Advertisement
E-Paper

ওয়ার্নার-বার্তায় উদ্বুদ্ধ হন ঋদ্ধি 

বহু দিন ধরেই ঋদ্ধির ব্যাটিং দেখেন না রোমি। অবশ্যই স্নায়ুর চাপে ভোগেন বলেই এমন সিদ্ধান্ত।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫৭
তৃপ্ত: মঙ্গলবার ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে ঋদ্ধি। আইপিএল

তৃপ্ত: মঙ্গলবার ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে ঋদ্ধি। আইপিএল

মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বোলিং আক্রমণকে উড়িয়ে দেওয়া তাঁর ৪৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস দেখে মুগ্ধ কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর থেকে ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী, সকলে। কিন্তু ঋদ্ধিমান সাহার পরিবারে এই ইনিংসকে ঘিরে এমনই উদ্বেগের বাতাবরণ ছিল যে, ইনিংসটি দেখাই হয়নি স্ত্রী রোমির। সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে একাদশীর সন্ধ্যায় সানরাইজ়ার্সের খেলা দেখবেন বলে টিভি চালিয়েছিলেন ঋদ্ধি-পত্নি। জানতেনও না তাঁর স্বামী ততক্ষণে কাগিসো রাবাডা ও আনরিখ নোখিয়ার বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছেন দুরন্ত কিছু শট খেলে। টিভি খুলে রোমি দেখেন ৯ বলে ২২ রানে ব্যাট করছেন ঋদ্ধি। তখনই বন্ধ করে দেন টিভি।

বহু দিন ধরেই ঋদ্ধির ব্যাটিং দেখেন না রোমি। অবশ্যই স্নায়ুর চাপে ভোগেন বলেই এমন সিদ্ধান্ত। মেয়ে আনভি তাঁর মাকে ম্যাচের ধারাবিবরণী দিতে থাকেন। রোমি এ দিন বলছিলেন, ‘‘৮০ রান হওয়ার পরে মনে হয়েছিল, সেঞ্চুরি হয়ে যাবে। তার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। ভেবেছিলাম, এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করলে হয়তো ওকে নিয়ে যাবতীয় সব সমালোচনা বন্ধ হবে।’’

ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলানোর মাঝেই যদিও নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে তাঁর চোট নিয়ে। দুরন্ত ইনিংস খেলার সময়েই কুঁচকিতে চোট পান তিনি। যে কারণে কিপিংও করতে পারেননি। আইপিএল শেষ হলেই ভারতীয় দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সফরে উড়ে যাবেন ঋদ্ধি। তাই বোর্ডের মেডিক্যাল টিমও নজর রাখছে যাতে চোট গুরুতর আকার না ধারণ করে। ঋদ্ধি নিজে যদিও কোনও সমালোচনাতেই মুখ খোলেন না। কিন্তু রোমি বুঝতে পারেন, প্রত্যেক মুহূর্তে কতটা চাপের মধ্যে থাকেন তাঁর স্বামী। বাড়িতে থাকলে আনমনে বসে চিন্তা করেন। রোমির কথায়, ‘‘শুরু থেকেই দেখে আসছি, ওর মধ্যে হেরে যাওয়ার কোনও মানসিকতাই নেই। কেকেআরের বিরুদ্ধে ৩১ বলে ৩০ রান করার পরে ফের সমালোচনা হয়েছিল ওকে নিয়ে। আগেও বলত, ফিরে আসার জন্য একটা ইনিংস যথেষ্ট। সেটাই ফের প্রমাণ করল ঋদ্ধি। এ রকম পরীক্ষার মধ্যে দিয়েই হয়তো খেলে যেতে হবে ওকে।’’

সচিন, সহবাগেরা ঋদ্ধির ইনিংস দেখে আপ্লুত। শাস্ত্রী বরাবরই ঋদ্ধির সমর্থক। এই ইনিংসের পরে তিনি টুইট করেন, ‘‘বিশ্বের সেরা উইকেটকিপারের উদ্দেশ্যে বলছি, অসাধারণ খেলেছো আজ।’’ কিন্তু গ্লাভস হাতে সুপারম্যান হয়ে ওঠা ঋদ্ধির কাছে ব্যাট হাতে শক্তিমান হয়ে ওঠা যেন স্বপ্নই থেকে যায়। ২০১৪ সালের আইপিএলের ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করা সত্ত্বেও সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁকে কখনও ভাবা হয় না। বর্তমান অস্ট্রেলিয়া সফরের ওয়ান ডে অথবা টি-টোয়েন্টি দলেও নেই তিনি।

জনি বেয়ারস্টোর জায়গায় ওপেন করতে নামার আগে ড্রেসিংরুমেই ঋদ্ধিকে পরামর্শ দেন ওয়ার্নার যে, প্রাণ খুলে নিজের ব্যাটিংটা করো। তা হলেই ভাল ফল পাবে। পাওয়ার প্লে-তে ঋদ্ধি ও ওয়ার্নার জুটি যখন ৭০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায়, তখনই টগবগে হয়ে ওঠে হায়দরাবাদ শিবিরে। ঋদ্ধিকে উদ্বুদ্ধ করার নেপথ্যে ছিলেন খলিল আহমেদও। ম্যাচের আগে ঋদ্ধিকে ডেকে তিনি বলেন, ‘‘এই ম্যাচে যখন খেলছ, অন্তত হাফসেঞ্চুরি করতেই হবে।’’ যা স্বীকার করেছেন ঋদ্ধি স্বয়ং। সানরাইজ়ার্সের ইনস্টাগ্রামে তিনি বলেন, ‘‘খলিলের কথা আমার মাথায় ছিল। কিন্তু ব্যাট করার সময় মনে ছিল না। যখন দেখি আমার রান ৪৬, তখন মনে পড়ে খলিলের কথা।’’ হাফসেঞ্চুরির পরে তাই খলিলের দিকেই ব্যাট তোলেন ঋদ্ধি। এমনকি সানরাইজ়ার্স ড্রেসিংরুমেও নতুন ধ্বনি উঠেছে ঋদ্ধিকে নিয়ে। ম্যাচ শেষে প্রত্যেকে গেয়ে ওঠেন, ‘‘সা-হা-হা, সা-হা-হা, সা-হা-হা।’’

IPL 2020 Wriddhiman Saha David Warner Sunrisers Hyderabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy