ত্রাতা: ৯০তম মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে দুরন্ত গোল মেসির। গেটি ইমেজেস
ভিয়ারিয়াল ৪ • বার্সেলোনা ৪
রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে উঠে এলেন তিনি। তার পর যথারীতি বার্সেলোনাকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন লিয়োনেল মেসি। সঙ্গী লুইস সুয়ারেস। ব্রাজিলীয় নেমার ছেড়ে চলে যাওয়ায় ভেঙে গিয়েছে এমএসএন ত্রয়ী। দেখা যাচ্ছে, স্প্যানিশ লিগে অন্তত এমএস জুটিও ফুটবল জাদু দেখানোর ব্যাপারে পিছিয়ে নেই।
মঙ্গলবার রাতে যেমন লা লিগার ম্যাচে ভিয়ারিয়ালের মাঠে তাদের বিরুদ্ধে ২-৪ পিছিয়ে থেকেও অবিশ্বাস্য ভঙ্গিতে ৪-৪ করেই মাঠ ছাড়ল বার্সেলোনা। হারতে হারতে ড্র করে লা লিগায় খেতাব জয়ের দৌড়ে দারুণ ভাবেই টিকে রইল তারা। নভেম্বর থেকে ধরলে এই প্রথম লা লিগায় ম্যাচ হারার আতঙ্ক তাড়া করছিল মেসিদের। শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও তারা ২-৪ গোলে পিছিয়ে ছিল। পরিবর্ত হিসেবে নামা মেসি দুর্ধর্ষ ফ্রি-কিকে ৯০তম মিনিটেই ৩-৪ করেন। সংযুক্ত সময়ে বাঁ পায়ের জোরাল শটে ৪-৪ করেন লুইস সুয়ারেস।
দুই মহাতারকা মেসি ও সুয়ারেসকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের মধ্যেও বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত হচ্ছেন আরও এক জন। তিনি— সান্তি কাসোরলা। চোট-আঘাতে জর্জরিত হয়ে যাঁর ফুটবল খেলাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আটটি অস্ত্রোপচারের যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল, ডান পা-টাই না হারাতে হয়। ২০১৭-১৮ মরসুমে একটিও ম্যাচ খেলতে না পারায় আর্সেনাল আর তাঁর চুক্তি নবীকরণ করেনি। তবু গত ডিসেম্বরেই ৩৪ বছরে পা দেওয়া কাসোরলাকে সই করায় ভিয়ারিয়াল। স্প্যানিশ ক্লাবের সেই আস্থার মর্যাদা দিচ্ছেন কাসোরলা। মঙ্গলবার রাতে বার্সেলোনার মতো দলকে কোণঠাসা করে ফেলার ইঞ্জিন ছিলেন তিনিই।
একই দিনে নিজেদের মাঠে আতলেতিকো দে মাদ্রিদ ২-০ জিতেছে জিরোনার বিরুদ্ধে। আতলেতিকোই এখন দুই নম্বরে। ড্র করায় এখনও আট পয়েন্টে এগিয়ে বার্সেলোনা। হেরে গেলে ব্যবধান কমে যেতে পারত। বার্সেলোনার এখন ৭০ পয়েন্ট, আতলেতিকোর ৬২। আটটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। আগামী শনিবার, এই দুই দলের ডার্বির উপর অনেকটাই নির্ভর করতে পারে খেতাবের ভাগ্য।
মেসি, জেরার পিকে, ইভান রাকিতিচ— তিন প্রধান ফুটবলার এই ম্যাচে প্রথম থেকে খেলছিলেন না। তা সত্ত্বেও বার্সেলোনা দ্রুতই দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল। ফিলিপে কুটিনহো ১২ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করেন। ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ম্যালকম হেডে দ্বিতীয় গোলটি করেন। কিন্তু অবনমনের আতঙ্ক থেকে কার্যত এক পয়েন্ট এগিয়ে থাকা ভিয়ারিয়াল দুর্দান্ত ভাবে ম্যাচে ফিরে আসে। প্রথমার্ধেই তারা ব্যবধান কমায় ১৯ বছরের স্যামুয়েল চুকুউয়েজ়ে মারফত। এর পর ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার কার্ল টোকো একাম্বি বার্সেলোনা গোলকিপার মার্ক-আন্দ্রে তার স্তেগানের অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে ২-২ করে ফেলেন। হাফটাইমের পরে ভিসেন্তে ইবোরা ভিয়ারিয়ালকে এগিয়ে দেন। এই সময়েই বেঞ্চ থেকে উঠিয়ে মেসিকে মাঠে নামাতে বাধ্য হয় বার্সেলোনা। তক্ষুনি কোনও ফল পাওয়া যায়নি। বরং ভিয়ারিয়ালের পরিবর্ত খেলোয়াড় কার্লোস বাক্কা দলের চতুর্থ গোল করে রূপকথার জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন।
ভিয়ারিয়ালের আলভারো গঞ্জালেস দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বহিষ্কৃত হলেন। তখন ম্যাচের চার মিনিট বাকি। হাতে থাকা সেই স্বল্প সময়েই প্রতিপক্ষের দশ জন হয়ে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে রুদ্ধশ্বাস ড্র ছিনিয়ে নেন মেসি এবং এবং সুয়ারেস। ম্যাচের পরে সুয়ারেস বলেন, ‘‘যে রকম হার-না-মানা মনোভাব আমরা দেখিয়েছি, শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছি, সেটা প্রমাণ করে দিচ্ছে, আমরা কতটা মরিয়া ভাবে লিগ জিততে চাই।’’ চলতি মরসুমে লা লিগায় মেসি এবং সুয়ারেস মিলে ৫১ গোল করে ফেললেন। সুয়ারেস যখন শেষ গোলটি করেন, তখন খেলা শেষ হতে বাকি আর মাত্র চার সেকেন্ড!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy