Advertisement
১৯ মে ২০২৪
সোনার গ্লাভসের রাত

গুরু জিজির সঙ্গে আজ টক্করে সুপারম্যান

মোটামুটি একটা বিতর্ক সভাই বসে গিয়েছে বলতে গেলে। দিনো জফ, জেন্স লেম্যান কেউ বাদ নেই। লেম্যান একটু হলেও ম্যানুয়েল ন্যয়ারের দিকে ঝুঁকে। আসলে জিয়ানলুইগি বুঁফোর একটা খুঁত প্রাক্তন জার্মান কিপারের চোখে ধরা পড়ছে। ‘‘কোনও সন্দেহ নেই যে, বুঁফো বিশাল গোলকিপার। কিন্তু আমার মনে হয় ও যদি অন্য দেশের লিগেও খেলত, খুব ভাল হত,’’ বলছেন লেম্যান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:০১
Share: Save:

মোটামুটি একটা বিতর্ক সভাই বসে গিয়েছে বলতে গেলে। দিনো জফ, জেন্স লেম্যান কেউ বাদ নেই। লেম্যান একটু হলেও ম্যানুয়েল ন্যয়ারের দিকে ঝুঁকে। আসলে জিয়ানলুইগি বুঁফোর একটা খুঁত প্রাক্তন জার্মান কিপারের চোখে ধরা পড়ছে। ‘‘কোনও সন্দেহ নেই যে, বুঁফো বিশাল গোলকিপার। কিন্তু আমার মনে হয় ও যদি অন্য দেশের লিগেও খেলত, খুব ভাল হত,’’ বলছেন লেম্যান। সঙ্গে যোগ করছেন, ‘‘আমি বলছি না যে, বুঁফো ভাল নয়। অসাধারণ কিপার। সেরি এ, ইতালির হয়ে যা করেছে, তাতে অসাধারণ ওকে বলতেই হবে। কিন্তু নয়্যার একটু হলেও ওর চেয়ে এগিয়ে। কারণ ও বুঁফোর থেকেও শিখেছে।’’

জফ ও সবে ঢুকতেই চান না। কিংবদন্তি ইতালি কিপার কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে সেই তর্কে যেতে চান না। বরং দু’জনকে লড়িয়ে দিতে চান। ‘‘কে ভাল, কে খারাপ সেটা ভেবে লাভ নেই। দু’জনেরই আলাদা স্টাইল আছে। দু’জনেই গোলের নীচে অসম্ভব ভাল। আমি তো বলব লড়িয়ে দাও দু’জনকে। ওতেই সবচেয়ে ভাল হয় ফুটবল খেলাটার।’’

বিতর্ক সভা কোন দু’জনকে নিয়ে এর পর মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। এবং জফের ইচ্ছেপূরণও ভারতীয় সময়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে হয়ে যাচ্ছে। জুভেন্তাস বনাম বায়ার্ন মিউনিখ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে।

জিয়ালুইগি বুঁফো বনাম ম্যানুয়েল ন্যয়ার মঙ্গলবার রাতে হচ্ছে।

এক-এক সময় যে রাতকে একটু ব্যতিক্রম, একটু অন্য রকম মনে হবে। টিভির এক চ্যানেলে আর্সেনালের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের আগুনে আক্রমণ। ঠিক একই সময়ে আবার অন্য চ্যানেলে চলবে দুই মহাতারকা গোলকিপারের লড়াই। একজন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের কিপার। ম্যানুয়েল ‘সুইপার কিপার’ নয়্যার মোটামুটি কিপিং ম্যানুয়েলই পাল্টে ফেলার দিকে। দাঁড়াবেন বায়ার্ন পোস্টে। জুভেন্তাস পোস্টের নীচে আবার দাঁড়িয়ে থাকবেন বুঁফো। বয়স আটত্রিশ, কিন্তু শরীরে এখনও উনিশের ক্ষিপ্রতা। এবং ইনিও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। দশ বছর আগে জার্মান বিশ্বকাপে।

ইন্টারনেট খুঁজলে দু’জনকে নিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত সব তথ্য পাওয়া যাবে। যেমন বুঁফো যদি তেরো বছর বয়সে জীবনে প্রথম বার গোলের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, তা হলে নয়্যার দাঁড়িয়েছিলেন মাত্র চার বছর বয়সে। কিন্তু পরিবারে খেলাধুলোর সংস্কৃতির বিচারে বুঁফো আবার আলোকবর্ষ এগিয়ে। বাবা আদ্রিয়ানো ছিলেন ওয়েটলিফটার। মা ডিসকাস থ্রোয়ার। সব মিলিয়ে বুঁফোর পরিবারের ছ’জন খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িয়ে। নয়্যারের ভাই মার্সেল সেখানে শুধু জার্মানির অখ্যাত লিগে রেফারিং করেন। কিন্তু ফুটবল বোধ, কিপিং দক্ষতা দু’জনকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সম্মানের একই মঞ্চে। একজন আবেগের সঙ্গে অভিজ্ঞতাকে মিশিয়ে কালজয়ী। আর একজন ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আধুনিকতাকে মিশিয়ে ‘সুপারম্যান’।

জিজি বুঁফো ও সুপার ন্যয়ার।

মঙ্গলবারের যুদ্ধের আগে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব উত্তরের তালাটা খোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। মানে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে। খুলে দিলেন ন্যয়ার নিজে। ‘‘জিজি কি আজকের প্লেয়ার? এত দিন ধরে খেলছে! আমি ওকে অসম্ভব সম্মান করি। ওকে আমি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে দেখেছি। ইতালির হয়ে দেখেছি। আমার ও রোল মডেল।’’ সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন, ‘‘ওর মতো চল্লিশ পর্যন্ত খেলতে পারব কি না জানি না। অন্তত উনত্রিশে দাঁড়িয়ে বলা সম্ভব নয়।’’ বায়ার্ন কিপার সরাসরি না বলেও অনেক কিছু বলে দিলেন। বুঁফো কিছু বলেননি। মুশকিল হল, কিংবদন্তিরা তো আবার কিছু বলেন-টলেন না।

সোজা করে দেখান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

buffon uefa cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE