকি, জয়ী দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও এই ভুলের সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘মাঠ ছাড়ার পর আমাকে একজন বলল, ওটা নো বল ছিল। এই ধরনের ভুল ক্রিকেটের জন্য মোটেই ভাল নয়। খুবই হতাশাজনক। যখন টিভি আম্পায়ার রয়েছেন, তখন এই ভুল কেন হবে? আমরা যেমন নিজেদের ভুল শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করি, ওদেরও তেমনই ভুল শুধরে নেওয়া উচিত। এই সব সিদ্ধান্তগুলোই ম্যাচের ছবি বদলে দিতে পারে।’’

শেষের এই অপ্রীতিকর ঘটনাটা বাদ দিলে চিন্নাস্বামীতে এ দিন বিরাট ও বুমরার দ্বৈরথ বেশ জমে উঠেছিল। কেউই যে কাউকে ছাড়ার পাত্র নন, বৃহস্পতিবার তা বুঝিয়ে দেন তাঁরা। শুরুতেই বুমরাকে পরপর তিন বলে চার হাঁকান বিরাট। দশ ওভার পরে বল হাতে ফিরে এসে বিরাটকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিয়ে বুমরা জানিয়ে দেন ‘হিসাব বরাবর’।

তাঁদের মুখোমুখির শুরুতেই বুমরাকে বাউন্ডারি পার করিয়ে দেন বিরাট। যথাক্রমে লং অন, থার্ড ম্যান ও কভার অঞ্চল দিয়ে। প্রথম ওভারেই পরপর তিনটি চার হজম করার পরে তখনই আর বোলিংয়ে ফেরেননি ভারতীয় পেসার। যখন ফেরেন, তখন জয় থেকে ৭৫ রান দূরে আরসিবি। ক্রিজে এ বি ও বিরাট। এর মধ্যে হাফ ডজন চার মেরে ৩২ বলে ৪৬ রান তুলে নেন বিরাট। সেই ওভারেই আইপিএলে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করার পরেই বিরাট আউট। গুজরাতি পেসারের যে শর্ট বল মেরে ওড়াতে গিয়ে ঠিকমতো ব্যাটে-বলে করতে পারেননি বিরাট। ব্যাটের উপরের কানায় লেগে তা আকাশে উঠে যায় ও সোজা স্কোয়ার লেগে হার্দিকের হাতে গিয়ে পড়ে। পরপর তিনটি চার হজম করার বদলা এ ভাবেই নিয়ে নেন ভারতীয় দলের প্রধান পেসার।

কেন তাঁকে বিশ্বসেরা ডেথ বোলার বলা হয়, বুমরা তা এ দিন ফের বুঝিয়ে দেন ১৯ তম ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিয়ে। তাঁর এই ওভারেই জয়ের রাস্তায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে আরসিবি। শেষ ওভারে কাজে লাগে মালিঙ্গার ১৫ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা। বিধ্বংসী এ বি ডি’ভিলিয়ার্স চারটি চার ও ছ’টি ছয়-সহ ৪১ বলে ৭০ রান করার পরেও শেষ ওভারে ১৭ রান তুলে দলকে জেতাতে পারেননি। যদিও আম্পায়ার ভুল না করলে একটা শেষ সুযোগ পেতেন। বুমরার প্রথম ওভারের পরে ক্রিজে এ দিন বিরাটের সঙ্গে যোগ দেন এ বি ডি’ভিলিয়ার্স। প্রথম বলেই স্লিপে তাঁর ক্যাচ ফেলেন যুবরাজ সিংহ। জীবন পেয়ে তিনিই বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। আইপিএলে চার হাজার রানও এ দিন পূর্ণ করে ফেললেন তিনি। কিন্তু সেই আনন্দ উপভোগ করতে পারলেন না এ বি।

বিরাট ও বুমরার যুদ্ধ শুরুর আগে রোহিত ৩৩ বলে ৪৮ রান করে ও ৩৮ রানে চার উইকেট নিয়ে চহাল সেই মঞ্চ মাতিয়ে দিয়েছিলেন। ভারতীয় লেগস্পিনারের দাপট সামলে ১৮৭-৮ তোলে মুম্বই। কিন্তু সে সব ম্লান হয়ে যায় বিরাট, এ বি-র দাপট ও নাটকের একেবারে শেষ অঙ্কে।

IPL 2019 Cricket Royal Challengers Bangalore Mumbai Indians Virat Kohli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy