Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মোহনবাগানের উচিত আজ কাতসুমিকে ফ্রি খেলানো

আইজলের সঙ্গে মোহনবাগানের এ বারের ম্যাচটা আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে সতেরো বছর আগের স্মৃতি। ১৯৯৯-২০০০। সে বারও একই অবস্থা হয়েছিল মোহনবাগানের। গোয়ার মাঠে শেষ দু’টো ম্যাচ ছিল।

মহড়া: আইজলে কঠিন ম্যাচের প্রস্তুতিতেও হাল্কা মেজাজ দেখা গেল মোহনবাগান শিবিরে। —নিজস্ব চিত্র।

মহড়া: আইজলে কঠিন ম্যাচের প্রস্তুতিতেও হাল্কা মেজাজ দেখা গেল মোহনবাগান শিবিরে। —নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০৪
Share: Save:

আইজলের সঙ্গে মোহনবাগানের এ বারের ম্যাচটা আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে সতেরো বছর আগের স্মৃতি।

১৯৯৯-২০০০। সে বারও একই অবস্থা হয়েছিল মোহনবাগানের। গোয়ার মাঠে শেষ দু’টো ম্যাচ ছিল। ডেম্পো এবং চার্চিল ব্রাদার্সের সঙ্গে। ডেম্পো ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতাম আমরা । কিন্তু ম্যাচটা ড্র হয়ে যাওয়ায় পরের চার্চিল ম্যাচটা জিততেই হতো চার্চিলের বিরুদ্ধে। ড্র করলেও ছিটকে যেতাম আমরা। এই অবস্থায় তীব্র চাপের মুখেও ম্যাচটা আমরা জিতেছিলাম। আব্দুল স্যালিউয়ের গোলে। এবং কোচিং জীবনের প্রথম জাতীয় লিগটা জিতেছিলাম।

গত কয়েক দিন ধরে যেখানেই যাচ্ছি, সবাই প্রশ্ন করছে— বাবলুদা, আপনি যদি এ বারের টিমের কোচ হতেন, তা হলে কী স্ট্র্যাটেজি নিতেন আইজল ম্যাচে? কারণ ম্যাচটা ড্র করলেও খেতাব জয়ের আশা বেঁচে থাকবে মোহনবাগানের। আমি মনে করি, সঠিক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করার জন্য সঞ্জয় সেন-ই সেরা লোক। কিন্তু ও যদি আমার কাছে পরামর্শ চায়, তা হলে আমি বলব, ড্র-এর ভাবনা সনিদের মাথায় একদমই ঢুকতে দিও না, সঞ্জয়। কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের রাস্তা খোলার চেষ্টা করো।

লিগ জয়ের অঙ্ক

• শনিবার আইজলকে এক গোলে হারালেই হোম এবং অ্যাওয়ে ম্যাচ জেতার সুবাদে চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান।

• আইজল এফসি যদি শনিবার দুই বা তার বেশি গোলের ব্যবধানে জেতে তা হলে আই লিগ জিতবে তারা।

• শনিবার ম্যাচ ড্র হলে শেষ ম্যাচে চেন্নাই সিটি এফসি-কে হারালেই চ্যাম্পিয়ন হবে মোহনবাগান।
মোহনবাগান যদি সেই ম্যাচে হারে বা ড্র করে, তা হলে লিগ জিততে শেষ ম্যাচে লাজং-এর
বিরুদ্ধে পাঁচ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে আইজল এফসি-কে

• শনিবার মোহনবাগান যদি আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে এক গোলের ব্যবধানে হারে, তা হলে আই লিগ ঘরে তুলতে
শেষ ম্যাচে মোহনবাগানকে শুধু জিতলেই হবে না। লাজং-এর বিরুদ্ধে হারতে হবে আইজল এফসি-কে।

আমি যে বার প্রথম জাতীয় লিগ জিতেছিলাম সে বার তিন জন ভাল বিদেশি ছিল। স্টিফেন আবরোহি, হোসে ব্যারেটো আর ইগর স্কিভরিন। তিনজনই গোলটা চিনত। কিন্তু আমি এত অস্ত্র নিয়েও অলআউট ঝাঁপাইনি। দু’টো ম্যাচে ফর্মেশন রেখেছিলাম ৪-৩-২-১। ইগর গোলটা চিনত, এ বারের ড্যারেল ডাফির মতোই। ওকে সামনে রেখে নীচের দিকে থেকে খেলাতাম ব্যারেটো আর স্টিফেনকে। লক্ষ্য একটাই, মাঝমাঠকে জমাট করা। কিছুতেই গোল খাওয়া চলবে না।

সঞ্জয় এটা করতেই পারে আজ। ওর হাতে সনি, ডাফি, কাতসুমি-র মতো বিদেশি আছে। আর একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। পাহাড়ি দলগুলোর সেরা অস্ত্র ওদের গতি আর লড়াকু মানসিকতা। সেটা মাথায় রেখেই খেলাটা স্লো করে দিতে হবে মোহনবাগানকে। বল নিজেদের দখলে রাখতে হবে। পাসিং ফুটবল খেলে আইজলকে হতোদ্যম করে দিতে হবে।

আমার মতে, সনিকে বাঁ দিকে রেখেই খেলানো উচিত। ওর আউটসাই়ড ডজটা ভাল। তবে কাতসুমিকে ‘ফ্রি’ ফুটবলার হিসাবে খেলানো উচিত সঞ্জয়ের। ওর প্রচণ্ড দম। সারাক্ষণ দৌড়োয়। রক্ষণের সামনে এবং আক্রমণে লোক বাড়াতে জাপানি অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত।

আইজলের খেলা আমি দেখেছি। ওদের স্ট্রাইকার কামো স্টিফেন বায়ি ছেলেটা কলকাতা লিগে ছোট টিমে খেলত। আইজলের হয়ে গোল করছে। এদুয়ার্দো-আনাসরা ঠিকঠাক জোনাল মার্কিংয়ে রাখতে পারলে কামো আটকে যাবে। আর একটা কথা বলি, স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকদের মধ্যে বিভাজন আনার জন্য স্থানীয় ছেলে জেজে-কে খেলানো উচিত শুরু থেকেই। এটাও ট্যাকটিক্সের অঙ্গ।

পাহাড়ি টিমকে হারাতে গেলে ওদের ফাইনাল ট্যাকলে যেতে হবে। আর পিছন থেকে কভার করতে হবে একজনকে। সঞ্জয়, মনে রেখো, আইজলের অভিজ্ঞ ছেলে কম। একটু ধরে খেললে ওরা স্বস্তিতে থাকতে পারবে না। ওদের উদ্বেগ বেশি। ঘরের মাঠে জেতার চাপটাই তো ভয়ঙ্কর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE