Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিশ্চিন্ত বাগানে সত্যর অনুশীলন

পাহাড়ে এ মরসুমে সঞ্জয় সেনের টিম বারবার ধাক্কা খেয়েছে। আই লিগে মোহনবাগানের অশ্বমেধের ঘোড়ার মুখ থুবড়ে পড়া তো পাহাড়েই। আইজলের কাছে সেই হারের পর আর এ বারের আই লিগে উঠে দাঁড়াতে পারেনি আগের বারের চ্যাম্পিয়নরা।

বাগানের শপথ। প্র্যাকটিসে সঞ্জয়-সনিরা। শুক্রবার শিলংয়ে। -নিজস্ব চিত্র

বাগানের শপথ। প্র্যাকটিসে সঞ্জয়-সনিরা। শুক্রবার শিলংয়ে। -নিজস্ব চিত্র

তানিয়া রায়
শিলং শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

পাহাড়ে এ মরসুমে সঞ্জয় সেনের টিম বারবার ধাক্কা খেয়েছে।

আই লিগে মোহনবাগানের অশ্বমেধের ঘোড়ার মুখ থুবড়ে পড়া তো পাহাড়েই। আইজলের কাছে সেই হারের পর আর এ বারের আই লিগে উঠে দাঁড়াতে পারেনি আগের বারের চ্যাম্পিয়নরা।

শনিবারই শিলংয়ে যে লাজংয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন সনি নর্ডিরা তাদের বিরুদ্ধেও তো আই লিগে জয় নেই সবুজ-মেরুনের।

কিন্তু ফেড কাপের ক্যানভাস যে একেবারে আলাদা। পাঁচ গোলের পাহাড় বরং লাজংয়ের ঘাড়ে চাপিয়ে এখানে পাহাড় টপকাতে এসেছে সঞ্জয়-ব্রিগেড। ০-৫ পিছিয়ে থাকার চাপ এতটাই যে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগের দিন স্বয়ং লাজং কোচ কাঁপছেন!

আপনার টিমের পেন তো বলছেন, এ বার সাত গোলে জিতবেন? আপনার মত? প্রথমে হেসে ফেলেন থাংবোই সিংটো। পেন ওরজিকেই পাশে নিয়ে শিলং কোচের মন্তব্য, ‘‘পেন মনে হয় স্বপ্ন দেখতে দেখতে ওই কথা বলেছে!’’ এর পরে সিংটোর কাঁপা গলা— ‘‘বারাসতে প্রথম লেগে জঘন্য হেরে ফাইনালে ওঠার রাস্তাটা আমরা নিজেরাই কঠিন করে ফেলেছি। ছ’-সাত গোল করা সম্ভব নয়। তবে কাল জিততে চাই।’’

বাগান ফুটবলাররার আবার ফেড কাপে আই লিগের উলটপুরাণ চাইছেন। ঘরের মাঠে বিপক্ষকে গোলের বন্যায় ডুবিয়ে দেওয়ার পর এ বারও জিততে মরিয়া কিংশুক-লুসিয়ানোরা। সকালে পাহাড়ে ঘেরা নেহরু স্টেডিয়ামে প্র্যাক্টিসে ফুটবলারদের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল বাগানের লক্ষ কী? সেই দলের প্রতিনিধি হিসেবে সনির মতোই উজ্জ্বল জেজের মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘আমাদের তো একটাই টার্গেট— একটাও ম্যাচ না হেরে ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’’

হালকা ঠান্ডায় মোড়া শিলংয়ে মোহনবাগানের অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল, সত্যিই যেন টিমটা কোনও চাপে নেই। খোলামেলা পরিবেশ। ঠিক যে রকমটা চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কেমন সেই দৃশ্যগুলো?

এক) প্রীতম কোটালদের সঙ্গে প্র্যাকটিসে ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও ওয়ান টাচ-টু টাচ খেলছিলেন। খেলতে খেলতে বাগানের সত্য কিংবা সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী এতটাই মগ্ন যে, নিজেদের বয়স ভুলে প্রীতমদের সঙ্গে ঝগড়াও শুরু করে বসলেন।

দুই) দলের ম্যানেজার সঞ্জয় ঘোষকেই গোলপোস্টের নীচে দাঁড় করিয়ে হেডে গোল করার জন্য ফরোয়ার্ডদের বল বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন কিংশুক দেবনাথরা।

তিন) কখনও গ্লেন, কখনও কাতসুমি, কখনও দেবজিৎ একে অন্যকে নিয়ে এমন রসিকতা করছিলেন যে, দেখেশুনে হাসতে হাসতে মাঠে বসেই পড়লেন সনি-ও।

টিমে কোনও চোট-আঘাত, কার্ড সমস্যা নেই। গ্লেনের প্রথম দলে থাকার সম্ভাবনা বেশি। এ দিন মূলত স্ট্রেচিংয়ের সঙ্গে রকমারি সেট পিস অনুশীলন চলল। বিপক্ষের সেট পিস রোখারও প্ল্যানও। বাগান কোচ এ দিনও বারবার মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘আমাদের ঠিক মতো ওয়াল তৈরি না করার জন্যই ডং গোল করে গিয়েছিল। সেই ভুল যেন আর কখনও না হয়। শিলংয়ের ভাল কয়েক জন ভাল ফ্রিকিক মারে।’’

সঞ্জয়ের পাহাড় জয়ের নীল নকশা তৈরির কয়েক ঘন্টা পরেই শিলংয়ের অনুশীলনে গিয়ে দেখা গেল তাদেরও ঘরের মাঠের রণসজ্জা তৈরি। কিন্তু পরিস্থিতি বিচারে সেই রণকৌশল অদ্ভুত! ০-৫ পিছিয়ে থাকা একটা দলও ফিরতি যুদ্ধে নিজেরা গোল করার চেয়ে বরং বিপক্ষের গোল আটকানো নিয়েই বেশি ভাবছে! সিংটোর মাথায় ঘুরছে সনি-জেজেদের আটকানোর জন্য বাগানের বলের সাপ্লাই লাইন কী ভাবে কাটা যায়। সিংটো তাঁর ফুটবলারদের বলে দিয়েছেন, ‘‘মোহনবাগান এখানে যেন কোনও ভাবে গোলের মুখ খুলতে না পারে। ওদের একটা গোল মানেই অ্যাওয়ে ম্যাচের নিয়মে আমাদের আরও দু’গোলে পিছিয়ে পড়া।’’

সোজা কথা, ডিফেন্স সামলে কাউন্টার অ্যাটাকের স্ট্র্যাটেজিই নিতে চলেছেন লাজং কোচ। তবে ফ্যাবিও পেনা, উইলিয়ামসদের প্র্যাক্টিসে হাবভাব দেখে মনে হবে, সতীর্থ পেন ওরজির সাত গোলের হুঙ্কার তাঁদের উদ্বুদ্ধই করছে।

তা সেটা বাস্তবে করাটা যত অবিশ্বাস্য ব্যাপারই হোক না কেন!

শনিবার ফেড কাপ— মোহনবাগান: শিলং লাজং (শিলং, বিকেল ৫-০০)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohunbagan Lajong FC Federation Cup Shilong
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE