Advertisement
E-Paper

বিশ্বকাপে ৮ ফুটবলার, তবুও মণিপুরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন জেমসের

চিরকালই মণিপুর ভারতীয় ফুটবলকে প্রচুর ফুটবলার উপহার দিয়েছে। কিন্তু, কী ভাবে? সেই সময় শুধুই ছিল টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি। সেখান থেকেই উঠে আসা তৎকালীন বেশিরভাগ বড় নামেরই। এখন অবশ্য দেশ জুড়ে অনেক অ্যাকাডেমি। কিন্তু মণিপুরে কোথায়?

সুচরিতা সেন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:২৩
ভারতীয় দলের খেলার একটি মুহূর্ত।—ফাইল চিত্র।

ভারতীয় দলের খেলার একটি মুহূর্ত।—ফাইল চিত্র।

চিরকালই মণিপুর ভারতীয় ফুটবলকে প্রচুর ফুটবলার উপহার দিয়েছে। কিন্তু, কী ভাবে? সেই সময় শুধুই ছিল টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি। সেখান থেকেই উঠে আসা তৎকালীন বেশিরভাগ বড় নামেরই। এখন অবশ্য দেশ জুড়ে অনেক অ্যাকাডেমি। কিন্তু মণিপুরে কোথায়? জেমস বলছেন, ‘‘ভারতীয় দলের এই আট জন কেউ মণিপুরে থেকে বড় হয়নি। সবাই ছোটবেলা থেকে ছড়িয়ে গিয়েছিলেন বিভিন্ন অ্যাকাডেমিতে। বেশিরভাগই এআইএফএফ-এর অ্যাকাডেমির প্রোডাক্ট।’’ জেমসের দাবি যাঁরা বড় ফুটবলার হতে চান তাঁরা রাজ্য ছেড়ে চলে যান। আর যাঁদের তেমন কোনও উচ্চাশা নেই, তাঁরা রাজ্যে লিগ খেলেই ভাল থাকেন। কিন্তু, তাঁদের আর কোনও উন্নতি হয় না। সত্যিই তো যে সময় জেমস, রেনেডি সিংহরা উঠেছিলেন তখনকার থেকে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। কিন্তু বদলায়নি মণিপুর ফুটবলের চেহারাটা।

মোহনবাগানের জার্সিতে জেমসের এই লাফ যেন মণিপুর ফুটবলেও দেখতে চাইছেন তিনি। ছবি: জেমসের ফেসবুক থেকে।

জেমসের কথায়: "আমাদের এখানে একটা লিগ আর একটা টুর্নামেন্ট হয় সারা বছরে। ৩-৪ মাসে সব শেষ হয়ে যায় তার পর পুরোটাই বসা। সারা বছর না খেললে ফুটবলাররা ফিটই বা থাকবে কী করে? আর নিজেদের স্কিলের উন্নতিই বা হবে কোথা থেকে?’’ এই ছোটদের দলের খেলাগুলো খুব মন দিয়ে দেখেছেন জেমস। তাঁরই রাজ্যের একঝাঁক ফুটবলার রয়েছে এই দলে। কিন্তু বিশ্বকাপে খেলার মতো যে এই দলের প্রস্তুতি নেই সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন। শনিবার ঠিক যে কথাটা বলেছিলেন মাতোস সেই প্রশ্নই তুললেন জেমস, ‘‘ওদের খেলা দেখছিলাম। তাতে মনে হল, ওরা এই বড় মানের টুর্নামেন্টে খেলার জন্য এখনও ততটা অভিজ্ঞ নয়। যারা বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে তারা সকলেই আগেও বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট খেলেছে। আমার যত দূর মনে হয়, সব দেশই একাধিকবার বিশ্বকাপ খেলেছে। ভারত-সহ দুটো দেশ ছাড়া।" গত কাল মাতোস দাবি করেছিলেন, আরও বেশি বিশ্বমানের প্রতিযোগিতায় খেলতে হবে। তবেই অভিজ্ঞতা বাড়বে। একই কথা বললেন জেমসও, ‘‘সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা। ওদের তো কোনও দোষ নেই। এই মানের টুর্নামেন্টের মানসিকতাটা তো বুঝতে হবে। সেটা কোথায়, ওরা তো খেলেইনি।’’

যদি সাম্প্রতিককালের মণিপুর ফুটবল নিয়ে একটু আশার আলো দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংহ। এমনটাই দাবি করছেন জেমস। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখন এখানেই থাকি। ফুটবল ছেড়ে কোচিং করাচ্ছি এ ডিভিশনের ক্লাবে। সামনে থেকে দেখতে পাচ্ছি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী খেলা নিয়ে কতটা আগ্রহী। মণিপুরের সব খেলা নিয়ে তিনি ভাবছেন। আশা করছি খুব দ্রুত ভাল কিছু হবে।’’ এর সঙ্গেই যোগ করেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলা আটজন প্লেয়ারকে পাঁচ লাখ টাকা করেও দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের পরিবারে যাদের বাড়িতে টিভি ছিল না যাতে তারা ছেলের খেলা দেখতে পারে সে কারণে টিভিও দিয়েছে। আরও অনেক রকম সাহায্য করেছে।’’

তবুও এখনও মণিপুরে থেকে বড় মঞ্চে যাওয়ার রাস্তাটা তৈরি হয়নি। কিন্তু একটা ছোট্ট স্বপ্ন তো দেখাই যেতে পারে। যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিকভাবে অস্থির একটা রাজ্যে যে ফুটবলই সেই সব থেকে দূরে রাখে। সেখানে ভাল ভাবে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করতে চাওয়া পরিবারগুলোর জন্য খেলাটা বেঁচে থাকার একটা রাস্তা। জেমস সিংহের বিশ্বাস এই বিশ্বকাপে তাঁর রাজ্যে আট জনই রাজ্য ফুটবলে হয়তো ঘটিয়ে ফেলবে বিরাট এক পরিবর্তন।

Football Manipur Football Indian Football U-17 World Cup FIFA James Singh জেমস সিংহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy