লড়েও হার। বুধবার ম্যাচের পরে মাশরাফি।
বেঙ্গালুরুতে যে এ রকম হবে আমরা কেউ ভাবতেই পারিনি। বাংলাদেশ জিতছে ধরেই আমরা রিপোর্ট লিখতে বসে গিয়েছিলাম। কিন্তু দু’টো বলে সব বদলে গেল। আমাদেরও সব আবার পাল্টাতে হল।
বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমের কথা আর কী বলব? বিধ্বস্ত বললেও কম বলা হয়। আমরা আগেও হেরেছি। বিশ্রী ভাবেও হেরেছি। দু’বছর আগে আফগানিস্তান বা হংকংয়ের বিরুদ্ধে তো হারই দেখতে হয়েছে। কিন্তু এই হারের যন্ত্রণাটা অনেক বেশি। আমাদের ক্যাপ্টেন মাশরাফি মর্তুজার উপলব্ধি যে, টিম অন্তত টাইয়ের জন্য ঝাঁপাতে পারত। তিন জন ব্যাটসম্যান যদি একটা রানও নিত ম্যাচ সুপার ওভারে চলে যেত। আমাদের মুস্তাফিজুরের মতো বোলার ছিল ম্যাচ সুপার ওভারে গেলে। একটা সুযোগ তো থাকত।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ভাল খেলতে পারে না বলে বদনামের পাল্টা, ভারতের মাঠে ভারতকে হারানো, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো একটা মঞ্চে মুখের মতো জবাব দেওয়ার সুযোগ হারানোর আফশোস কিছুতেই যেন ভুলতে পারছিল না টিম। আজ মুশফিকুর ফেসবুকে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘‘...হয়তো আমার জন্যই দল হেরে গিয়েছে। দেশবাসীর কাছে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আশা করি এটা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে আপনাদের মুখে আবার হাসি এনে দিতে পারব।’’ কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, মাশরাফি কিন্তু কাউকে হারের জন্য দায়ী করেননি। দলের কেউই করছে না। মাশরাফি বলেছেন, মুশফিকুর বা মাহমুদউল্লাহ এই অবস্থা সামলানোর আদর্শ ব্যাটসম্যান। দু’জনেরই ঠাণ্ডা মাথার। তার পরও যা হয়েছে তাতে কারও হাত নেই। কারও কিছু করার ছিল না।
টিম বৃহস্পতিবার কলকাতায় ঢুকে গেল। আর ক্যাপ্টেনের ভোকাল টনিকের জন্যই হয়তো গত কালের থেকে দলের ছবিটা আজ অনেকটা ভাল। মাশরাফি টিমের মনোবল ফেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই বলে যে, আমরা কাল ২৩৭টা বল জিতেছি। তিনটে বল হেরেছি। আজ হয়তো পারিনি, কিন্তু একদিন ঠিক পারব। তা ছাড়া ভারতের স্টেডিয়ামে এ ভাবে চল্লিশ হাজার দর্শকের প্রবল শব্দব্রহ্মের সামনে খেলার অভিজ্ঞতা খুব বেশি আমাদের নেই। তাই চাপের সাঁড়াশিটা বেঙ্গালুরুতে বুধবার আরও চেপে ধরেছিল হয়তো। এ রকম পরিস্থিতিতে একশো বারের মধ্যে নিরানব্বই বার ব্যাটিং টিম জিতবে। কিন্তু বুধবার কী ভাবে তিন জন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান এক রান করতে পারল না তার কোনও ব্যখ্যা নেই।
এই অবস্থায় শনিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলকে তাতানো সোজা নয়। কিন্তু মাশরাফি সেটা করছেন। বলছেন যে, দেখো গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল টিম হিসেবে ধরা হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডকে। আজ তারাই কি না গ্রুপের বাকি তিনটে টিমকে হারিয়ে দিয়েছে। নিজেদের ক্ষমতা কতটা, দেখিয়ে দিয়েছে। এখন আমরা যদি সেই নিউজিল্যান্ডকেই শেষ ম্যাচে হারাই তা হলে সবাই বুঝবে আমরাও কতটা শক্তি ধরি। ভারত ম্যাচ হারলেও যদি আমরা নিউজিল্যান্ডকে হারাই, প্রমাণ হয়ে যাবে টি-টোয়েন্টিতে আমরাও স্বীকৃত শক্তি।
শেষ যুদ্ধে বাংলাদেশের কাছে এটাই এখন বিশ্বাসের জপমন্ত্র।
(লেখক দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy