Advertisement
০৭ মে ২০২৪

এএফসি কাপে জয়ের হ্যাটট্রিক বাগানের

স্বদেশে বা বিদেশে। ভারতের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট আই লিগ বা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কাপ— কোথাও রোখা যাচ্ছে না সনি-কাতসুমি-জেজেদের। দুই টুর্নামেন্ট মিলিয়ে টানা দশ ম্যাচ অপরাজিত মোহনবাগান।

গুয়াহাটিতে জেজের দিন। বুধবার। -উজ্জ্বল দেব

গুয়াহাটিতে জেজের দিন। বুধবার। -উজ্জ্বল দেব

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৬ ০৩:২৭
Share: Save:

এএফসি কাপে জয়ের হ্যাটট্রিক বাগানের

মোহনবাগান ৩ : ইয়াঙ্গন এফসি ২

(সনি, জেজে ২) (ফার্নান্ডেজ পেনাল্টি সহ ২)

মায়ানমারের শক্তিশালী ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গেল সঞ্জয় সেনের অশ্বমেধের ঘোড়া।

স্বদেশে বা বিদেশে। ভারতের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট আই লিগ বা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কাপ— কোথাও রোখা যাচ্ছে না সনি-কাতসুমি-জেজেদের। দুই টুর্নামেন্ট মিলিয়ে টানা দশ ম্যাচ অপরাজিত মোহনবাগান। এএফসি কাপে গ্রুপের তিন দল— মলদ্বীপের মাজিয়া, হংকংয়ের সাউথ চায়নার পর বুধবার মায়ানমারের ইয়াঙ্গনকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিকও করে ফেলল সবুজ-মেরুন। এই মুহূর্তে এএফসি-তে নিজেদের গ্রুপে শীর্ষে সঞ্জয়ের দল। ঠিক আই লিগের মতো।

সঞ্জয় সাধারণত দলের জয়ের পর সে ভাবে উচ্ছ্বাস দেখান না। কিন্তু এ দিন ম্যাচ শেষে বাগান কোচকে বিরল মেজাজে পাওয়া গেল গুয়াহাটি থেকে ফোনে। বলে দিলেন, ‘‘যে বিদেশি টিমের বিরুদ্ধে আজ খেললাম সেটা আমাদের গ্রুপে সবচেয়ে শক্তিশালী। ওরা পেনাল্টি থেকে ২-১, তার পরে ২-২ করার পরেও যে ভাবে আমার ছেলেরা কামব্যাক করেছে সেটাই আমাকে আসল স্বস্তি দিয়েছে।’’

ইয়াঙ্গনের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ফার্নান্ডেজ জোড়া গোল করে ম্যাচে নিজের দলকে পুরোপুরি ফিরিয়ে এনেছিলেন। গুয়াহাটিতে বিরতির আগে এবং পরে ওই দুটো সময়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল বাগান। সনি এবং জেজে ২-০ এগিয়ে দেওয়ার পর ফার্নান্ডেজ ব্যবধান কমান পেনাল্টি থেকে। তাঁকে বক্সে ট্যাকল করতে গিয়ে নিজের হাতে বল লাগিয়ে ফেলেন বাগান স্টপার কিংশুক দেবনাথ। সেটাই শেষ নয়। দ্বিতীয়ার্ধে ২-২-ও করে ফেলেছিল মায়ানমারের ক্লাব। সেই ফার্নান্ডেজের গোলেই। কিন্তু বাগান অ্যাটাকিং লাইন আপ এ মরসুমে এতটাই শক্তিশালী যে, সবুজ-মেরুন দলের উপর চাপটা ছিল মাত্র দু’ মিনিট। তার মধ্যেই জেজে নিজের দ্বিতীয় গোল করে বাগানকে ফের ৩-২ এগিয়ে দেন। জেজেদের কোচ এ দিন কিছুটা অবাক করে দিয়ে ফোনে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তাঁর দুই স্ট্রাইকার জেজে এবং সুভাষ সিংহের। ‘‘এএফসি কাপে পাঁচটা গোল হয়ে গেল জেজের। শুনলাম তো টুর্নামেন্টের সব গ্রুপ মিলিয়ে ও-ই এখন যুগ্ম হায়েস্ট স্কোরার। আর সুভাষ আড়াই মাস বাদে খেলতে নেমে টানা নব্বই মিনিট খেলে দিল। যা ভাবতেই পারিনি প্রথমে।’’

বাগানের কর্নেল ছিলেন না গুয়াহাটিতে। বিদেশি গ্লেনের অভাবে বাগানে এ দিন স্ট্রাইকার পজিশনে খেলেন দুই স্বদেশি জেজে এবং সুভাষ। এ ছাড়া টিমে তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘হাফটাইমে ড্রেসিংরুমে ছেলেদের বলেছিলাম, সব টিমকেই তিন-চার গোল দেওয়া যায় না। দু’গোল হওয়ার পর সবাই আরও গোল করতে গিয়েই বিপদ ডেকে এনেছিল। আমি বলার পর দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ব্যাল্যান্সড ফুটবল খেলল ছেলেরা।’’

তবে এ দিন বাগানের তিনটে গোল যাঁরা করলেন, সেই সনি এবং জেজেকে পরের আই লিগের ম্যাচে পাওয়া যাবে না। সনি ১৮ মার্চ চলে যাচ্ছেন দেশে। হাইতির হয়ে প্রি-ওয়ার্ল্ড কাপ খেলতে। ফিরবেন ২ এপ্রিলের ডার্বির আগে। আর জেজে চলে যাচ্ছেন ভারতের জার্সিতে প্রাক বিশ্বকাপে খেলতে। তাতেও অবশ্য বাগান কোচকে চিন্তিত মনে হচ্ছে না। এএফসি কাপ থেকে আই লিগ— ফের সঞ্জয়ের টিমের ফোকাস বদলে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে। বললেন, ‘‘ও সব ভেবে লাভ নেই। ক’টা ম্যাচ অপরাজিত থাকলাম সেটা ভেবেও আনন্দ করার কিছু নেই। আই লিগটা পেতে হবে। ওটাই আসল লক্ষ্য।’’

বাগান কোচের বক্তব্যেই পরিষ্কার আপাতত এএফসি কাপ আর আই লিগের মধ্যে পরেরটাকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। তা হোক, সঙ্গে এএফসির গ্রুপ লিগে তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় ওঠার দিকেও অনেক এগিয়ে গেল বাগান।

মোহনবাগান: দেবজিৎ, প্রীতম, লুসিয়ানো, কিংশুক, প্রবীর, কাতসুমি, লেনি, প্রণয়, সনি, জেজে, সুভাষ (বিক্রমজিৎ)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mohun bagan AFC cup football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE