Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ওজ়িল আচমকা অবসর নেওয়ায় বিস্মিত কোচ লো

ওয়াকিম লো-র এজেন্টের এই বক্তব্য এ দিন ছেপেছে জার্মানির দৈনিক ‘বিল্ড’। তার পরেই ওজ়িলকে নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে।

অজান্তে: লো-র সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেন ওজ়িল। —ফাইল চিত্র।

অজান্তে: লো-র সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেন ওজ়িল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৬
Share: Save:

জার্মানির জাতীয় দল থেকে মেসুত ওজ়িলের অকাল অবসরের খবর শুনে বিস্মিত ওয়াকিম লো-ও। বিশ্বকাপের পরে ছুটি কাটাচ্ছেন লো। তার মধ্যেই শুনেছেন ওজ়িলের অবসরের কথা। তাঁর এজেন্টের মাধ্যমে প্রথম প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে জার্মান কোচের। এজেন্ট বলেছেন, ‘‘সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার আগে জাতীয় কোচকে যোগাযোগ করেননি ওজ়িল। উনি কিছু জানতেন না। আমার মাধ্যমে কোচের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কোনও চেষ্টাও করেননি ওজ়িল।’’

ওয়াকিম লো-র এজেন্টের এই বক্তব্য এ দিন ছেপেছে জার্মানির দৈনিক ‘বিল্ড’। তার পরেই ওজ়িলকে নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে। জার্মানিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, জাতীয় কোচকেও তিনি কেন জানালেন না যে, অবসর নিতে চলেছেন! শুরু হয়েছে কোচের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে জল্পনাও। জার্মানির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর, লো কোচ থাকলে এমনিতেও ওজ়িলের পক্ষে দলে থাকা কঠিন হত।

২৯ বছরের আর্সেনাল তারকা সকলকে অবাক করে দিয়ে বিস্ফোরণই ঘটান জার্মানির জাতীয় দল থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করে। জার্মানি ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট রেইনহার্ড গ্রিনডেলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগও করেন। ওজ়িলের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা জার্মানিতে হলেও তাঁর সঙ্গে তুরস্কের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

ওজ়িলের পূর্বপুরুষরা তুরস্কের। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে আরও অনেকের মতো তুরস্ক থেকে ওজ়িলের পরিবারও চলে এসেছিল জার্মানিতে জীবিকা নির্বাহের সন্ধানে। গেলসেনকির্শেনে এসে ওঠেন তাঁর পিতামহরা। সেখানেই জন্ম ওজ়িলের। তবে কখনওই তিনি তুরস্কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগকে ভোলেননি। বিশ্বকাপ শুরুর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোগানের সঙ্গে দেখা করে ছবি তুলে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। জার্মানিতে অনেকে এর্দোগানকে স্বৈরাচারী হিসেবে দেখেন। কয়েক জন জার্মান সাংবাদিককে তিনি বন্দি করেও রেখেছিলেন। কারও কারও মনে হয়েছিল, নির্বাচনের মুখে দাঁড়ানো এর্গোদান জার্মানির দুই ফুটবলারকে (ওজ়িল এবং গুন্দোগান) ব্যবহার করতে চাইছেন এবং সেটাও বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে। সেই কারণে সেই সময়ে জার্মানিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়াই হয় তাঁদের নিয়ে।

বিশ্বকাপ থেকে জার্মানির অকাল বিদায়ে আরও চাপে পড়ে যান ওজ়িল। রাশিয়ায় তাঁকে বসিয়েও দেন ওয়াকিম লো। তুমুল সমালোচনার মধ্যেই জার্মানির হয়ে আর খেলবেন না বলে জানান তিনি। সঙ্গে বিস্ফোরক বিবৃতিতে জার্মান ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্টকে এক হাত নিয়ে লেখেন, ‘‘গ্রিন্দেল (জার্মানি ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট) এবং তাঁর অনুগামীদের বিচারে যখন জিতি, তখন আমি জার্মান। যখন হারি, তখন আমি অন্য দেশের।’’ কিন্তু অবসরের ঘোষণার পরে জার্মানিতেও ঘুরতে শুরু করেছে হাওয়া। একটি অনলাইন সংস্থা পাঁচ হাজার জার্মানকে ধরে ভোটাভুটি করেছিল। তাতে ৪৯.৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, ওজ়িল-বিতর্কের জেরে জার্মান ফুটবল সংস্থার প্রধান গ্রিন্দেলের পদত্যাগ করা উচিত।

ফুটবল মহলে কিন্তু বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে লো বা তাঁর এজেন্ট ওজ়িলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অন্ধকারে থাকায়। ওজ়িলের পরামর্শদাতার সঙ্গে লো-র এজেন্ট হারুন আর্সলানের ব্যবসায়িক চুক্তিও রয়েছে। তার পরেও জার্মানির জাতীয় দলের কোচের কাছে কেন আগাম খবর পৌঁছল না, সেটাই আশ্চর্যজনক লাগছে অনেকের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Mesut Ozil Joachim Low
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE