ফুটবল পায়ে অনেক দূর যাওয়ার স্বপ্নটা ছিলই। কিন্তু কখনও ভাবেনি ভুবনেশ্বরের বস্তি থেকে জার্মানির আকাশ ছুঁতে পারবে সেই ছেলে। প্রতিভা বোধ হয় একেই বলে। বদলে যাওয়া জীবনের খোঁজে নতুন স্বপ্নে মেতে ওঠার আগে যেন এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না চন্দনের পরিবারের। ভুবনেশ্বরের সবর সাহি বস্তিতে বসে চন্দন নায়েক ভাবতএক দিন দেশের জার্সি পরে ফুটবল মাঠে নিজের কৃতিত্ব দেখাবে।। কিন্তু বায়ার্ন মিউনিখের দরজা এ ভাবে খুলে যাবে তা কে ভেবেছিল। একটা ট্রায়াল আর সেখান থেকেই বাজিমাত। এখন নতুন করে ভারতের জার্সির স্বপ্নটা জাঁকিয়ে বসছে। আত্মবিশ্বাসটাও বেড়ে গিয়েছে এক ধাক্কায়। আর্জেন্তিনার সমর্থক মেসির ভক্ত অবশ্য বলে দিলেন, ‘‘আমি দারুণ খুশি। এক দিন দেশের হয়ে খেলতে চাই। আমার কোচের জন্যই সবটা সম্ভব হয়েছে।’’
নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে জার্মানি কেন, দেশের মধ্যেকার কোনও ভাল অ্যাকাডেমিও চন্দন আর তার পরিবারের কাছে বিলাসিতা। সেই চন্দনই অনেকের মধ্যে থেকে জায়গা করে নিয়েছে এই শিবিরে। চন্দনের কোচ জয়দেব মহাপাত্র জানেন আসল সত্য। সামনে থেকে দেখেছেন চন্দন ও তার পরিবারের লড়াই। ছাত্র এত বড় সুযোগ পাওয়ায় খুশি তিনি। বলেন, ‘‘ও খুব প্রতিভাবান। খুব ছোট্ট বেলায় ওকে দেখেই বুঝেছিলাম। গত তিন-চার বছর ধরে ও আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করছে। গত এক বছরে ওকে সেরা ট্রেনিং দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ১১ বছর বয়েসে ওড়িশা দলের হয়ে খেলার সুযোগ আসে। তিনিই ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। এই শিবিরে সুযোগের বয়স ছিল ১৪ থেকে ১৬। ওর বয়স ১১। অনেক বলার পর ওকে দলে নেওয়া হয়। সুযোগ পেয়ে ও সবাইকে চমকে দিয়েছে।’’
পুণেতে গিয়েও সুনীল ছেত্রীকে চমকে দিয়েছিল এই ছেলে। জন্মের পরই চন্দনের বাবা তাঁর মাকে ছেড়ে চলে যায়। মা লোকের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে ফুটবলার তৈরি করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।। জার্মানিতে দু’মাসের ট্রেনিং শেষে দেশে ফিরে ভারতীয় ফুটবলে নিজেকে চেনানোর লড়াই শুরু করবেন চন্দন। ২৫ অগস্ট জার্মানির উদ্দেশে রওনা দেবে চন্দন। যেখানে ফিলিপ লামের নেতৃত্বে ট্রেনিং করার সুযোগ পাবে। বিশ্বের সেরা কোচেদের নেতৃত্বে এই দু’মাস ট্রেনিং করবে । মেসি ভক্তের কাহিনী অনেকটা তাঁরই মতো। সেটাই তাঁকে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে। ঠিক যে ভাবে আর্জেন্তিনার দুঃস্থ এলাকা থেকে বার্সেলোনায় সুযোগ পেয়ে যাওয়া। মেসির তখন বয়স ছিল সাত। চন্দন এখন ১১। কে বলতে পারে বায়ার্নে দু’মাসের এই ট্রেনিং বদলে দেবে না চন্দনের জীবন।
আরও খবর
দীপা’র কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে রীতা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy