হাইট, ছ’ফুট চার ইঞ্চি। ওজন একশো কেজি! কেকেআরের সংসারে এ বছর আবির্ভূত অস্ট্রেলীয় পেসারের চেহারা যতটা চোখে পড়ার মতো, কথাবার্তা ততটাই আটপৌরে। ব্যাগি গ্রিনের পেসার-সুলভ হিংস্রতার ছিটেফোঁটা নেই। শান্ত, চুপচাপ জন হেস্টিংসের কথা শুনলে মনে হবে, ইনি নিশ্চয়ই ক্রিকেটার নন, বরং কোনও স্কুলের শিক্ষক।
খুব একটা ভুল মনে হবে না। জন হেস্টিংসের একটা পরিচয় যদি হয় ক্রিকেটারের, তো তার নেপথ্যে রয়েছে আরও একটা অবতার। জন হেস্টিংস পেসার। জন হেস্টিংস আবার পিটি টিচারও! ‘‘আরে, হাই স্কুল পাশ করার পরপর ওই ডিগ্রিটা নিয়ে রেখেছিলাম। আসলে আমার মা-ও ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার। ব্যাপারটা পরিবারেই রয়েছে বলতে পারেন। আমিও কোর্সটা করে রেখেছি। যে দিন আর ক্রিকেটটা খেলতে পারব না, সে দিন দেখবেন আমি কোনও স্কুলের পিটি টিচার হয়ে গিয়েছি!’’ বলছিলেন হেস্টিংস।
টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর প্রথম শিকার এবি ডে’ভিলিয়ার্সের মতো একটা সময় চুটিয়ে রাগবি খেলেছেন হেস্টিংস। হলিউডের কাউবয় সিনেমার ভক্ত মা-বাবা তাঁর নাম রেখেছিলেন জন ওয়েন হেস্টিংস। বিখ্যাত মার্কিন অভিনেতা জন ওয়েনের নামের সঙ্গে মিলিয়ে। সেই জন এখন মজেছেন বলিউডে। আরও ভাল করে বললে, শাহরুখ খানে।
কেকেআরের শ্যুটে অস্ট্রেলীয়কে দিয়ে শাহরুখের কিছু বিখ্যাত সংলাপ বলানো হচ্ছিল দিনকয়েক আগে। রিকি পন্টিংয়ের দেশের মানুষ খাঁটি হিন্দিতে কথা বলতে গেলে যা হওয়া সম্ভব, হয়েছিলও ঠিক তাই। গোটা টিম তাঁর কাণ্ড দেখে নাকি হাসি চাপতে পারেনি। হেস্টিংস ভালই জানেন সেটা। তবে হিন্দি বলতে পারুন বা না পারুন, শাহরুখ খানের বিরাট ‘ফ্যান’ তিনি। ‘‘ওই শ্যুটটায় দারুণ মজা হয়েছে। আর শাহরুখকে তো রোজ টিভিতে দেখি। ওঁর মতো প্রতিভাবান ব্যক্তিত্বকে সম্মান না করে পারা যায় না,’’ বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অস্ট্রেলীয়। টিম মালিকের সঙ্গে এখনও দেখা করতে না পারার আফসোস তাঁর কথায় স্পষ্ট। একই সঙ্গে তিনি ভেবে পাচ্ছেন না, যে দিন সত্যি সত্যি শাহরুখের সঙ্গে দেখা হবে, সে দিন কী করবেন! ‘‘উফ! ভাবতেই পারছি না খুব তাড়াতাড়ি শাহরুখের সঙ্গে দেখা করব! আমি যে কতটা উত্তেজিত, বলে বোঝানো যাবে না।’’
বলিউডে শাহরুখ, আর ক্রিকেট মাঠে বিরাট কোহালির ভক্ত হেস্টিংস। তিনি মনে করেন, সাম্প্রতিক ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্টিভ স্মিথ আর বিরাট, এই দুইকে বল করা সবচেয়ে কঠিন। ‘‘আমার ভাগ্য ভাল যে স্মিথকে বল করতে হয় না। কিন্তু বিরাট! ও যে ভাবে ক্রিকেট খেলে, সেটাকে ভালবেসে ফেলেছি। গোটা মাঠে শট খেলতে পারে। মনে হয় ও যেন বুঝতে পারে, পরের বলটা কী হতে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোহালিতে আমাদের বিরুদ্ধে যা খেলল, ওটা আমার দেখা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস। হ্যাটস অফ!’’
মাথার চুল বেশ কয়েক দিন হল কমতে শুরু করেছে হেস্টিংসের। আর কয়েক দিন পর ফের সামনে বিরাট কোহালি। এর মধ্যে ইন্দ্রলুপ্ত আরও একটু প্রকট হলে বোধহয় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy