অধরা আইপিএল ট্রফি জয়ের আশা জাগিয়েও ফের স্বপ্নভঙ্গ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। ট্রফি সেই অধরাই থেকে যাচ্ছে বিরাট কোহালির। শুক্রবার রাতে প্লে-অফের ‘এলিমিনেটর’ ম্যাচে সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের কাছে হারের পরেই এ বারের মতো অভিযান শেষ হয়ে যায় আরসিবির।
তবে এই হারের পরে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর ফের তোপ দেগেছেন অধিনায়ক বিরাটের দিকে। একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে তিনি বলেছেন, ‘‘সমস্যাটা হল দায়বদ্ধতার। আট বছর একটা লম্বা সময়। সেই সময়ে আরসিবি আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। কোনও ক্রিকেটার একটি দলে আট বছর খেলে সাফল্য না আনলেও দলে রয়েছে, তা দেখান! সাফল্য না দিতে পারার দায়ভার অধিনায়কের উপরেই বর্তায়।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমি বিরাটের বিপক্ষে নই। কিন্তু এ বার ওর ব্যর্থতা স্বীকার করার সময় এসেছে।’’ গম্ভীরের মতে, অধিনায়ক বিরাটকে বিদায় জানানোর সময় হয়েছে আরসিবির।
আইপিএলের সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সুনীল গাওস্কর আবার বলেছেন, ব্যাটসম্যান হিসেবে কোহালি নিজেকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে, সেই মান দেখতে পাননি এ বারের আইপিএলে। প্রসঙ্গত ১৫ ম্যাচে এ বারের কোহালির মোট রান ৪৬৬। স্ট্রাইক রেট ১২১.৩৫। গাওস্কর বলেছেন, “নিজের জন্য কোহালি যে উচ্চ স্তরের মান নির্ধারণ করে, সেদিকে তাকিয়ে বলতেই হবে এবারের আইপিএলে ওর পারফরম্যান্স সেই পর্যায়ের ছিল না। আরসিবির বিদায়ের এটাও কিন্তু অন্যতম একটা কারণ।”
তবে গম্ভীর-গাওস্করেরা সরব হলেও স্বপ্নভঙ্গের পরে কোহালির পাশেই দাঁড়িয়েছেন আরসিবি কোচেরা। প্রধান কোচ সাইমন কাটিচ এবং ক্রিকেট অপারেশেন্স ডিরেক্টর মাইক হেসন মনে করেন, দলের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন নেই। ‘‘বিরাট দারুণ এক পেশাদার এবং দলের মধ্যে খুবই সম্মানিত ক্রিকেটার। আরসিবিতে আমরা ভাগ্যবান যে, ওর মতো ক্রিকেটারকে নেতা হিসেবে পেয়েছি,’’ বলেছেন কাটিচ। যোগ করেন, ‘‘দলের তরুণ ক্রিকেটারদের অনেক সময় দিয়েছে বিরাট। বিশেষ করে দেবদত্ত পাড়িকলকে।’’
স্বয়ং কোহালি হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘এ বারের আইপিএল সব দিক দিয়ে অন্য রকম ছিল। স্নায়ুযুদ্ধে হার বা কিছু দ্বিধাগ্রস্ত মনোভাব থাকার কারণেই হয়তো এই ফল। ব্যাট হাতে আমাদের আরও সাহসী হওয়া উচিত ছিল। বিপক্ষ বোলারদের যথেষ্ট চাপে রাখতে পারিনি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘শেষ চার-পাঁচ ম্যাচে ছন্দপতন হয়েছিল দলের। ব্যাটসম্যানেরা যা শট খেলছিল, সব ফিল্ডারদের হাতে চলে যাচ্ছিল। আমরা ধারাবাহিকতাও দেখাতে পারিনি।’’
সানরাইজ়ার্স ম্যাচে হার প্রসঙ্গে কোহালি বলেছেন, ‘‘আমরা বেশি রান করতে পারিনি। ওদের বোলারেরা চেপে ধরেছিল। কিছু ক্ষেত্রে উইকেটও ছুড়ে দিয়ে এসেছি। বোলাররা খুব ভাল লড়াই করেছিল ঠিকই কিন্তু অত কম রান নিয়ে ম্যাচ জেতা কঠিন ছিল আমাদের।’’
আইপিএলের স্বপ্ন শেষ হলেও অনেক ইতিবাচক বিষয়ও চোখে পড়েছে বিরাটের। বলেছেন, ‘‘দেবদত্ত দারুণ ভাবে উঠে এল। আইপিএলে চারশো-র উপরে রান করা খুব সহজ কাজ নয়। মহম্মদ সিরাজ দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছে। যুজ়বেন্দ্র চহাল দেখিয়ে দিয়েছে ও আগের মতোই দলের বড় ভরসা। একই কথা প্রযোজ্য এবি ডিভিলিয়ার্স সম্পর্কেও।’’ দলীয় সংহতির প্রশংসা করে বিরাট বলেন, ‘‘একটা পরিবারের মতো আমরা সবাই গত ৮০ দিনে নানা উত্থান-পতনের সম্মুখীন হয়েছি। দলের সকলের জন্য আমি গর্বিত।’’ আরসিবি ভক্তদের কাছেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোহলি। দলের টুইটারে বলেছেন, “সমস্ত ভক্তদের ধন্যবাদ। বরাবর আমাদের পাশে ছিলেন। আপনাদের ভালবাসা আরও শক্তিশালী করে তুলেছে দলকে।’’