ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে ডুডু-তুলুঙ্গা। ছবি: উৎপল সরকার।
খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য ডার্বি থেকে বাদ পড়তে পারেন দুই মণ্ডলদীপক আর অভিজিৎ।
স্পোর্টিং ম্যাচে ২-০ এগিয়ে থাকা অবস্থায় ২-২ ড্র করে পয়েন্ট নষ্ট করেছিল ইস্টবেঙ্গল। এ জন্য যে দু’জনের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে, সেই দু’জনকে বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে প্রথম একাদশেই রাখেননি ডাচ কোচ। দেখা গেল সাইড ব্যাক অভিজ্ঞ দীপক এবং কিপার অভিজিৎকে দ্বিতীয় টিমে খেলাচ্ছেন এলকো। ক্লোজ ডোর অনুশীলনের পাশাপাশি মিডিয়ার সঙ্গে এ দিন কথা বলেননি কোচ, ফুটবলাররা। তবে বুধবারই অবশ্য লাল-হলুদ কোচ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, “মোহনবাগান লং বল বেশি খেলে, সে জন্য শুভাশিসকে গোলে খেলাতে পারি। যেহেতু ওর উচ্চতা বেশি।”এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, “দীপক কুড়ি মিনিটের মধ্যেই খেই হারিয়ে ফেলছে। কী করা যায় দেখি!” এ দিন মূলত রক্ষণ এবং মাঝমাঠ সংগঠনের উপর জোর দিতে দেখা গেল এলকোকে। পাশাপাশি এই দুই পজিশনের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করার চেষ্টাও করছিলেন তিনি। কারণ, শেষ দু’টি ম্যাচে মাঝমাঠ ও রক্ষণের মধ্যে একটি ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছিল। যার জন্য গোলও হজম করতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। অন্তত সে রকম মনে করছেন এলকো। ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে তাই সেটা মেরামত করতেই ব্যস্ত থাকলেন মেহতাবদের কোচ।
কলকাতায় আগে কোচিং করালেও এলকোর এটাই প্রথম ডার্বি। তবে ইউনাইটেড স্পোর্টসের কোচ থাকার সুবাদে ডার্বির উত্তেজনার সঙ্গে পরিচিত তিনি। কিন্তু এই প্রথম বার বড় ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে বসবেন। তাই বোধহয় তিনি একটু বেশিই টেনশনে রয়েছেন। প্র্যাকটিসের সময় ফুটবলাররা একটু ভুল করলেই যে-ভাবে বকাবকি করছিলেন, তা থেকেই বোঝা যায় শনিবারের ম্যাচ তাঁর কাছে কত বড় চ্যালেঞ্জের। ফরোয়ার্ডে র্যান্টি আর ডুডু ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ভাবনা নেই এলকোর। মাঝমাঠে মেহতাব, ডিকা এবং রফিককে খেলানোর সম্ভাবনা বেশি। রাইট হাফে তুলুঙ্গা না, বলজিৎ সিংহ সাইনি? তা নিয়ে মনে হল দ্বিধায় রয়েছেন এলকো। তবে এ দিন তুলুঙ্গাকেই প্রথম টিমে রেখে খেলালেন। রক্ষণে আবার দুই স্টপার মিলান সুসাক এবং অর্ণব মণ্ডলের জায়গা বাঁধা। দীপকের জায়গায় সম্ভবত টিমে ফিরছেন অধিনায়ক হরমনজোৎ সিংহ খাবরা। লেফট ব্যাকে রবার্ট এবং সৌমিকের মধ্যে কেউ একজন খেলবেন। তবে এ দিন পেটের গণ্ডগোলের জন্য প্র্যাকটিস করতে পারেননি সৌমিক। স্বভাবতই রবার্টের খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
এলকোর মূল লক্ষ্য মাঝমাঠেই মোহনবাগানের আক্রমণ থামিয়ে দেওয়া। সনি নর্ডিকে বোতলবন্দি করার দায়িত্ব থাকছে খাবরার উপর। সুসাক পিছন থেকে কভার করবেন। মেহতাবের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। তাঁকে অবশ্য ‘ডাবল’ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। একদিকে ব্লকারের ভূমিকায় থাকছেন তিনি। অন্য দিকে আক্রমণে ওঠার সময় পাসার হিসাবেও থাকবেন মেহতাব। উইং দিয়ে পাঠানো হবে লালরিন্দিকা আর তুলুঙ্গাকে। এলকোর যা স্টাইল তাতে লং বলের তুলনায় নিজেদের মধ্যে পাস খেলাই বেশি পছন্দ তাঁর। আসলে বেশি পাস খেলে মোহনবাগানের স্ট্র্যাটেজি ভণ্ডুল করতে চাইছেন তিনি। পাশাপাশি ফুটবলারদের বারবার নির্দেশ দিয়েছেন, “মিস পাস যেন কোনও ভাবেই না হয়।” বল পজেশনেও মোহনবাগানকে এগোতে দিতে রাজি নন এলকো। নিজেদের কাছে বলের দখল রেখেই বাজিমাত করতে চান ডাচ কোচ।
মরসুমের শেষ কলকাতা ডার্বি নিয়ে নানা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করলেও তাঁর দলের কত সমর্থক আসবেন তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থাকছেই। সংগঠক বাগান কর্তারা জানাচ্ছেন, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের তুলনায় অনেক বেশি টিকিট কাটছেন তাঁদের দলের সমর্থকরা। মোট বাষট্টি হাজার টিকিট ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে আই এস এলের ঢঙে খাবার-সহ ডার্বি দেখার যে প্যাকেজের টিকিট ছাড়া হয়েছে তা প্রায় শেষ। টিকিটের মূল্য হাজার টাকা। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রায় বাইশশো পুলিশ থাকবে মাঠে। এর বাইরে প্রায় শ’তিনেক ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী থাকবে, টিকিট পরীক্ষার জন্য। সংগঠক বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “টিকিটের যা চাহিদা তাতে সব টিকিটই বিক্রি হয়ে যাবে।” আসল কথাটা অবশ্য বলেননি অঞ্জন। তা হল, ভারত বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ায় ডার্বি নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy