মলদ্বীপ, হংকংয়ের পর সঞ্জয় সেনের অশ্বমেধের ঘোড়ার সামনে এ বার মায়ানমার।
এবং সেই জেতার তাগিদ এতটাই যে, মঙ্গলবার দুপুরে গুয়াহাটি পৌঁছে বিকেলেই তার প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল মোহনবাগান। এএফসি কাপে নিজেদের গ্রুপে বাকি দু’দল— মাজিয়া এবং সাউথ চায়নাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন সনি নর্ডিরা। বাকি রয়েছে শুধু মায়ানমারের ইয়াঙ্গনকে হারানো। যারা এই মুহূর্তে দু’ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে এই টুর্নামেন্টের লিগ তালিকার দুইয়ে রয়েছে।
এক বনাম দুইয়ের লড়াইয়ে নিজেদের জায়গা ভাল করতে মরিয়া দু’দলই। বাগান কোচ সঞ্জয় সেন গুয়াহাটি থেকে ফোনে বলেই দিলেন, ‘‘হোম ম্যাচ থেকে যতটা সম্ভব পয়েন্ট বাড়িয়ে নিতে হবে। তাই তিন পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে ছেলেরা।’’ কিন্তু দু’দিনের ব্যবধানে যে ভাবে আই লিগ থেকে ফোকাস সরিয়ে এএফসিতে মনোনিবেশ করতে হচ্ছে, সেটা কতটা সমস্যার? বাগান কোচের দাবি, ‘‘এ রকম সূচি অনুযায়ী খেলতে হবে, আগে থেকেই জানতাম। মানসিক ভাবে ছেলেরা তৈরি।’’
অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য যুবভারতী পাওয়া যায়নি। ফলে সনি-কাতসুমিদের এএফসি-র সব ম্যাচই বাইরে গিয়ে খেলতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের জন্য গুয়াহাটির মাঠ-ই এখন তাদের ঘরের মাঠ। তবে জেজে-লুসিয়ানোরা এ সব নিয়ে ভাবতে রাজি নন। বরং তাঁরা কোচকে বলেছেন, ‘‘যে মাঠেই খেলা হোক না কেন, আমরা জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না।’’ ফুটবলারদের মতো সঞ্জয় আবেগপ্রবণ নন। বরং চূড়ান্ত বাস্তববাদী। তাঁর যুক্তি, ‘‘এএফসি কাপের অ্যাওয়ে ম্যাচ বলতে দেশের বাইরে গিয়ে খেলতে হয়। বিদেশে খেলা আর দেশের যে কোনও স্টেডিয়ামে খেলার মধ্যে অনেক তফাত রয়েছে। আর এই টুর্নামেন্টে মোহনবাগান দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে। তাই গুয়াহাটিতে সবাই আমাদেরই সমর্থন করবে। তবে এটাও ঠিক কলকাতায় খেলা হলে যে রকম উন্মাদনা থাকত, হয়তো সে রকম এখানে থাকবে না।’’
ইয়াঙ্গন টিমটি বেশ শক্তিশালী। গত বছর মায়ানমার জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১৩ এবং ’১৪-তে এএফসি-র শেষ ষোলোয় খেলেছে। টিমটিতে চার বিদেশির মধ্যে তিন জন ব্রাজিলিয়ান এবং এক জন জাপানের। সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘ওদের আক্রমণ ভাগটা খুব ভাল। আমাদের ডিফেন্ডারদের তাই সতর্ক থাকতে হবে। আলাদা কোনও স্ট্র্যাটেজি নয়। যে ভাবে খেলে আসছি, সে ভাবে খেলেই জিততে চাই।’’ আই লিগে মাঠের বাইরে থাকলেও এ এফ সি-তে অবশ্য রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারবেন সঞ্জয়।
আই লিগের কথা ভেবে কর্নেল গ্লেনকে নিয়ে যাননি বাগান-কোচ। ফলে গ্লেনের জায়গায় জেজের সঙ্গী কে হবেন তা নিয়ে নিজেই সংশয়ে। কাতসুমি নাকি চোট সারিয়ে ফেরা সুভাষ সিংহ- কাউকে বাছতে হবে তাঁকে। আর ত্রিনিদাদ টোবাগোর বিশ্বকাপার না থাকায় হাইতির সনি নর্ডি-র উপরই টিমকে জেতানোর দায়িত্ব অনেকটাই বর্তাবে। তবে সঞ্জয় চাইছেন অপরাজিত থাকতে। তাতে ড্র করলেও ক্ষতি নেই।
এই মরসুমে আই লিগে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত মোহনবাগান। এএফসি কাপের দু’টি ম্যাচে মাজিয়া এবং সাউথ চায়নার বিরুদ্ধে বড় জয় পেয়েছে তারা। স্বভাবতই মানসিক ভাবে চাঙ্গা রয়েছেন সনিরা। উল্টো দিকে ইয়াঙ্গন শেষ পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই হেরেছে। সেখানে শেষ পাঁচটি ম্যাচের চারটিতে জিতেছে সঞ্জয়ের টিম। দেখার, ইয়াঙ্গন বধ করে অপরাজিত থাকার মুকুট পরেই সনিরা মাঠ ছাড়তে পারেন কি না।
বুধবারে এএফসি কাপ
মোহনবাগান: ইয়াঙ্গন, মায়ানমার (গুয়াহাটি ৭-০০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy