Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

এটাও একটা বাংলা টিম যার ক্যাপ্টেন দিদি

কয়েক ঘণ্টা আগে হাওড়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছে তাঁর। বৈঠক থেকে শুরু করে নানাবিধ ব্যস্ততার ফাঁকে লক্ষ্মীরতন শুক্ল আন্দদবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন...কয়েক ঘণ্টা আগে হাওড়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছে তাঁর। বৈঠক থেকে শুরু করে নানাবিধ ব্যস্ততার ফাঁকে লক্ষ্মীরতন শুক্ল আন্দদবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন...

নিজের পাড়ায়। প্রার্থী হওয়ার পরে শুক্রবারের লক্ষ্মীরতন।

নিজের পাড়ায়। প্রার্থী হওয়ার পরে শুক্রবারের লক্ষ্মীরতন।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০৩:১১
Share: Save:

প্রশ্ন: আজকের পর অনেকে বুঝে পাচ্ছেন না আপনার পরিচয়টা এ বার থেকে কী হওয়া উচিত? ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্ল? নাকি রাজনীতিবিদ এলআরএস?

লক্ষ্মী: এক মিনিট, আমার পরিচয় পাল্টানো আসছে কোথা থেকে?

প্র: মানে? আপনাকে আজ হাওড়া উত্তরের বিধানসভা প্রার্থী করা হল। এখন থেকে তো আপনি পুরোদমে রাজনীতির লোক।

লক্ষ্মী: সে ভাবে ভাবি না আমি। খেলতাম যখন, বাংলা ক্রিকেটকে সার্ভ করেছি। এখন বাংলার মানুষকে করব। হ্যাঁ, আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত। আমি টিএমসির হয়ে নির্বাচনে লড়ছি। আমি দিদির কাছে অসম্ভব কৃতজ্ঞ যে, উনি আমাকে এর যোগ্য ভেবেছেন। কিন্তু তাতে আমার পরিচয় বদলায় না।

প্র: কোথাও গিয়ে তো ব্যাপারটা আলাদা হবে? ক্রিকেট আর রাজনীতির ম্যানুয়াল তো মিলতে পারে না।

লক্ষ্মী: আমি আলাদা কিছু দেখলাম না। হাওড়ার মানুষ আগেও আমাকে ভালবাসতেন, আজও বাসেন। আগেও পাড়ায় বেরোতাম, আজও বেরিয়েছি। বাজারে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকে হাতজোড় করে আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন। শুধু বলেছি আপনারা নন, হাতজোড় আমি করব। আপনারা যাতে ভাল থাকেন, সেটা সর্বশক্তি দিয়ে দেখব। আর এই জীবনটাও ক্রিকেটের মতোই। আগে আমাকে দলে নির্বাচিত হতে হত। ক্যাপ্টেন সিলেক্ট করত। এখানেও তাই হল। এখানে শুধু অন্য একটা টিম বেঙ্গলের জন্য সিলেক্ট হলাম, যার ক্যাপ্টেন দিদি।

প্র: বাংলা থেকে অবসরের পর আপনার রাজনীতিতে আসা নিয়ে প্রচুর জল্পনা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ রাজনীতিতেই কেন?

লক্ষ্মী: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে। আমি বরাবর ভালর সঙ্গে চলতে চেয়েছি। থাকতে চেয়েছি এমন কারও সঙ্গে যাতে সমাজের উন্নতি হবে। দিদি তাই। ওঁকে দেখেই আসা। ওই একই আবেগ আমার মধ্যেও আছে। ওঁকে ধন্যবাদ।

প্র: ক্রিকেটে আপনার একটা মডেল ছিল যে, হৃদয় দিয়ে খেলো। কথাটা বলতেনও। রাজনীতির এলআরএস মডেলটা কী হবে?

লক্ষ্মী: একই হবে। দিল সে খেলো। যা করব, মন থেকে করব। এখানে টিম পশ্চিমবঙ্গ খেলবে। তার মানুষ খেলবে। আমি নই। আমি শুধু দেখব তাঁরা যেন চার-ছয় মারেন। তাঁরা যেন সেঞ্চুরি করেন। তাতে তাঁরা ভাল থাকবেন। আমার লক্ষ্যপূরণও হবে।

প্র: পুরোটা ভাল না-ও হতে পারে। ব্যর্থতাও আসতে পারে। আশার চাপ তো কম হবে না।

লক্ষ্মী: হোক না চাপ। করুক না আশা। আমি তো পালাচ্ছি না। যারা বাঁচার কথা ভাবে, তারা পালায়। আমি তা ভাবি না। আর বাইরে থেকে রাজনীতির লোকদের সমালোচনা করা সহজ। ময়দানে না নেমে। আমি নামলাম। যা হবে, লড়ে নেব!

প্র: ভয় হচ্ছে না?

লক্ষ্মী: কীসের ভয়?

প্র: এই যে, খেলা থেকে এলেই নির্বাচনে জিতবেন, সেটা সব সময় হয় না। ভাইচুং ভুটিয়ার মতো ব্যক্তিত্বকেও হারতে হয়েছে।

লক্ষ্মী: না লাগে না। আমি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এসেছি, ভয়টা কীসের? আর এলআরএস বরাবর সবুজ পিচে খেলতে ভালবেসেছে। সবুজ পিচ দেখে সে ভয় পায় না!

প্র: লোক জানতে ইচ্ছুক, এর পর ক্রিকেটার লক্ষ্মীর কী হবে?

লক্ষ্মী: কী আবার? সে খেলবে মোহনবাগানের হয়ে। যেমন খেলত। সব সময় নিজের ঘর গোছালে চলে না। অন্যেরটাও গোছাতে হয়। তাই এখানে আসা। যাঁরা গত পঁচিশ বছর ধরে আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন, তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দিতে আসা।

প্র: আর আপনার পরিচয়? সেটা তো বললেন না। ওটা কী দাঁড়াল?

লক্ষ্মী: বাংলার সার্ভিসম্যান। আগে বাংলা ক্রিকেটের ছিল, এখন বাংলার মানুষের। এর বাইরে লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র কোনও পরিচয় নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

laxmi ratan shukla TMC candidate election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE